প্য়াংগং: করোনার দেখা মিলতেই দেশজুড়ে ছড়িয়েছে আতঙ্ক। প্রথম সংক্রমণের কথা জানানোর পরদিনই, শুক্রবার উত্তর কোরিয়া প্রশাসনের তরফে ৬ জনের মৃত্যুর খবর জানানো হয়। এর মধ্যে একজন করোনা আক্রান্ত ছিলেন বলেও জানানো হয়। একদিনের মধ্যেই সেই মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ২৭-এ। শনিবার নতুন করে আরও ২১ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। জ্বরের উপসর্গ দেখা গিয়েছে লক্ষাধিক মানুষের মধ্যে। একসঙ্গে এত মানুষের জ্বরের উপসর্গ দেখা দেওয়ায় মনে করা হচ্ছে যে, চলতি মাসে নয়, তার আগেই উত্তর কোরিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছিল করোনা সংক্রমণ।
গতকালই উত্তর কোরিয়ার সেন্ট্রাল নিউজ এজেন্সির তরফে জানানো হয়েছিল, এপ্রিল মাসের শেষভাগ থেকেই দেশে অজানা জ্বরের প্রাদুর্ভাব দেখা গিয়েছিল। শুক্রবার নতুন করে ২১ জনের মৃত্যু হওয়ায় ও ১ লক্ষ ৭৪ হাজার ৪৪০ জনের মধ্যে নতুন করে জ্বরের উপসর্গ দেখা দেওয়ায়, মোট আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ লক্ষ ২৪ হাজার ৪৪০ এবং ২৭-এ। উত্তর কোরিয়ার প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, এখনও অবধি ‘অজানা জ্বর’ থেকে সুস্থ হয়ে উঠেছেন ২ লক্ষ ৪৩ হাজার ৬৩০ জন। এখনও অবধি নিভৃতবাসে (quarantine) রয়েছেন ২ লক্ষ ৮০ হাজারেরও বেশি মানুষ। যদিও এদের মধ্যে কতজন করোনা আক্রান্ত এবং সংক্রমণে কতজনের মৃত্যু হয়েছে, তা নিয়ে সরকারি কোনও নথি প্রকাশ করা হয়নি।
বৃহস্পতিবার প্রথম করোনা আক্রান্তের খোঁজ মেলার পরই প্রশাসনের তরফে সর্বোচ্চ প্রতিরোধ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। জারি করা হয়েছে লকডাউনও। ২ বছর আগে গোটা বিশ্বে করোনা সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়লেও, এতদিন উত্তর কোরিয়ায় কোনও করোনা আক্রান্তের খোঁজ মেলেনি। শনিবারও দেশের শীর্ষ নেতা কিম জং উন দলীয় পলিটব্যুরোর মিটিংয়ে করোনা পরিস্থিতিতে অত্যন্ত উদ্বেগজনক বলে আখ্যা দেন। দ্রুত সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে প্রশাসন ও সাধারণ মানুষ যাতে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করেন, তার নির্দেশও দেন তিনি।
সরকারি সূত্রে খবর, জ্বরে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তেই জরুরি তহবিল থেকে ওষুধ সরবরাহ শুরু করা হয়েছে। তবে পলিটব্যুরোর বৈঠকে রহস্যজনক মৃত্যুগুলিকে ‘ড্রাগ ওভারডোজ’ ও ‘সঠিক চিকিৎসা পদ্ধতি অনুসরণ না করার ফল’ হিসাবেই আখ্য়া দেওয়া হয়েছে। প্রশাসক কিম জমং উন জানিয়েছেন, তাঁর নিজস্ব ওষুধের ভান্ডার থেকেও ওষুধ পাঠাচ্ছেন চিকিৎসার জন্য।