ঢাকা: আর একজন রোহিঙ্গাকেও বাংলাদেশে ঢুকতে দেওয়া হবে না বলে স্পষ্ট জানালেন, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭৭তম অধিবেশন উপলক্ষ্য়ে বর্তমানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আছেন বাংলাদেশি প্রধানমন্ত্রী। সেখানে ‘ভয়েস অব আমেরিকার’ বাংলা বিভাগের প্রধানকে একটি একান্ত সাক্ষাৎকার দিয়েছেন হাসিনা। সেই সময়ই রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে আশ্রয় দেওয়া নিয়ে এই তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য করেছেন এ কথা বলেছেন তিনি। তাঁর দাবি, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে সারা বিশ্বেই নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বাড়ছে। এই অবস্থায় তাঁদের পক্ষে আর উদ্বাস্তুদের স্থান দেওয়া সম্ভব নয়।
যেমন আর একজন রোহিঙ্গাকেও বাংলাদেশে আশ্রয় দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন শেখ হাসিনা, তেমনই কোনও বাংলাদেশে আশ্রয় পাওয়া রোহিঙ্গাদের দেশে ফেরার বিষয়ে কোনও চাপও দিচ্ছে না তার সরকার। এমনটাই জানিয়েছেন হাসিনা। তিনি বলেন, “এখনও পর্যন্ত একজন রোহিঙ্গাকেও ফেরত পাঠানো সম্ভব হয়নি। প্রতিটি মানুষের নিজ দেশে যাওয়ার অধিকার আছে। তবে, এই ক্ষেত্রে রাষ্ট্রসঙ্ঘ বা অন্য কোনও দেশও কার্যকরি ব্যবস্থা নেয়নি।”
52 % of #Rohingya refugees registered in Bangladesh are children and youth ????
That’s almost 450,000 young refugees who need education for their futures ?
We must do better for these children ?? pic.twitter.com/5ehRzI01gM
— UNHCR Asia Pacific (@UNHCRAsia) September 25, 2022
এই সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশের ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট, সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা, আগামী নির্বাচন-সহ বিভিন্ন বিষয়ে মুখ খোলেন হাসিনা। সামরিক শাসক হিসেবে বাংলাদেশে এখন আর ক্ষমতায় আসার কোনও সুযোগ নেই বলে দাবি করেছেন তিনি। তাঁর মতে, গণতান্ত্রিক পথ ছাড়া বাংলাদেশে ক্ষমতায় আসার অন্য কোনও উপায় নেই। তিনি বলেন, “কেউ যদি হত্যাযজ্ঞ, অভ্যুত্থান বা ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করতে চায়, তবে তা হবে শাস্তিযোগ্য অপরাধ। প্রয়োজনে তাদের মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হবে।”
বাংলাদেশি প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, তাঁদের দেশের জন্মের কয়েক বছর পরই ,সামরিক শাসকরা ক্ষমতা দখল করেছিল। তবে, এখন আর সেই সুযোগ নেই। হাসিনা বলেন, “বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার কয়েকবছর পর স্বৈরশাসকরা ক্ষমতা দখল করেছিল। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের হত্যাকাণ্ডে যে গোষ্ঠী জড়িত ছিল, তারাই জিয়াউর রহমানকে সেনাপ্রধান বানিয়েছিল। সেনাপ্রধানের পদে থেকে জিয়া নিজেকে রাষ্ট্রপ্রধানও ঘোষণা করেন। এরপর এরশাদও সামরিক শাসক হিসেবে ক্ষমতায় আসেন। এখন আর সেই সুযোগ নেই। আমরা গণতন্ত্রের সুরক্ষায় কঠোর আইন প্রণয়ন করেছি।”
Bangladesh Convince a OIC Chairman as well good solution Rohingya refugee resolution, Bangladesh and Myanmar fourth losing Rohingya repatriation.
World people laugh and silently smile
We Rohingya heavily weeping . pic.twitter.com/FCa1hpLm9U— Md Ayub ?? (@Md_Ayub12) September 23, 2022
তিনি আরও অভিযোগ করেছেন, জামাতে ইসলামির সঙ্গে হাত মিলিয়েই ক্ষমতায় এসেছিল বিএনপি। তাদের আমলে প্রশাসন, সেনা, গোয়েন্দা সংস্থা-সহ সরকারি সব দফতরে স্বৈরশাসকদের সময়কার লোকজন প্রভাব বিস্তার করেছিল। এই অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য তাঁদের যথেষ্ট সংগ্রাম করতে হয়েছে বলে দাবি করেন বাংলাদেশি প্রধানমন্ত্রী। তাঁর আরও দাবি, ২০০৮-এর নির্বাচনের পর থেকে দেশে গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত আছে। বাংলাদেশি প্রধানমন্ত্রী বলেন, “ক্ষমতায় থাকা নির্বাচিত কাউকে হটিয়ে, যদি কেউ হত্যাযজ্ঞ, অভ্যুত্থান বা ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করতে চায়, তবে তার শাস্তি হবে। এমনকি মৃত্যুদণ্ডও হতে পারে।”
ইদানিং বাংলাদেশে ‘ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট’-এর অপপ্রয়োগের অভিযোগ উঠতে শুরু করেছে। এর ফলে সেই দেশে একধরণের ভয়ের সংস্কৃতি চালু হয়েছে বল অভিযোগ করা হচ্ছে। সরকারি কোপের ভয়ে সংবাদ মাধ্যমগুলি ব্যাপকভাবে নিজেদের উপর সেন্সরশিপ জারি করছে। এই অভিযোগ পুরোপুরি উড়িয়ে দিতে পারেননি বাংলাদেশি প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেছেন, “আমাদের শাসনামলে গণমাধ্যমের সংখ্যা বেড়েছে। এসব গণমাধ্যমে মাঝে মধ্যে ভুল তথ্য প্রচার করা হয়। তাই ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট চালু করতে হয়েছে।”