মস্কো: বিগত দুই মাস ধরে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে রাশিয়া (Russia)। বিনা প্ররোচনায় ইউক্রেনের (Ukraine) উপরে সামরিক অভিযান চালানো শুরু করেছে পুতিনের বাহিনী। লাগাতার গোলাবর্ষণের জেরে ভেঙে গুড়িয়ে গিয়েছে ইউক্রেনের একের পর এক শহর। সম্প্রতিই পারমাণবিক ক্ষমতা সম্পন্ন ক্ষেপণাস্ত্র নিয়ে মহড়া চালানোর পর ইউক্রেনেও পরমাণু হামলার আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে আন্তর্জাতিক মহলের তরফে। তবে রাশিয়া আশ্বস্ত করেছে, তারা ইউক্রেনের উপরে পরমাণু হামলা করবে না। কিন্তু রাশিয়ার বিজয় মিছিলের প্রস্তুতিতে ফের একবার পরমাণু অস্ত্রের (Nuclear Weapon) দেখা মিলতেই বাড়ল উদ্বেগ।
৯ মে রাশিয়ার কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি দিন। ১৯৪৫ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন এই দিনই হিটলারের নাজ়ি বাহিনীকে হারিয়ে জয়ী হয়েছিল তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন। এরপর থেকে প্রতি বছরই রাশিয়া এই দিনটি বিশেষভাবে পালন করে। সামরিক অস্ত্র নিয়ে শোভাযাত্রাও বের করা হয়। এবার ইউক্রেনের সামরিক অভিযান চলার মাঝেই এই বিশেষ দিনটি পড়ায়, গোটা বিশ্বের নজর রয়েছে রাশিয়ার উপরে।
বিদেশি সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, মস্কোর বিজয় দিবসের প্যারেডে পরমাণু মিসাইল সহ অত্যাধুনিক অস্ত্রশস্ত্রের দেখা মিলেছে। এরমধ্যে অন্য়তম হল থার্মোনিউক্লিয়ার আরএস-২৪ ইয়ারস ব্যালেস্টিক মিসাইল। সম্প্রতিই মস্কোর রাস্তায় কড়া পাহারার ঘেরাটোপে এই মিসাইল নিতে যেতে দেখা গিয়েছে।
ডেইলি মেল-র প্রতিবেদন অনুযায়ী, ওই মিসাইলটি ১২ হাজার কিলোমিটার দূর থেকেও নিক্ষেপ করলেও তা সঠিক নিশানায় আঘাত করতে সক্ষম। অর্থাৎ রাশিয়া থেকে কয়েক মিনিটের মধ্যেই লন্ডন বা নিউইয়র্কের উপরে হামলা চালানো যায়। বিজয় দিবসের প্যারেডে যুদ্ধবিমান ও বোমারু বিমানও আকাশে মহড়া দেবে বলে জানা গিয়েছে। ইতিমধ্যেই মস্কোর আকাশে এই বিমানগুলি দেখা গিয়েছে। তারা মহড়ার পাশে ইংরেজি ‘জেড’ (Z)-এর আকারও ধারণ করে। উল্লেখ্য, রাশিয়ার সেনা এই জেড হরফ ব্যবহার করে তাদের সামরিক অস্তিত্ব জাহির করতে। ইউক্রেনের উপরে যে হামলা চালাচ্ছে রাশিয়া, সেখানেও বিভিন্ন শহরে এই হরফ আঁকা হয়েছে।
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকদের মতে, ইউক্রেনের উপরে সামরিক অভিযান চালানো নিয়ে গোটা বিশ্বে যেখানে রাশিয়া নিন্দিত হচ্ছে, সেখানেই পরমাণু অস্ত্র নিয়ে প্যারেড গোটা বিশ্বকে বিশেষ বার্তা দিচ্ছে। আগামিকাল, ৯ মে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন তাঁর ‘শত্রু’দের উদ্দেশ্যে বিশেষ কোনও বার্তা দিতে পারেন বলে মনে করা হচ্ছে।
মারিউপোলেও রুশ সেনা এই শোভাযাত্রা চালাতে পারে বলে শোনা যাচ্ছে। ইতিমধ্যেই বুচা, মারিউপোল সহ একাধিক শহরের রাস্তা পরিষ্কার করতে শুরু করেছে রাশিয়ার সেনা।