ওয়াশিংটন: যৌন আবেদনের জেরে চাকরি খোয়ালেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক শহরের এক নার্স। নার্সিং হোমের চাকরিতে যথেষ্ট উপার্জন হয় না। তাই এই মন্দার বাজারে অতিরিক্ত অর্থ উপার্জনের জন্য জেলিন নামে ২২ বছরের ওই যুবতী ‘অনলিফ্যানস’ (OnlyFans) সোশ্যাল সাইটে নিজের খোলামেলা ছবি ও ভিডিয়ো পোস্ট করে থাকেন। তাঁর সেই যৌনরসে ভরপুর ছবি-ভিডিয়োগুলিতে একেবারে মজে গিয়েছে তাঁর সহকর্মীরা। কাজে ফাঁকি দিয়ে নার্সিংহোমের সকলে জেলিনের তৈরি ‘কনটেন্ট’ দেখতেই ব্যস্ত হয়ে পড়েছিল তাঁর কিছু সহকর্মী। সূত্রের খবর, এমনকি নার্সিংহোমে ভর্তি হওয়া রোগীদের সঙ্গেই সেই সকল কামোত্তেজক কনটেন্ট উইপভোগ করত তারা। আর এই কারণেই তাঁকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন জেলিন।
জেলিন জানিয়েছেন করোনা মহামারির পর থেকে আরও অনেকের মতো তিনিও অর্থনৈতিক চাপে পড়েছিলেন। আর তাই কিছু বেশি অর্থ উপার্জনের লক্ষ্যে অনলিফ্যানস সাইটে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। গত এক বছর ধরে এই সাইট তাঁর আয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎস হয়ে উঠেছে। তবে এর পাশাপাশি তিনি নার্সিং হোমের কাজও চালিয়ে যাচ্ছিলেন। কিন্তু, সম্প্রতি তাঁকে “অযৌক্তিকভাবে” বরখাস্ত করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন জেলিন।
টিকটকে পোস্ট করা এক ভিডিয়ো ক্লিপে জেলিন জানিয়েছেন, সম্প্রতি একদিন কর্মস্থলে আসার পর তাঁকে এক মহিলার ডেকে পাঠিয়েছিলেন। জেলিনের দাবি, তাঁকে তিনি আগে কখনও নার্সিং হোমে দেখেননি। ওই মহিলা জেলিনকে বলেছিলেন, তাঁর বেশ কিছু সহকর্মী কাজের সময় বিভোর হয়ে থাকছেন তাঁর অনলফ্যানস অ্যাকাউন্টের কনটেন্টে। কখনও কখনও নার্সিং হোমের রোগীদের সঙ্গেও তারা সেইসব দেখছেন। জেলিন বলেছন, “তিনি বলেছিলেন যে আমি যখনই কাজ করি তখন এমনটা ঘটবে, এটা হতে পারে না। তাই আমাকে চাকরি থেকে ছাঁটাই করা হচ্ছে।”
জেলিনের অবশ্য দাবি, তাঁকে ছাঁটাইয়ের মূল কারণ হল, তাঁর চেয়ে নার্সিংহোমের বাকিদের চাকরির আরও বেশি প্রয়োজন। কারণ, তারা জেলিনের ওনলিফ্যানস পেজের জন্য অর্থ প্রদান করেছে, যাতে তারা কাজের সময় এক নার্সের ছলাকলা দেখতে পায়। তবে, ওনলিফ্যানস থেকে যখন এত উপার্জন হচ্ছে, নার্সের চাকরির কী দরকার জেলিনের? তিনি বলেছেন ওনলিফ্যানস সাইটে তিনি আশাতীত সাফল্য পেয়েছেন ঠিকই, কিন্তু কামোত্তেজক ভিডিয়ো ক্লিপগুলি থেকে তিনি যে অর্থ উপার্জন করেন তা অত্যন্ত অনিশ্চিত। নিউ ইয়র্ক পোস্টকে জেলিন বলেছেন, “এক মাসে হয়তো ৬০০ মার্কিন ডলার উপার্জন হল, আবার পরের মাসেই আয় হল ৫০,০০০ ডলার। কখন কী হবে তা আগে থেকে জানা যায় না। এটা সত্যিই একটা অনিশ্চিত উপার্জন।”
আরও এক ভিডিয়োতে জেলিন জানিয়েছেন, তাঁকে অন্যায়ভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে বলে ইতিমধ্যেই তিনি একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন। যে মহিলা তাঁর সঙ্গে কথা বলে তাঁকে বরখাস্ত করেছিলেন, তাঁর কাছে জেলিন একটি লিখিত ব্যাখ্যা চেয়েছেন। সেই লিখিত নথি পাওয়ার পর, তাঁর আইনজীবীর পরামর্শ মেনে তিনি পরবর্তী পদক্ষেপ করবেন।