ইসলামাবাদ: বৃষ্টি সামান্য কমলেও, ক্ষতির পরিমাণ ক্রমশ বেড়েই চলেছে। লাগাতার বৃষ্টির জেরে বন্যায় বিধ্বস্ত পাকিস্তান। ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পাকিস্তানের বিস্তীর্ণ এলাকা। কার্যত ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে দেশের বড় একটি অংশ। দেশের প্রায় এক তৃতীয়াংশই এখনও জলের নীচে। তবে যে অংশগুলিতে জল নামতে শুরু হয়েছে, সেখানে শুরু হয়েছে রাস্তা সারাইয়ের কাজ। প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, বন্যায় সবথেকে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সোয়াট উপত্যকা। সেখানের অধিকাংশ বাড়িই ভেঙে পড়েছে। পর্যটনকেন্দ্রগুলিও প্রায় নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছে।
গত জুন মাস থেকেই প্রবল বৃষ্টি শুরু হয়েছিল, তার জেরেই ভয়াবহ বন্যা দেখা দিয়েছে পাকিস্তানে। বন্যায় মৃত্যু হয়েছে ১১০০-রও বেশি মানুষের। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন কমপক্ষে সাড়ে ৩ কোটিরও বেশি বাসিন্দা। পার্বত্য অঞ্চলগুলি সহ দেশের অধিকাংশ অংশই বর্তমানে জলের নীচে। গত সপ্তাহেই পাকিস্তান প্রশাসনের তরফে বন্যার কারণে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়। তবে বিগত কয়েকদিনে বৃষ্টির প্রকোপ কিছুটা কমায় এবং বেশ কিছু এলাকায় জমা জল নামায় সামান্য স্বস্তি পেয়েছে এলাকাবাসী। ৬৬টি প্রদেশ সবথেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানানো হয়েছে।
এদিকে, বৃষ্টি কমলেও, জলবাহিত রোগ নিয়ে চিন্তায় পড়েছেন চিকিত্সকরা। জমা জলের কারণে বেশ কয়েকটি এলাকায় ইতিমধ্যেই ডায়েরিয়া, নানারকমে চর্মরোগের প্রকোপ দেখা দিয়েছে বলে সূত্রের খবর। বিষয়টির ওপর কড়া নজর রাখছেন বিশেষজ্ঞরা, এমনটাই জানা গিয়েছে।
বুধবার রাষ্ট্রসঙ্ঘের শিশুদের তহবিল ইউনিসেফের তরফে বিবৃতি প্রকাশ করে বলা হয়, “৩০ লক্ষেরও বেশি শিশুর এই মুহূর্তে মানবিক সহায়তার প্রয়োজন রয়েছে। বন্যার কারণে জলবাহিত রোগের সম্ভাবনা বাড়ছে। জলে ডুবে যাওয়া ও অপুষ্টির কারণে রোগের সম্ভাবনাও বৃদ্ধি পেয়েছে। শ্বাসকষ্টের মতো সমস্যাও দেখা দিয়েছে।”
ইউনিসেফের তরফে জানানো হয়েছে, দেশের ৩০ শতাংশ জল সরবরাহ ব্যবস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দেশের মোট জনসংখ্যার একটি বড় অংশই বিপদের মুখে পড়েছে। পাকিস্তানের ৪০ শতাংশ শিশু এমনিতেই চরম অপুষ্টির শিকার। স্টান্টিংয়ের মতো রোগ রয়েছে অধিকাংশের। এই পরিস্থিতিতে বন্যা আরও বিপদ বাড়াবে।