ইসলামাবাদ: জমে উঠেছে প্রাক্তন বনাম বর্তমানের লড়াই। পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান নতুন নির্বাচনের দাবি তুলেছেন, দেশের নানা সমস্যার জন্য দোষারোপ করতে শুরু করেছেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফকে। সেখানেই দেশের নিত্য প্রয়োজন সামগ্রীর দাম হু হু করে বাড়ছে। চলতি সপ্তাহেই নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রীর দাম বৃদ্ধি ও বাজারে পণ্য অমিল থাকায় ইন্টারনেটে সরব হয়েছিলেন পাকিস্তানের প্রাক্তন ক্রিকেটার মহম্মদ হাফিজ। জনগণের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ হতেই এ বার পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ পূর্ববর্তী সরকারকেই দোষারোপ করলেন মূল্যবৃদ্ধির জন্য। শুক্রবার তিনি বলেন, ইমরান খানের সরকারের জন্যই দেশের এই করুণ অবস্থা। জ্বালানির যে মূল্যবৃদ্ধি করা হয়েছে, তা প্রয়োজনের খাতিরেই করা হয়েছে। দেশ যাতে দেউলিয়া না হয়ে যায়, সেই কারণেই এই সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে।
বৃহস্পতিবারই পাকিস্তানে এক ধাক্কায় অনেকটা পেট্রোপণ্যের দাম বাড়ানো হয়েছে। লিটার প্রতি পেট্রোল-ডিজেলের দাম ৩০ টাকা বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে পাকিস্তানে পেট্রোলের দাম বেড়ে দাঁড়িয়েছে লিটার প্রতি ১৭৯ টাকা ৮৫ পয়সায়। ডিজেলের দাম বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৭৪ টাকা ১৫ পয়সায়। কেরোসিনের দামও প্রতি লিটারে ১৫৫ টাকা ৯৫ পয়সায় বেড়ে দাঁড়িয়েছে। লাইট ডিজেল বিক্রি হচ্ছে ১৪৮ টাকা ৪১ পয়সায়।
গতমাসেই ইমরান খানকে আস্থা ভোটে হারিয়ে পাকিস্তানের ক্ষমতায় বসেছেন শাহবাজ শরিফ। প্রধানমন্ত্রী পদে দায়িত্ব গ্রহণের পর তিনি শুক্রবারই প্রথম জাতির উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখেন। সেখানে তিনি দেশের অভ্যন্তরীণ নানা সমস্যা নিয়েই তিনি কথা বলেন। আন্তর্জাতিক মনিটারি ফান্ড থেকে আর্থিক অনুদান পাওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে, এ কথাও জানান শাহবাজ শরিফ।
শাহবাজ শরিফ বলেন, “পাকিস্তান যাতে দেউলিয়া না হয়ে যায়, তার জন্য জ্বালানির দাম বাড়ানো হয়েছে। পেট্রোপণ্যের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত অত্যন্ত কঠিন ছিল। কঠিন অর্থনৈতিক পরিস্থিতির মধ্যে পড়ে আমাদের এই সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে। বিশ্ব বাজারে যেহেতু পেট্রোপণ্যের দাম ক্রমাগত বাড়ছে, সেই কারণেই আমাদেরও দাম বাড়াতে হয়েছে।”
ইমরান খানের সরকারকে কটাক্ষ করে তিনি বলেন, “আগের সরকার ভর্তুকি ঘোষণা করেছিলেন, যা ট্রেজারির পক্ষে সামাল দেওয়া সম্ভব নয়। আপনি আইএমএফের সঙ্গে চুক্তি করেছিলেন, আমি নই। ওরা যে কঠিন শর্ত দিয়েছিল, তা আপনি মেনে নিয়েছিলেন, আমরা নয়। আপনিই পাকিস্তানের মানুষদের মুদ্রাস্ফীতির মুখে ঠেলে দিয়েছেন। দেশের মঙ্গলকামনার জন্যই আমরা পেট্রোল-ডিজেলের দাম বাড়িয়েছি। পেট্রোপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি প্রভাব যাতে বিশেষ না পড়ে, তার জন্য মাসিক ২৮০ কোটি টাকার আর্থিক অনুদানের ঘোষণা করা হয়েছে।”