ইসলামাবাদ: ভয়ঙ্কর অবস্থা পাকিস্তানের। অপরিসীম ঋণের বোঝা, চরম দারিদ্র্য ও অনাহারে ডুবে গিয়েছে শেহবাজ শরিফের দেশ। কিন্তু, তারপরও ধূর্ত চরিত্রের কোনও বদল ঘটেনি। চরম খাদ্য সঙ্কটের মধ্যেরাশিয়ার সামনে ভিক্ষার ঝুলি নিয়ে দাঁড়িয়েছে তারা। রাশিয়া – ইউক্রেন যুদ্ধের মধ্যেও ভ্লাদিমির পুতিন, ইসলামাবাদকে নিরাশ করেননি। কিন্তু, সেই পুতিনকেই পিছন থেকে ছুরি মারছে পাকিস্তান।
গোটা বিশ্ব জানে বর্তমানে আটা-ময়দার জন্য কী পরিমাণ হাহাকার চলছে পাকিস্তানে। সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট হওয়া একের পর এক ভিডিয়োয় ধরা পড়ছে একটু রুটি সংগ্রহের জন্য আম পাকিস্তানিদের সংগ্রামের ছবি। খাদ্যের অভাবে মরতে বসেছেন তাঁরা। এই অবস্থায় গমের জন্য রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের কাছে হাত পেতেছে পাকিস্তান। পাকিস্তানের এই চরম দুর্দশায়, ইসলামাবাদের প্রতি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন পুতিনও। পাকিস্তানকে ৭৫ লক্ষ টন গম দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। দিন তিনেক আগেই রাশিয়া থেকে ৩৫ হাজার টন গমের একটি বড় চালান পেয়েছে পাকিস্তান। শিগগিরই রাশিয়া থেকে আরও ৪.৫ লক্ষ টন গম পাবে ইসলামাবাদ। এতে সম্ভবত আগামী কয়েক মাস পাকিস্তানে অন্তত আটা-ময়দার অভাব মিটবে।
কিন্তু, যে রাশিয়া খাদ্য সঙ্কটে তাদের পাশে দাঁড়িয়েছে, সেই রাশিয়ার সঙ্গেই চরম বিশ্বাসঘাতকতা করতে চলেছে ইসলামাবাদ। ইউক্রেনে অস্ত্র পাঠাতে চলেছে পাকিস্তান। পাক সংবাদমাধ্যমগুলির প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি মাসের শেষ সপ্তাহেই পাকিস্তান করাচি বন্দর থেকে পোল্যান্ড বন্দরে ১৫৯টি কন্টেইনার ভর্তি গোলাবারুদ পাঠানো হবে। এই গোলাবারুদ যাবে ইউক্রেনের হাতে। অর্থাৎ, ক্ষুধা নিবারণের জন্য পাকিস্তান একদিকে রাশিয়ার আটা খাচ্ছে, অন্যদিকে রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে ইউক্রেনকে সাহায্য করার জন্য গোলাবারুদও পাঠাচ্ছে।
প্রশ্ন হল এই দুই নৌকায় পা দিয়ে চলাটা পাকিস্তানের জন্য কতটা ক্ষতিকর হবে? এই প্রশ্নটা ওঠারএকটা প্রেক্ষিতও আছে। ২০২২-এর ২৩ ফেব্রুয়ারি রুশ রাজধানী মস্কোয় গিয়ে পুতিনের সঙ্গে দেখা করেছিলেন পাকিস্তানের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। এর প্রায় দেড় মাস পরই তাঁকে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিতে হয়েছিল। পরে ইমরান দাবি করেছেন, রাশিয়ার সঙ্গে হাত মেলানোর কারণে আমেরিকাই কলকাঠি নেড়ে তাঁকে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরিয়ে দিয়েছে। এই দাবি সত্যি হলে, বর্তমান পাক প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফকেও সতর্ক থাকতে হবে। রাশিয়ার থেকে গম নেওয়া শরিফ সরকারের পতনের কারণ হয়ে উঠতে পারে।