ফুকেট: একের পর এক দুর্দান্ত সৈকত দ্বারা বেষ্টিত থাইল্যান্ডের ফুকেট দ্বীপ পর্যটকদের জন্য অত্যন্ত আকর্ষণীয়। আর এই আকর্ষণের অন্যতম কারণ গাঁজা। এই দ্বীপে ১,০০০-টিরও বেশি লাইসেন্সওয়ালা গাঁজার দোকান রয়েছে। কিন্তু, সম্প্রতি গাঁজা সেবন নিয়ে দ্বিধাবিভক্ত থাইল্যান্ড। আগামী ৭ মে সেই দেশের নির্বাচন। আর এবারের নির্বাচনে অন্যতম প্রধান নির্বাচনী ইস্যু হয়ে উঠেছে গাঁজা। গত থাই সংসদে গাঁজার ব্যবর নিয়ে একটি খসড়া বিল পেশ করা হয়েছে। তবে, সংসদ এই বিলে অনুমোদন দেয়নি। ফলে, এখনও পর্যন্ত থাইল্যান্ডে গাঁজার ব্যবহার নিয়ে কোনও বিধিবদ্ধ আইন নেই।
ফুকেটের গাঁজারুরা সম্প্রতি ‘ফুকেট ক্যানাবিস অ্যাসোসিয়েশন’ নামে একটি সংগঠন তৈরি করেছে। উদ্দেশ্য তাদের দাবিদাওয়া সরকারের কানে পৌঁছে দেওয়া। আর এই সংগঠন সম্প্রতি দেশে গাঁজা সেবনের প্রসার ঘটাতে, শনিবার ‘ফুকেট ক্যানাবিস কাপ’ নামে এক প্রতিযোগিতার আয়োজন করে। কত দ্রুত কেউ জয়েন্ট বানাতে পারে, তা যাচাই করাই ছিল এই প্রতিযোগিতার উদ্দেশ্য। প্রতিযোগিতায় জয়ী হয়েছেন অ্যাটিভাট জানমুয়াংথাই নামে এক গাঁজারু। ৪৩ সেকেন্ডের মধ্যে একটি ত্রুটিহীন, এক-গ্রাম ওজনের জয়েন্ট রোল করেছেন তিনি। এটাই ফুকেটে সবথেকে দ্রুত জয়েন্ট রোল করার রেকর্ড। এই রেকর্ড গড়ে অ্যাটিভাট বিজয়ীর ট্রফি ছাড়াও ৫,০০০ ভাট অর্থাৎ, ভারতীয় মুদ্রায় ১২ হাজার টাকার আর্থিক পুরস্কার পেয়েছেন। এই প্রতিযোগিতা ছিল থাইল্যান্ডের গাঁজা শিল্পের সঙ্গে যুক্ত পেশাদারদের প্রথম সমাবেশ।
Ativat Janmuangthai rolled a perfect 1-gram joint in 43 seconds, beating other cannabis enthusiasts in Phuket, Thailand https://t.co/KgYYEPKnEx pic.twitter.com/61YA0FZKEa
— Reuters (@Reuters) March 26, 2023
সংগঠনের সভাপতি, পুনওয়ারিত ওয়াংপাত্রাভানিচের আশা, ভোটের পরই গাঁজা ব্যবহার নিয়ন্ত্রণে দ্রুত একটি আইন পাস হবে এবং কার্যকর করা হবে। সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে তিনি বলেছেন, “ভাবুন তো যদি মানুষ গাঁজা সেবনের জন্য়ই থাইল্যান্ডে উড়ে আসেন। তাতে আমাদের পুরো থাইল্যান্ডের পর্যটন ক্ষেত্রে জিডিপি অনেকটা বাড়বে। সরকারের এতে অত্যন্ত খুশি হওয়া উচিত।” তবে, থাইল্যান্ডের সকলেই এই ভাবনার শরিক নন। গাঁজা-বিরোধীদের দাবি, মাদক হিসেবে গাঁজার ব্যবহার সমাজ এবং তরুণদের জন্য মোটেই ভাল নয়। থাইল্যান্ডে গাঁজা এখনও পর্যন্ত ওষুধ তৈরিতে এবং বিনোদনমূলক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হয়। তবে, এর নেতিবাচক পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া রয়েছে বলে দাবি গাঁজা বিরোধীদের। তাঁদের দাবি, একবার এই মাদক ব্যবহার শুরু করলে আসক্তি জন্মায়।
ভারতের মতো বিশ্বের বহু দেশেই গাঁজা চাষ করা অবৈধ। যদিও বেশ কিছু দেশে ওষুধ তৈরিতে এবং বিনোদনমূলক ব্যবহারের জন্য গাঁজাকে বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে। ২০২২ সালে প্রথম এশীয় দেশ হিসেবে গাঁজাকে বৈধতা দিয়েছিল থাইল্যান্ড। ওই বছরের জুন মাসে থাই সরকার গাঁজাকে নিষিদ্ধ মাদকের তালিকা থেকে সরিয়ে দিয়েছিল। চিকিৎসা এবং রন্ধনসম্পর্কিত উদ্দেশ্যে গাঁজা ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। বর্তমান বিধানের অধীনে, নির্দিষ্ট কয়েকটি রোগে আক্রান্তদের, চিকিৎসার জন্য বৈধভাবে গাঁজা ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। সেই দেশে মাদক হিসেবে গাঁজার ব্যাপক ব্যবহার প্রচলিত থাকা সত্ত্বেও, গাঁজার ব্যবহারের জন্য জরিমানা হতে পারে। এই বিষয়েই স্পষ্টতা চাইছে ‘ফুকেট ক্যানাবিস অ্যাসোসিয়েশন’।