লন্ডন/নয়া দিল্লি:
বৃহস্পতিবার (১৩ এপ্রিল) ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনকের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বললেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সংবাদ সংস্থা এএনআই-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, দুই রাষ্ট্রনেতার কথোপকথনের সময়, ব্রিটেনে অবস্থিত ভারতীয় কূটনৈতিক প্রতিষ্ঠানগুলির নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। ‘ভারত-বিরোধী’ শক্তিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানান নরেন্দ্র মোদী। দুই রাষ্ট্রনেতার মধ্যে দুই দেশের বিভিন্ন দ্বিপাক্ষিক নেতারা বিষয়ের অগ্রগতি, বিশেষ করে বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে অগ্রগতি পর্যালোচনা করেন। অর্থনৈতিক অপরাধীদের ব্রিটেন থেকে ভারতে প্রত্যাবর্তনের অগ্রগতি সম্পর্কেও জানতে চান প্রধানমন্ত্রী মোদী। বাংলা-সহ ভারতের বিভিন্ন প্রদেশের নতুন বছরের প্রাক্কালে ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রীকে নতুন বছরের শুভেচ্ছাও জানান তিনি।
মাসখানেক আগে, লন্ডনের ভারতীয় দূতাবাসে হানা দিয়েছিল খালিস্তানপন্থী বিচ্ছিন্নতাবাদীরা। দূতাবাসের ভবনের প্রথম তলের বারান্দা থেকে খালিস্তানি ব্যানার ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছিল। ভারতের জাতীয় পতাকাকেও অপমান করা হয়েছিল। খালিস্তানপন্থী স্বঘোষিত ধর্মীয় নেতা তথা ‘ওয়ারিস পাঞ্জাব দি’ সংগঠনের প্রধান অমৃতপাল সিং এবং তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে পঞ্জাব পুলিশের পদক্ষেপের প্রতিবাদ জানিয়েছিল তারা। গত মাসে, এই সকল ‘বিচ্ছিন্নতাবাদী এবং চরমপন্থী’দের পদক্ষেপের প্রতিবাদে, নয়া দিল্লির শীর্ষস্থানীয় ব্রিটিশ কূটনীতিককে তলব করেছিল ভারত সরকার। এবার সরাসরি ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর কাছে উদ্বেগ প্রকাশ করলেন নরেন্দ্র মোদী। জবাবে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক, ভারতীয় হাইকমিশনে হামলা ব্রিটিশ সরকার একেবারেই মেনে নেয়নি জানিয়ে, ভারতীয় দূতাবাস এবং দূতাবাসের কর্মীদের নিরাপত্তার আশ্বাস দেন।
এছাড়া, ভারত-ব্রিটেন রোডম্যাপ ২০৩০-এর অংশ হিসেবে বেশ কয়েকটি দ্বিপাক্ষিক বিষয়ের অগ্রগতি পর্যালোচনা করেছেন। সম্প্রতি দুই দেশের মধ্যে বেশ কয়েকটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক হয়েছে। বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতা ক্রমে বাড়ছে। প্রধানমন্ত্রীর দফতরের সূত্রে খবর, এই বিষয়ে দুই রাষ্ট্রনেতাই সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। দুই দেশের মধ্যে মুক্ত বাণিজ্যের বিষয়ে দ্রুত একটি চুক্তি স্বাক্ষর করা প্রয়োজন বলে দুই নেতই সহমত হয়েছেন। এই চুক্তির ফলে দুই দেশই উপকৃত হবে বলে মনে করা হচ্ছে। তাঁর কাছে অর্থনৈতিক অপরাধীদের দ্রুত ভারতে ফেরানোর বিষয়টিও তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। উল্লেখ্য, বর্তমানে ব্রিটেনের কারাগারে আছে পলাতক ভারতীয় অর্থনৈতিক অপরাধী নীরব মোদী। ভারতে প্রত্যর্পণ আটকানোর জন্য তার হাতে আর কোনও উপায় বাকি নেই।
বর্তমানে জি২০ গোষ্ঠীতে সভাপতিত্ব করছে ভারত। চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে নয়া দিল্লিতে এই গোষ্ঠীর শীর্ষ সম্মেলন হওয়ার কথা। সেই সম্মেলনে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। উল্টোদিকে, প্রধানমন্ত্রী সুনাক ভারতের সভাপতিত্বে জি২০ গোষ্ঠীর অগ্রগতির প্রশংসা করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, জি২০ নিয়ে ভারতের উদ্যোগ এবং সাফল্যের প্রতি ব্রিটেনের পূর্ণ সমর্থন রয়েছে।