কলম্বো: যাবতীয় জল্পনাকে সত্যি করে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী হলেন রনিল বিক্রমসিঙ্ঘে। শ্রীলঙ্কার পরবর্তী প্রেসিডেন্ট হচ্ছেন তিনিই। আজ সকালেই শ্রীলঙ্কার সংসদে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ভোটগ্রহণ হয়। দুই প্রতিদ্বন্দ্বী ডালাস আল্লাহপেরুমা এবং অনুরা দিশানায়ককে হারিয়ে শ্রীলঙ্কার পরবর্তী প্রেসিডেন্ট হিসাবে রনিল বিক্রমসিঙ্ঘেকেই নির্বাচিত করা হল। জানা গিয়েছে, তিনি মোট ১৩৪ টি ভোট পেয়েছেন। নির্বাচনের ফলঘোষণার পরই তিনি ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, “কঠিন পরিস্থিতি শ্রীলঙ্কার। সামনে অনেক বড় চ্যালেঞ্জ রয়েছে। মিলিতভাবে এই সমস্ত প্রতিবন্ধকতা পার করতে হবে।”
শ্রীলঙ্কার জনগণ তাঁকে রাষ্ট্রপতি বা প্রধানমন্ত্রী হিসাবে না চাইলেও, ভোটের হিসাবে আগে থেকেই প্রতিদ্বন্দ্বীদের তুলনায় অনেকটা এগিয়ে ছিলেন রনিল বিক্রমসিঙ্ঘে। ৬ বার শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার দরুণ একদিকে যেমন রনিল বিক্রমসিঙ্ঘের দেশশাসনের অভিজ্ঞতা রয়েছে, তেমনই আবার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষের দলের সমর্থন থাকায় প্রেসিডেন্ট হওয়ার দৌড়ে অনেকটাই এগিয়ে ছিলেন তিনি।
চরম আর্থিক সঙ্কটে ডুবে থাকা শ্রীলঙ্কা ছেড়ে গত সপ্তাহে পালিয়ে গিয়েছিলেন তৎকালীন প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষে। পরে তিনি সিঙ্গাপুর থেকে ই-মেইল মারফত ইস্তফাপত্র পাঠান এবং দেশের প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমসিঙ্ঘের হাতে সাময়িকভাবে প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব তুলে দেন। বিগত এক সপ্তাহ ধরে কার্যনির্বাহী প্রেসিডেন্ট হিসাবে দায়িত্ব পালন করলেও এবার পাকাপাকিভাবেই শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলেন।
সাধারণ নির্বাচনের মতো শ্রীলঙ্কায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচনও জনমত গ্রহণের মাধ্যমেই হত। কিন্তু গোতাবায়া রাজাপক্ষের ইস্তফার এক সপ্তাহের মধ্যেই নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের চ্য়ালেঞ্জ থাকায়, রাতারাতি নিয়ম বদলে সাংসদদের ভোটের ভিত্তিতেই প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। মোট ২২৩ জন সদস্যের মধ্যে ২ জন সাংসদ ভোট দেননি এদিন। চারটি ভোট বাতিল করে দেওয়া হয়। সবমিলিয়ে ২১৯ টি ভোটের মধ্যে ১৩৪টি ভোট রনিল বিক্রমসিঙ্ঘের সপক্ষেই পড়ায়, পরবর্তী প্রেসিডেন্ট হিসাবে তাঁর নাম ঘোষণা করা হয়।
নির্বাচনের ফল ঘোষণার পরই শ্রীলঙ্কার নতুন প্রেসিডেন্ট বলেন, “খুব কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে আমাদের দেশ। সামনে অনেকগুলি বড় চ্যালেঞ্জ রয়েছে”। তিনি জানান, পার্লামেন্টের চেম্বারের বাইরে তাঁকে শপথ নেওয়ার অনুমতি দিয়েছেন স্পিকার। আগামিকাল তিনি সমস্ত রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনায় বসবেন।