কিয়েভ: রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের আটমাস পূর্ণ হতে আর মাত্র কয়েকদিন বাকি। এতদিন পেরিয়ে যেতেও যুদ্ধের ঝাঁঝ এতটুকুও কমেনি। বরং তা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। সম্প্রতি রাশিয়া ও ক্রিমিয়ার মধ্যে সংযোগকারী কের্চ সেতুতে বিস্ফোরণের পর থেকে ইউক্রেনের প্রতি আরও আগ্রাসী হয়ে উঠেছে মস্কো। ইউক্রেনে একের পর এক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালাচ্ছে পুতিনের দেশ। এই আবহে ইউক্রেনের দ্রুত ন্যাটোয় অন্তর্ভুক্তির প্রশ্ন উঠলে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের হুঁশিয়ারি দেওয়া হয় রাশিয়ার তরফে। এই পরিস্থিতিতে রুশ ‘অস্ত্রে’রাশিয়াই বিদ্ধ। ‘অস্ত্র’ বলতে এখানে সামরিক বিমান।
রাশিয়ার কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়েছে, রাশিয়া-ইউক্রেন সীমান্তের কাছে দক্ষিণ-পশ্চিম রাশিয়ার ইয়েস্ক শহরের একটি বসতি এলাকায় ভেঙে পড়ে রুশ সামরিক বিমান। এর ফলে সেখানে একটি নয় তলা বিল্ডিংয়ে আগুন ধরে যায়। এই ঘটনায় মারা গিয়েছেন কমপক্ষে ৬ জন। আহত হয়েছে কমপক্ষে ১৯ জন। বহুতলের বেশ কয়েকটি ফ্লোরে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। মোট ১৭ টি অ্য়াপার্টমেন্ট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। এই ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার। গতকাল গভীর রাতে জরুরি পরিস্থিতি মন্ত্রকের মুখপাত্র এই ঘটনা সম্পর্কে আপডেট দিতে গিয়ে জানিয়েছেন, ‘ছয় জন মারা গিয়েছেন। জখম হয়েছেন ১৯ জন। এর মধ্যে দু’জন শিশুও রয়েছে।’ সামরিক বিমানের ইঞ্জিনে সমস্যা দেখা দেওয়ায় এই ঘটনা ঘটেছে বলে রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর তরফে জানানো হয়েছে। রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, এসইউ-৩৪ বম্বার (Su-34)-র একটি ইঞ্জিনের আগুন ধরে যাওয়ার পরই নেমে আসে ওই বিমান। ক্রু মেম্বারদের নিরাপদে বের করে আনা সম্ভব হলেও বোমারু বিমানটি ভেঙে পড়ে একটি বসতি এলাকায়।
স্থানীয় গভর্নর ভেনিয়ামিন কোনড্রাটিয়েভ সোমবার রাতেই টেলিগ্রামে জানিয়েছেন, ৯ তলা ওই বিল্ডিংয়ের আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। এদিকে এই বিমান দুর্ঘটনা নিয়ে অপরাধমূলক তদন্ত শুরু হয়েছে। রাশিয়ার স্টেট ইনভেস্টিগেটিভ কমিটি তদন্তকারীদের ঘটনাস্থলে পাঠিয়েছে বলে জানা গিয়েছে। এদিকে ক্রেমলিনের তরফে জানানো হয়েছে, প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে এই ঘটনার বিষয়ে জানানো হয়েছে। এবং তিনি ক্ষতিগ্রস্তদের সবরকম সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। তিনি স্বাস্থ্য ও জরুরি পরিস্থিতি মন্ত্রীদের ঘটনাস্থলে পৌঁছনোর নির্দেশ দিয়েছেন বলেও ক্রেমলিনের তরফে জানানো হয়েছে।