পিয়ংইয়ং: ২০০০ সালে উত্তর কোরিয়া এসেছিলেন তিনি। সেইসময় ছিলেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট। তারপর কেটে গিয়েছে ২৪ বছর। এই ২৪ বছরে প্রশান্ত মহাসাগর দিয়ে অনেক জল বয়ে গিয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সম্পর্কের রসায়ন বদলেছে। এই পরিস্থিতিতে উত্তর কোরিয়ায় পা রাখলেন ভ্লাদিমির পুতিন। ২৪ বছর পর প্রেসিডেন্ট হিসেবেই পা রাখলেন কিম জং উনের দেশে। আর উত্তর কোরিয়ায় পুতিনকে স্বাগত জানাতে বিমানবন্দরে উপস্থিত থাকলেন স্বয়ং কিম। ২৪ বছর পর পুতিনের উত্তর কোরিয়া সফর নিয়ে নানা জল্পনা শুরু হয়েছে। হঠাৎ করে কেন কিমের দেশে এলেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট? নেপথ্যে কোন কারণ? তাঁর এই সফরের উপর নজর রাখছে ওয়াশিংটনও।
বুধবার সকালে সুনন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পা রাখেন পুতিন। বিমানবন্দরে তাঁকে স্বাগত জানাতে উপস্থিত ছিলেন উত্তর কোরিয়ার শাসক কিম জং উন। উত্তর কোরিয়ায় স্বাগত জানিয়ে পুতিনকে আলিঙ্গন করেন কিম। রাশিয়ার স্টেট নিউজ এজেন্সি দুই রাষ্ট্রনেতার ভিডিয়ো প্রকাশ করেছে। স্থানীয় সময় হিসেবে দুপুরে দুই রাষ্ট্রনেতা বৈঠক করেন। তবে সেখানে কী নিয়ে আলোচনা হয়েছে, তা জানা যায়নি।
গত ২ বছরের বেশি সময় ধরে ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধ চলছে রাশিয়ার। এই অবস্থায় পুতিনের উত্তর কোরিয়া সফরে দুই দেশের মধ্যে অস্ত্র নিয়ে চুক্তি হতে পারে বলে আশঙ্কা আমেরিকা ও তার বন্ধু দেশগুলির। যদিও রাশিয়া জানিয়েছে, দুই দেশের কৌশলগত অংশীদারিত্ব নিয়ে নতুন চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে। ১৯৬১ সালের পুরনো চুক্তি বদলে ফেলা হবে। সেই চুক্তিতে স্বাক্ষর করার পর পুতিন এদিন বলেন, দুই দেশের মধ্যে কেউ আক্রান্ত হলে পরস্পরের পাশে দাঁড়াবে রাশিয়া ও উত্তর কোরিয়া।
পুতিনের এই সফর নিয়ে মঙ্গলবার আমেরিকার বিদেশ সচিব অ্যান্টনি ব্লিনকেন বলেন, ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধ চালিয়ে যেতে যা প্রয়োজন, সেগুলি যেসব দেশ দিতে পারবে, তাদের সঙ্গে সম্পর্ক দৃঢ় করার চেষ্টা করছে রাশিয়া। পুতিনের দেশকে উত্তর কোরিয়া বিভিন্ন যুদ্ধাস্ত্র দিচ্ছে বলেও তিনি মন্তব্য করেন। ব্লিনকেনের মন্তব্যকে সমর্থন করে NATO-র মহাসচিব জেন্স স্টলটেনবার্গ বলেন, এবার হয়ত উত্তর কোরিয়ার বিভিন্ন মিসাইল পরীক্ষা ও পারমাণবিক পরীক্ষাকে সমর্থন জানাবে রাশিয়া।
গত বছরের সেপ্টেম্বরে রাশিয়া গিয়েছিলেন কিম। এবার পুতিন এলেন উত্তর কোরিয়ায়। এর আগে ২০০০ সালে পিয়ংইয়ং এসেছিলেন পুতিন। সেইসময় উত্তর কোরিয়ার শাসক ছিলেন কিমের প্রয়াত বাবা কিম জং ইল। পুতিনের ওই সফরের আগে রাশিয়ার কোনও প্রেসিডেন্ট উত্তর কোরিয়ায় পা রাখেননি। পুতিনের সেই সফরের পর রাশিয়া গিয়েছিলেন কিম জং ইল। বাবার পর এবার পুত্র কিম রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক আরও দৃঢ় করার কথা জানালেন। এদিনই কিমের দেশ থেকে ভিয়েতনাম উড়ে যাবেন পুতিন। তার আগে চিন্তা বাড়িয়ে দিলেন আমেরিকা-সহ একাধিক দেশের।