নয়া ‘নভেম্বর বিপ্লব’! সৌদিতে ‘স্বাধীন’ এবার বিদেশি শ্রমিকরা!

সুমন মহাপাত্র |

Nov 07, 2020 | 8:43 AM

নভেম্বরে সৌদি আরব এমন সিদ্ধান্ত নেওয়ায় বিষয়টিকে 'নভেম্বর বিপ্লব' বলে অ্যাখ্যা দিচ্ছেন কেউ কেউ। ফারাক যদিও বিস্তর।

নয়া নভেম্বর বিপ্লব! সৌদিতে স্বাধীন এবার বিদেশি শ্রমিকরা!
প্রতীকী চিত্র

Follow Us

TV 9 বাংলা ডিজিটাল: বহু বছর ধরে চলে আসা সৌদি আরবের (Saudi Arabia) বিদেশি শ্রমিক নীতিতে বদল আনল সে দেশের প্রশাসন। একাধিক নিয়ন্ত্রণ সরানোর কথা বললেন সে দেশের মানব সম্পদ ও সামাজিক উন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী সত্তম আলহারবি।

বর্তমানে সৌদি আরবের ‘কাফালা’ নিয়মের ফলে স্বাধীন ভাবে সে দেশে কাজ করতে পারতেন না বিদেশি শ্রমিকরা। এমনকি চাকরি বদলের ক্ষেত্রেও তাদের অনুমতি নিতে হয় বর্তমান সংস্থার কাছ থেকে। দেশ ছেড়ে আসার ক্ষেত্রেও নিয়ন্ত্রণ বসায় সংস্থা। বারবার প্রশ্ন উঠেছে সৌদি আরবের এই ‘কাফালা’ নিয়মের বিরুদ্ধে। মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে একাধিক মানবাধিকার সংস্থা। এবার সেই নিয়মেই সংশোধন আনছে মানল সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রক।

সংশোধিত নিয়ম জারি হবে ১৪ আগামী বছরের ১৪ মার্চে। যার ফলে বেসরকারি ক্ষেত্রের সঙ্গে যুক্ত বিদেশি শ্রমিকরা সহজেই সংস্থার অনুমতি ছাড়াই চাকরি বদল করতে পারবেন। পাবেন সংস্থার নিয়ন্ত্রণহীন ভ্রমণ কিংবা অন্য দেশে যাওয়ার স্বাধীনতা। এই নতুন নিয়মের জোরাল প্রভাব পড়বে সৌদি আরবের শ্রমিকদের মধ্যে। সে দেশের মোট জনসংখ্যার এক-তৃতীয়াংশই বিভিন্ন দেশ থেকে আশা শ্রমিকরা। প্রায় ১ কোটিরও বেশি বিদেশি শ্রমিক কাজ করেন সৌদি আরবে।

সৌদি আরবের দেশীয় শ্রমিকদের স্বার্থেই এই সংশোধন আনছে প্রশাসন। উপমন্ত্রী আলহারবি বলেন, “এটা কোনও সামান্য পরিবর্তন নয়। বিস্তর এক পরিবর্তন।” বেশির ভাগ সৌদি ব্যক্তিই সে দেশের সরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন। বেসরকারি ক্ষেত্রে বেশির ভাগই বিদেশি শ্রমিক। তাদের উপর কড়া নিয়ন্ত্রণ ওই সংস্থাগুলির। সামান্য একটি হারিয়ে যাওয়া পরিচয় পত্র ফিরে পাওয়ার জন্যও তাদের অনুমতি নিতে হয় বেসরকারি সংস্থার কাছে থেকে। নতুন নিয়মের ফলে বিদেশি শ্রমিকরা নিজেরাই ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন। তাদের আর বেসরকারি সংস্থার অনুমোদনের অপেক্ষায় থাকতে হবে না।

মানব সম্পদ উন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী আলহারবি মনে করেন এই নিয়ম জারি হলে সৌদির নাগরিকরাও বেসরকারি ক্ষেত্রে কাজ করার জন্য উৎসাহী হবেন। করোনা অতিমারির ফলে তৈরি হওয়া বেকারত্বের হার কমানো সম্ভব হবে। সৌদির এই নিয়মে মানবাধিকার সংস্থাগুলি খুশি হলেও, তাদের মতে আরও সংশোধান প্রয়োজন। এখনও সৌদিতে বিদেশি কর্মীদের বসবাসের জন্য অনুমোদনের এক্তিয়ার থাকছে বেসরকারি সংস্থার অধীনেই। সেখানেই পরিবর্তন চান মানবাধিকার কর্মী রোথনা বেগম। তাঁর কথায়, “এটা নিয়মের সম্পূর্ণ অবসান নয়।”

মহম্মাদ বিন সলমন

নভেম্বরে সৌদি আরব এমন সিদ্ধান্ত নেওয়ায় বিষয়টিকে ‘নভেম্বর বিপ্লব’ বলে অ্যাখ্যা দিচ্ছেন কেউ কেউ। ফারাক যদিও বিস্তর। জার্মানিতে রাজতন্ত্রে অবসানে বিপ্লব সংগঠিত হয়। এখানে খোদ রাজতন্ত্রই শ্রমিক নীতিতে’ঐতিহাসিক’ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর আগে মহিলাদের স্বাধীনতার জন্য একাধিক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ করেন সৌদির যুবরাজ মহম্মদ বিন সলমন। সম্প্রতি পানশালা, খেলার মাঠের প্রবেশ থেকে প্রকাশ্য রাস্তায় গাড়ি চালানোয় নারীদের স্বাধীনতায় সিলমোহর দেয় সলমন প্রশাসন।

Next Article