ফ্লোরিডা : ১৯৬৯ সালে চাঁদ থেকে মাটি এনেছিলেন মহাকাশচারীরা। আর সেই মাটিতেই এবার বেড়ে উঠছে গাছ। মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার মহাকাশযান অ্যাপোলো-১১ চাঁদের মাটি ছুঁয়েছিল। সেই সময়েই এই মাটি নিয়ে আসা হয়েছিল পৃথিবীতে। এত বছর ধরে সংরক্ষণ করা হয়েছিল সেই মাটি। আর এবার সেই মাটিতে প্রাণের সঞ্চার দেখে আপ্লুত গবেষকরা। ওই মাটিতে পরীক্ষামূলকভাবে গাছ লাগানো হয়েছিল, কিন্তু সেটা যে এ ভাবে বেড়ে উঠবে, তা ভাবেননি বিজ্ঞানীরা। চাঁদের কর্কশ মাটিতে কোনও প্রাণের আশা ছিল না।
ইউনিভার্সিটি অব ফ্লোরিডার কৃষি বিভাগের অধ্যাপক রবার্ট ফার্ল কার্যত বিস্ময় প্রকাশ করেছেন এমন দৃশ্যে। সত্যিই যে গাছ বাড়ছে, এ কথা বিশ্বাসই করতে পারছেন না তিনি। গবেষণার এই ফল তাঁদের অবাক করেছে। রবার্ট ফার্ল ও তাঁর সহকর্মীরা থালে ক্রেস নামে একটি গাছের বীজ বপন করেছিলেন। অ্যাপোলো-১১ মহাকাশযানে মহাকাশচারী নীল আর্মস্ট্রং ও বাজ আলদ্রিন এই মাটি এনেছিলেন। সেই মাটি গবেষণাগারে রাখা হয়েছিল।
তবে বীজ থেকে চারা বেরলেও তার বৃদ্ধির গতি খুবই কম বলে জানিয়েছেন গবেষকরা। জানা গিয়েছে, পৃথিবীর বুকে চাঁদের যে কৃত্রিম মাটি রয়েছে, তাতে গাছের বৃদ্ধির হার অপেক্ষাকৃত বেশি। কমিউনিকেশনস বায়োলজি পত্রিকায় সম্প্রতি এই গবেষণার তথ্য প্রকাশ হয়েছে।
আর এক গবেষক সিমন গিলোরি জানান, চাঁদের মাটিতে গাছ লাগানো যে সম্ভব, সেটা এই গবেষণা থেকেই প্রথম প্রকাশ্যে এল। এর পরের ধাপে সরাসরি চাঁদে গিয়ে বীজ বপনের কথা ভাবছেন তাঁরা।
অ্যাপোলোর যাত্রীরা চাঁদ থেকে ৩৮২ কিলোগ্রাম মাটি নিয়ে এসেছিলেন গবেষকরা। সেই মাটি সংরক্ষণ করা ছিল। অবশেষে সেই মাটি ইউনিভার্সিটি অব ফ্লোরিডার গবেষণাগার থেকে বের করে আনে নাসা। পরে তাতে বীজ বপন করা হয়। সম্প্রতি আবার চাঁদে মানুষ পাঠানোর পরিকল্পনা নিয়েছে নাসা। তাই তার আগে এই সাফল্য বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন গবেষকরা।