ইসলামাবাদ : ফের শিয়া ও সুন্নি মুসলিম গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ পাকিস্তানে (Pakistan)। দুপক্ষের সংঘর্ষে মৃত্যু হয়েছে অন্তত ১১ জনের। জখম হয়েছে আরও ১৫ জন। গতকাল পাকিস্তানের কুরাম জেলার কোহাট এলাকায় শিয়া ও সুন্নি গোষ্ঠীর (Clash between Shia and Sunni group) মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। গোটা এলাকা এখনও থমথমে।
স্থানীয় সূত্রে খবর, কোহাটের পাহাড়ি এলাকায় জঙ্গল থেক গাছ কাটা নিয়ে বিবাদ চলছিল দুই পক্ষের মধ্যে। সেই বিবাদই সোমবার চরম আকার ধারণ করে। বাদানুবাদ থেকে হাতাহাতি এবং তারপর তা রীতিমতো সংঘর্ষের রূপ নেয়। যে গাছগুলি কাটা হচ্ছিল, সেগুলি পাহাড়ের যে এলাকায় ছিল, ওই এলাকার উপর কোন গোষ্ঠীর দখল বেশি, তা নিয়েই বিবাদের সূত্রপাত।
স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমের একাংশে প্রকাশ, পরিস্থিতি চরম আকার ধারণ করলে দুই পক্ষের মধ্যে গুলির লড়াই শুরু হয়। তাতে দুই পক্ষেরই বেশ কয়েকজনের গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু হয়েছে। এখনও পর্যন্ত যা খবর, তাতে অন্তত ১১ জন সংঘর্ষের সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গিয়েছে। জখম হয়েছে কমপক্ষে ১৫ জন।
দীর্ঘক্ষণ ধরে দুই পক্ষের মধ্যে গুলির লড়াই চলে। স্থানীয় সূত্রের খবর, ভারী অস্ত্রের ব্যবহার করেছিল দুই শিবিরই। পরিস্থিতি মোকাবিলায় এলাকায় বিশাল পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। আপাতভাবে দুই পক্ষের সংঘর্ষ বন্ধ করা গেলেও, এলাকা এখনও থমথমে। পাকিস্তান পুলিশ এলাকায় টহল দিচ্ছে। আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করছে।
পাকিস্তানে এই শিয়া ও সুন্নি গোষ্ঠীর লড়াই আজকের নয়, দীর্ঘদিন ধরে এই সমস্যা চলে আসছে সেখানে। একাধিক সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত তথ্যের ভিত্তিতে পাকিস্তানের সুন্নি গোষ্ঠীকে অস্ত্র, হাতিয়ার দিয়ে সাহায্য করেছে কুখ্যাত জঙ্গি গোষ্ঠী আল কায়েদা। এর পাশাপাশি তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তানেরও থেকেও মদত পাচ্ছে সুন্নি গোষ্ঠীর মুসলিমরা। একাধিকবার শিয়া গোষ্ঠীর বিভিন্ন জমায়েতের উপর হামলা চালাচ্ছে সুন্নিরা।
উল্লেখ্য, পাকিস্তানে শিয়া গোষ্ঠীর মুসলিমদের সংখ্যা অনেকটাই কম। গোটা পাকিস্তানে মাত্র ২০ শতাংশ মুসলিম শিয়া গোষ্ঠীর।
কিছুদিন আগেই বিস্ফোরণে কেঁপে উঠেছিল কাবুলিওয়ালার দেশও। আফগানিস্তানের কুন্দুজ় শহরে শিয়া মসজ়িদে বিস্ফোরণ হয়েছিল। বিস্ফোরণে অন্তত ১০০ জনের মৃত্যু হয়েছিল বলে প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছিল। উল্লেখ্য, আফগানিস্তানের মোট জনসংখ্যারও প্রায় ২০ শতাংশ শিয়া সম্প্রদায় মুসলিম। এদের মধ্যে অনেকেই হাজারা নামে একটি গোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত। এই জাতিগোষ্ঠীটি বিগত কয়েক দশক ধরে আফগানিস্তানে ব্যাপকভাবে নির্যাতিত হয়েছে।
বিস্ফোরণের পর সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশ কিছু ছবি ও ভিডিয়ো শেয়ার হয়েছে। ভিডিয়োগুলির সত্যতা প্রাথমিকভাবে যাচাই করা হয়নি। তাতে দেখা যাচ্ছে, মসজিদের মেঝেতে বেশ কয়েকটি রক্তাক্ত দেহ পড়ে আছে। প্রায়শই আফগানিস্তানে সুন্নি চরমপন্থীদের দ্বারা আক্রান্ত হতে হচ্ছে শিয়া মুসলিমদের।
আরও পড়ুন : Afghanistan Blast: শুক্রবারের নমাজ চলাকালীনই কুন্দুজ়ে শিয়া মসজিদে বিস্ফোরণ, মৃত অন্তত ১০০