নয়া দিল্লি: আফ্রিকার সোমালিয়া উপকূলের কাছ থেকে অপহৃত ১৫ ভারতীয় ক্রু সদস্য-সহ একটি জাহাজ। জাহাজটি লাইবেরিয়ার পতাকা নিয়ে চলছিল। বৃহস্পতিবার (৪ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় সোমালিয়ার উপকূলের কাছে থেকে এই পণ্যবাহী জাহাজটিকে অপহরণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ভারতীয় নৌসেনা। জাহাজটির নাম ‘এমভি লিলা নরফোক’। নৌসেনা জানিয়েছে, তারা এই অপহরণকাণ্ডের উপর কড়া নজর রাখছে। ইতিমধ্যেই ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে নৌসেনার যুদ্ধজাহাজ, আইএনএস চেন্নাই-কে। সংবাদ সংস্থা এএনআই-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, অপহৃত জাহাজটিকে পর্যবেক্ষণের জন্য নজরদারি এয়ারক্র্যাফ্টও মোতায়েন করা হয়েছে। সূত্রের খবর, জাহাজের ক্রু সদস্যদের সঙ্গেও ইতিমধ্যেই যোগাযোগ করা গিয়েছে। তবে, কারা এই অপহরণ কাণ্ডের পিছনে রয়েছে, তা এখনও জানায়নি নৌসেনা।
নৌবাহিনীর জানিয়েছে, এদিন ভোর থেকেই তাদের একটি পি৮আই সামুদ্রিক টহলদারি বিমান, অপহৃত জাহাজটির উপরে চক্কর কাটা শুরু করেছে। বিমানটি থেকে জাহাজে থাকা ব্যক্তিদের সঙ্গে যোগাযোগও করা হয়েছে। অপহরণকারীদের সঙ্গে কথা বলে, ভারতীয় ক্রু সদস্যদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে। জাহাজটির উপর লাগাতার নজরদারি চালিয়ে যাচ্ছে বিমানটি। সহায়তা প্রদানের জন্যই আইএনএস চেন্নাইকে ঘটনাস্থলে পাঠানো হচ্ছে। একইসঙ্গে, ওই এলাকার অন্যান্য দেশের নিরাপত্তা সংস্থা এবং বহুদেশীয় নিরাপত্তা সংস্থাগুলির সঙ্গে সমন্বয় করে সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। নৌবাহিনী বলেছে, “আন্তর্জাতিক শক্তি এবং বন্ধুত্বপূর্ণ বিদেশী শক্তিগুলির সঙ্গে, এই অঞ্চলে বাণিজ্যিক জাহাজগুলির নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ভারতীয় নৌবাহিনী।”
লোহিত সাগর, এডেন উপসাগর এবং মধ্য ও উত্তর আরব সাগর বরাবর যে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যিক চ্যানেল রয়েছে, সাম্প্রতিক সময়ে সেখানে হামলা ব্যাপকহারে বেড়েছে। এই এলাকায় একের পর এক বাণিজ্যিক জাহাজ হামলার মুখে পড়েছে। গত মাসে, আরব সাগরের কাছে লাইবেরিয়ার পতাকা নিয়ে চলা এক ট্যাঙ্কার জাহাজ, এমভি কেম প্লুটো-তে ড্রোন হামলা হয়েছিল। সেই জাহাজটিতেও ২১ জন ভারতীয় ছিলেন ক্রু সদস্য হিসেবে। এমভি কেম প্লুটো ছাড়াও, ভারতের উদ্দেশে রওনা হওয়া আরও একটি বাণিজ্যিক তেল ট্যাঙ্কারের উপরও একই দিনে দক্ষিণ লোহিত সাগরে ড্রোন হামলা হয়েছিল। এর ফলে, সমুদ্র বাণিজ্যে নিরাপত্তা সংক্রান্ত উদ্বেগ বেড়েছে ভারতের। গাজায় ইজরায়েলের হামলা বন্ধ না হলে, এই ধরনের হামলা চলতেই থাকবে বলে হুমকি দিয়েছে লেবাননের হুথি গোষ্ঠী। এই যোদ্ধা গোষ্ঠীকে খোলাখুলি সমর্থন করে ইরান। হামলা প্রতিরোধে, আইএনএস মরমুগাও, আইএনএস কোচি এবং আইএনএস কলকাতার সঙ্গে নজরদারির জন্য পি৮আই টহলদারি বিমান মোতায়েন করেছে।