কলকাতা: ৮২ বছর পর ইতিহাসটা একটু যেন উল্টে-পাল্টে গেল। প্রতিপক্ষের নিহত বা আহত সেনার দেহ কেটে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বিক্রির অভিযোগ আবার উঠল। সেবার জার্মানির বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছিল রাশিয়া। এবার অভিযোগের তির রাশিয়ারই দিকে। অভিযোগ তুলছে ইউক্রেন। ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রক বলছে, তাদের নিহত সেনার দেহ থেকে নানা অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ কেটে নেওয়া হয়েছে। এমনকি আহত সেনাদেরও ছাড়া হয়নি। এমনকি ইউক্রেন সেনার মাথার চুলও সাফ করে দিচ্ছে রুশ ফৌজ। মারিউপোলের ইউক্রেন সেনার ইউনিট হেড রাষ্ট্রসংঘকে কড়া একটা চিঠি লিখেছেন। সেই চিঠি নিয়ে হইচই পড়ে গিয়েছে।
চিঠির বক্তব্য, ‘আমরা যে সেনাদের দেহ হাতে পাচ্ছি, সেই দেহে অনেক অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ মিসিং। এটা স্পষ্ট যে সেগুলো কেটে নেওয়া হয়েছে। রুশ সেনারা বিক্রির জন্য ওইসব অঙ্গপ্রত্যঙ্গ কেটে নিয়ে যাচ্ছে।’ প্রসঙ্গত, আন্তর্জাতিক বাজারে কিন্তু মানুষের অঙ্গ প্রত্যঙ্গের ব্যবসাটা বিশাল। আমরা যতটা ভাবতে পারি, তার থেকেও বড় বাজার। হাত, পা, চামড়া, এমনকি আঙুলেরও বিশাল চাহিদা। শুধু মাথার চুলের বাজারই কয়েক হাজার কোটি টাকার। কয়েকদিন আগেও চিনে একশো গ্রাম মাথার চুলের দাম উঠেছিল আশি কোটি টাকা।
যুদ্ধ বন্দিদের উপর অত্যাচার করতে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ কেটে নেওয়া বহু পুরনো একটা কৌশল। তবে বহুবছর আগেই সেইসব নিষিদ্ধ হয়ে গিয়েছে। এ নিয়ে রাষ্ট্রসংঘের কড়া গাইডলাইনও রয়েছে। ফলে ইউক্রেনের এই অভিযোগ নিয়ে শুরু হয়েছে তোলপাড়। ১৯৪২-এ জার্মান ফৌজ যখন রাশিয়ায় ঢুকল, তখনও এই ধরণের অভিযোগ উঠেছিল। সেই সময়কার সিক্রেট ফাইল প্রকাশ্যে আনে রাশিয়া। তাতে দেখা যায়, রুশ সেনাদের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ কেটে নেওয়ার জন্য নির্দেশ পাঠাচ্ছেন জার্মান আর্মি জেনারেলরা। যুদ্ধের মধ্যেই এই নিয়ে সে সময় জার্মানিকে চিঠি দেয় রাশিয়া। আর এবারের অভিযোগ নিয়ে রাশিয়া এখনও অফিসিয়ালি কোনও প্রতিক্রিয়া দেয়নি। তবে ইউক্রেন বলছে, তাঁদের দেশে রুশ সেনা কী জঘন্য অত্যাচার করছে, তা তারা তথ্য-প্রমাণ দিয়ে দুনিয়ার সামনে তুলে ধরবে। ক্ষতবিক্ষত সেনাদের দেহ ভিডিও করে রাশিয়ার আসল স্বরূপ তুলে ধরা হবে।