কলম্বো : চরম অর্থনৈতিক সঙ্কটের মুখোমুখি শ্রীলঙ্কা। গত ৭০ বছরে এরকম পরিস্থিতির মুখোমুখি কখনো হয়নি এই দ্বীপরাষ্ট্র। জ্বালানি তেলের ভাণ্ডার ফুরিয়ে গিয়েছে। সম্প্রতি আবার দাম বেড়েছে জ্বালানির। এই বছরের শুরু থেকে এখনও পর্যন্ত পাঁচগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে জ্বালানির দাম। এহেন পরিস্থিতিতে জ্বালানি তেলের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে শ্রীলঙ্কার সরকারের তরফে। শুধুমাত্র জরুরি পরিষেবার কারণে পেট্রল, ডিজেল মিলবে বলে জানানো হয়েছে। যেটুকু জ্বালানি অবশিষ্ট রয়েছে তা জরুরি পরিষেবার কারণে রাখা হয়েছে। জরুরি পরিষেবা ছাড়া বাকি সবকিছু ১০ জুলাই পর্যন্ত স্থগিত রাখা হয়েছে। এমনকী জ্বালানি বণ্টনে টোকেন ব্যবস্থা চালু করেছে লঙ্কা সরকার।
গতকাল সরকারের মুখপাত্র বান্দুলা গুনাওয়ারদানাকে উদ্ধৃত করে সংবাদ সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, ‘আজ মধ্যরাত থেকে আপৎকালীন পরিষেবা যেমন স্বাস্থ্য পরিষেবা ছাড়া জ্বালানি বিক্রি করা হবে না। কারণ যেটুকু রয়েছে আমরা তা গচ্ছিত রাখতে চাই।’ এই পরিস্থিতিতে ইতিমধ্যেই স্কুল বন্ধের নির্দেশিকা জারি হয়ে গিয়েছে। বেসরকারি অফিসের কর্মচারীদের বাড়ি থেকে কাজ করতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি সরকারি আধিকারিকদেরও একই ব্যবস্থা জারি রয়েছে। বর্তমানে সেখানে প্রতি লিটার ডিজেলের দাম চলছে ৪৬০ লঙ্কান রুপি ও পেট্রল ৫৫০ লঙ্কান রুপি।
এদিকে সম্প্রতি শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংঘে জানিয়েছিলেন, কয়েক মাস ধরে খাদ্য, জ্বালানি ও বিদ্যুতের ঘাটতিতে দেশের ঋণগ্রস্ত অর্থনীতি কার্যত ধসে পড়েছে। আমদানি করা তেল কেনারও আর ক্ষমতা নেই সেদেশের। সম্প্রতি সংসদে তিনি জানিয়েছেন, দেশের অর্থনীতি পুরো ভেঙে পড়েছে। সিলন পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশনের মাথায় রয়েছে ৭০ কোটি মার্কিন ডলারের ঋণের বোঝা। ফলে বিশ্বের কোনও দেশ বা তেল সংস্থা তাদের জ্বালানি দিতে রাজি হচ্ছে না। এমনকী, নগদ অর্থের বিনিময়েও তারা জ্বালানি সরবরাহ করতে অনিচ্ছুক। তবে সূত্রের খবর, আগামিদিনে শ্রীলঙ্কার মন্ত্রীরা জ্বালানি সঙ্কটের মধ্যেই রাশিয়া ও কাতার যেতে পারেন দেশের জ্বালানির বিষয়ে কথা বলার জন্য।