Sri Lanka Crisis: বুলেট-কাঁদানে গ্যাসে দমানো যাচ্ছে না বিক্ষোভকারীদের! চাপের মুখে জরুরি অবস্থা প্রত্যাহার প্রেসিডেন্টের
Sri Lanka Crisis: পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যাচ্ছে আন্দাজ করতে পেরেই মঙ্গলবার গভীর রাতে প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষ একটি গেজেট নির্দেশিকা জারি করে জরুরি অবস্থা প্রত্যাহারের কথা জানান।
নয়া দিল্লি: আর্থিক সঙ্কট যত বাড়ছে, ততই বিক্ষোভে তপ্ত হয়ে উঠছে রাবণের লঙ্কা। চাপের মুখে পড়েই জরুরি অবস্থা প্রত্যাহার করে নিলেন শ্রীলঙ্কা(Sri Lanka)-র প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষ (Gotabaya Rajapaksa)। গত ১ এপ্রিলই তিনি দেশের বিক্ষুব্ধ জনতাকে সামাল দিতে জরুরি অবস্থার (Emergency) ঘোষণা করেছিলেন। কিন্তু নিরাপত্তা বাহিনীর বন্দুক উপেক্ষা করেই যেভাবে প্রধানমন্ত্রীর ইস্তফার দাবিতে পথে নেমেছে পড়ুয়া থেকে সাধারণ মানুষ, তা দেখেই পিছু হটতে বাধ্য হয়েছেন প্রেসিডেন্ট।
বিগত দুই সপ্তাহ ধরেই চরম আর্থিক সঙ্কটের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে শ্রীলঙ্কা। একদিকে করোনাকালে পর্যটন শিল্পের বিপুল ক্ষতি, অন্যদিকে চিন থেকে নেওয়া ঋণের বোঝায় চাপা পড়ে গিয়েছে ভারতের প্রতিবেশী দেশ। সঙ্কট এতটাই বড় আকার নিয়েছে যে দেশের জ্বালানি তেলের ভাণ্ডার সম্পূর্ণ খালি হয়ে গিয়েছে। খরচ কমাতে বাতিল হয়েছে সমস্ত পরীক্ষা। দিনের ১০ থেকে ১৩ ঘণ্টাই লোডশেডিং করে রাখা হচ্ছে। দেখা দিয়েছে চরম খাদ্যসঙ্কটও। দেশের এই পরিস্থিতির জন্য প্রশাসনকেই দুষছে সাধারণ মানুষ। তাই বিক্ষোভে পথে নামছেন তারা।
এদিকে, পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যাচ্ছে আন্দাজ করতে পেরেই মঙ্গলবার গভীর রাতে প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষ একটি গেজেট নির্দেশিকা জারি করে জরুরি অবস্থা প্রত্যাহারের কথা জানান। ৫ এপ্রিল মধ্যরাত থেকেই এই নির্দেশিকা কার্যকর হবে বলে তিনি জানান। এর আগে সোমবারই তিনি মন্ত্রিসভা ভেঙে দেন ২৬ জন মন্ত্রীর একযোগে ইস্তফা দেওয়ার পর। দেশের অর্থনৈতিক সঙ্কট সামাল দিতে বিরোধী দলগুলিকেও সরকারের সঙ্গে হাত মেলানোর আহ্বান জানান তিনি।
তবে বিরোধীরা এই প্রস্তাবে সায় না দিয়ে, প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপক্ষের (প্রেসিডেন্টের ভাই) ইস্তফার দাবিই জানিয়েছেন। ১৯৪৮ সালে দেশের স্বাধীনতার পর এমন আর্থিক সঙ্কট আগে কখনও দেখা যায়নি বলেই জানিয়েছেন তারা। অস্থায়ী সরকার চালানোর জন্য সোমবার নতুন যে চার মন্ত্রীকে নিয়োগ করা হয়েছিল, তাদের মধ্যে থেকেও অর্থমন্ত্রী ইস্তফা দিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। পাঁচ সদস্য হাতছাড়া হওয়ার পরই সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠতাও হারিয়েছে সরকার। তবে বিরোধীরা এখনই অনাস্থা প্রস্তাব আনবে কিনা, তা এখনও জানা যায়নি।
অন্যদিকে, দেশের সাধারণ মানুষের মধ্যেও বিক্ষোভের আঁচ বেড়েছে। একাধিক সরকারি আধিকারিকের বাড়ির বাইরে বিক্ষোভ দেখানো শুরু হয়েছে। গতকাল বিকেলেও বৃষ্টির মধ্যেই পড়ুয়ারা প্রধানমন্ত্রীর বাড়ির উদ্দেশে মিছিল করে। কিন্তু মাঝপথে পুলিশ মানব শৃঙ্খল বানিয়ে বিক্ষোভকারীদের আটকে দেয়। বিক্ষোভকারীদের রুখতে রবারের বুলেট ও কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার করতেই পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয় নিরাপত্তা বাহিনীর গাড়িতে।