চরম অর্থকষ্টে ভুগছে শ্রীলঙ্কা। ছবি:PTI
কলম্বো: আর্থিক দেনায় ডুবে রয়েছে শ্রীলঙ্কা (Sri Lanka)। প্রতিবেশী দেশ হিসাবে ভারতের কাছ থেকে জ্বালানি ও খাদ্যশস্যের সাহায্য পেলেও, দেশের হাল ধরতে প্রয়োজন বিপুল পরিমাণ অর্থের। সেই কারণেই আন্তর্জাতিক অর্থ ভান্ডার (International Monetary Fund)-র দ্বারস্থ হয়েছে শ্রীলঙ্কা। জানা গিয়েছে, আইএমএফ-এর কাছ থেকে অন্তত ৩০০ কোটি ডলার ধার চেয়েছে শ্রীলঙ্কা।‘এক্সটেন্ডেড ফান্ড ফেসিলিটির’ অধীনে এই অর্থ সাহায্য চাওয়া হয়েছে বলেই সূত্রের খবর।
সূত্র মাধ্যমে জানা গিয়েছে, শ্রীলঙ্কার নতুন সরকার শীঘ্রই আইএমএফের সঙ্গে আলোচনায় বসতে পারে। জুনের শুরুতেই এই বৈঠক হতে পারে। চলতি মাসের শেষভাগের মধ্যে আইএমএফের সঙ্গে শ্রীলঙ্কার চুক্তি সম্পন্ন হতে পারে। যদিও আইএমএফের তরফে এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করা হয়নি। অন্যদিকে, শ্রীলঙ্কার অর্থমন্ত্রক ও সেন্ট্রাল ব্যাঙ্কের তরফেও চুক্তি নিয়ে মুখ খুলতে অস্বীকার করা হয়েছে।
১৯৪৮ সালে স্বাধীনতা পাওয়ার পর এই প্রথম চরম আর্থিক সঙ্কটের মুখে পড়েছে শ্রীলঙ্কা। একদিকে করোনাকালে পর্যটন শিল্প থমকে দাঁড়ানোয় দেশের অর্থনীতিতে যেমন ব্যাপক প্রভাব পড়েছে। তার উপরে চিনের কাছ থেকে নেওয়া বিপুল ঋণের বোঝার নীচেও ক্রমশ চাপা পড়ে গিয়েছে শ্রীলঙ্কা। দেশের আর্থিক ভান্ডার প্রায় শূন্য হয়ে গিয়েছে, ফুরিয়ে গিয়েছে বিদেশি মুদ্রা। একইসঙ্গে চরম সঙ্কট দেখা গিয়েছে জ্বালানি, খাদ্য়শস্য ও ওষুধের মতো অত্যাবশ্যকীয় পণ্যের। ইতিমধ্যেই শ্রীলঙ্কা নিজেকে ঋণখেলাপি বলে ঘোষণা করেছে। জ্বালানি ও ওষুধ আমদানি করার মতো অর্থও মজুত নেই বলেই জানিয়েছে সে দেশের সরকার।
এই পরিস্থিতিতে শ্রীলঙ্কার একমাত্র ভরসা আন্তর্জাতিক অর্থ ভান্ডারই। অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল দেশের সংস্কার করতেই আর্থিক সাহায্য করে থাকে আইএমএফ। এক্সটেন্ডেড ফান্ড ফেসিলিটি বা ইএফএফ প্রোগ্রামের অধীনে মূলত তিন বছরের জন্য এই আর্থিক সাহায্য করা হয় এবং পরে সাড়ে চার বছর সময় দেওয়া হয় সেই ঋণের অর্থ ফেরত দেওয়ার জন্য। আইএমএফের নিয়ম অনুযায়ী শ্রীলঙ্কার মতো ছোট দেশের জন্য যে পরিমাণ অর্থ বরাদ্দ থাকে, তার প্রায় চার গুণ অর্থের দাবি করা হয়েছে।
গত সপ্তাহেই শ্রীলঙ্কার সঙ্গে আইএমএফের বৈঠক হয়। তবে সেই বৈঠকে কী ধরনের আর্থিক সাহায্য প্যাকেজ নিয়ে আলোচনা করা হয়েছিল, সে সম্পর্কে কিছু জানা যায়নি।
এদিকে, মাহিন্দা রাজাপক্ষকে সরিয়ে রনিল বিক্রমসিংঘে শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করার পরই জানিয়েছেন যে, আগামী দু-এক সপ্তাহের মধ্যেই অন্তর্বর্তী বাজেট পেশ করবেন। মঙ্গলবারই সরকারের তরফে বাণিজ্যিক কর ও ভ্যাট ৮ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১২ শতাংশ করার ঘোষণা করা হয়েছে। এবার শ্রীলঙ্কা আইএমএফের কাছ থেকে আর্থিক সাহায্য পায় কি না, তাই-ই এখন দেখার।