কলম্বো: ভারতের প্রতিবেশী দেশ শ্রীলঙ্কার (Sri Lanka) আর্থিক দুরাবস্থা ক্রমেই খারাপ থেকে খারাপতর হচ্ছিল। দেশজুড়ে চরম আর্থিক দুর্দশার মধ্যে সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিচ্ছিলেন শ্রীলঙ্কার সাধারণ জনগণ। বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতা থেকে শুরু করে সরকারি আধিকারিকরা বিক্ষোভের মুখে পড়েছিলেন। গতকাল থেকেই জল্পনা ছিল বাড়তে থাকা চাপের মুখে ক্রমশই কোণঠাসা হয়েছে পড়ছে সেদেশের সরকার। এই অবস্থায় ইস্তফার পথ বেছে নিলেন শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজপক্ষ (Mahinda Rajapaksa)। প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন মাহিন্দা রাজাপক্ষ। শ্রীলঙ্কার স্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে উদ্ধৃত করে এখবর জানিয়েছে এএনআই।
Sri Lankan Prime Minister Mahinda Rajapaksa resigns: Local media#SriLanka
(file pic) pic.twitter.com/PWAkZGGVms
— ANI (@ANI) May 9, 2022
আগেই শ্রীলঙ্কার স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে দাবি করা হয়েছিল, যে কোনও মুহূর্তে রাজাপক্ষ পদত্যাগ করতে পারেন। জানা গিয়েছিল, খোদ শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট প্রধানমন্ত্রীকে ইস্তফা দেওয়া কথা বলেছিলেন। তবে সেই কথা অস্বীকার করেই রাজপক্ষ জানিয়েছিলেন তিনি জল্পনা করবেন না। তবে শ্রীলঙ্কার শাসকদল শ্রীলঙ্কা পোদুজানা পেরামুনা পার্টি এবং তাদের জোটসঙ্গীদের আলোচনায় রাজাপক্ষের পদত্যাগের বিষয়টি উঠে এসেছিল।
শ্রীলঙ্কার রাজনীতিতে রাজাপক্ষ বংশের অন্যতম প্রভাবশালী ব্যক্তি হিসেবেই পরিচিত ছিল মাহিন্দা। রবিবারই অনুরাধাপুরা শহরে সাধারণ জনগণের ক্ষোভের মুখে পড়েছিলেন রাজাপক্ষ। জ্বালানি, রান্নার গ্যাস এবং চলতে থাকা বিদ্যুত বিভ্রাটের অবসান চেয়ে উত্তেজিত জনতা রাজাপক্ষকে মারধর এবং শারীরিকভাবে হেনস্থা করে। বিক্ষোভরত জনতার দাবি, তারা চান গোটা রাজাপক্ষ পরিবার যেন রাজনীতি থেকে দূরে সরে যায় এবং দেশ থেকে চুরি করা যাবতীয় সম্পদ ফিরিয়ে দেয়। শ্রীলঙ্কার প্রভাবশালী বৌদ্ধ ধর্মযাজকও দেশে অন্তর্বর্তী সরকার চেয়ে প্রধানমন্ত্রী ও গোটা মন্ত্রিসভার পদত্যাগের দাবিতে সরব হয়েছিলেন, এবং ইস্তফার জন্য চাপ দিচ্ছিলেন। দেশজোড়া চাপের মুখে এক প্রকার বাধ্য হয়েই পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মাহিন্দা, এমনটাই মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল। প্রসঙ্গত, কয়েকমাস ধরেই চরম আর্থিক দূরাবস্থার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে শ্রীলঙ্কা। আর্থিক সঙ্কটের পাশাপাশি খাদ্যের অভাব, লাগাতার লোডশেডিং, লাগামহীন জ্বালানির দামের কারণে পথে নামতে বাধ্য হয়েছিল সেদেশের জনতা। আগেও রাজপক্ষের বাসভবের সামনে বিক্ষোভ দেখিয়েছিল উত্তেজিত জনতা।