কলম্বো: আগেও পাঁচবার প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছিলেন তিনি, কিন্তু মেয়াদ সম্পূর্ণ করতে পারেননি কোনও বারই। সঙ্কটের মুহূর্তে ফের একবার তাঁকেই প্রধানমন্ত্রিত্বের দায়িত্ব দেওয়া হল। শ্রীলঙ্কার (Sri Lanka) প্রধানমন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব পাওয়ার পরই রনিল বিক্রমাসিংঘে (Ranil Wickremesinghe) জানান, শ্রীলঙ্কার অর্থনীতির দুর্দশা কাটানোর চ্যালেঞ্জ নিয়েছেন। কীভাবে দ্রুত দেশকে এই আর্থিক সঙ্কটের মধ্যে থেকে বের করে আনা যায়, বর্তমানে এটা খুঁজে বের করাই তাঁর অন্যতম লক্ষ্য। তাঁর শাসনকালে ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক আরও মজবুত হবে বলেও দাবি করেন তিনি।
বিগত দুই মাস ধরে আর্থিক সঙ্কটের জেরে শ্রীলঙ্কায় যে চরম পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে, তার জেরেই সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে পথে নেমেছে সাধারণ মানুষ। জনতার রোষের মুখে পড়েই চলতি সপ্তাহের সোমবার ইস্তফা দেন প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপক্ষ। মন্ত্রিসভার সদস্যরাও আগেই ইস্তফা দিয়েছিলেন। এহেন পরিস্থিতিতে দেশে সেনার শাসন শুরু হতে পারে বলেও জল্পনা শুরু হয়। তবে সাধারণ মানুষকে আশ্বস্ত করে প্রেসিডেন্ট জানিয়েছিলেন এক সপ্তাহের মধ্যেই তিনি নতুন প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ ও মন্ত্রিসভা গঠন করবেন। এরপরই গতকাল শ্রীলঙ্কার নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসাবে রনিল বিক্রমাসিংঘের নাম ঘোষণা করা হয়। ইউনাইটেড ন্যাশনাল পার্টির নেতা বিক্রমাসিংঘেকে গতকালই শপথবাক্য পাঠ করান প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষ।
ষষ্ঠবারের জন্য প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণের পর সত্তরোর্ধ্ব রনিল বলেন, “দেশের অর্থনীতিকে পুনরুদ্ধারের দায়িত্ব নিয়েছি আমি। এই দায়িত্ব আমায় পূরণ করতেই হবে।” দেশজুড়ে যে বিক্ষোভের আগুন জ্বলছে, সে প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “কারোর দেশ ছেড়ে যাওয়ার প্রয়োজন নেই। আমি চাই সকলেই দেশে থাকুক। যদি বিক্ষোভকারীরা কথা বলতে চান, আমরাও তবে প্রস্তুত রয়েছি আলোচনার জন্য।”
শ্রীলঙ্কার আর্থিক সঙ্কটের মুহূর্তে পাশে দাঁড়িয়েছে ভারত। দফায় দফায় জ্বালানি ও খাদ্যশস্য দিয়ে সাহায্য করা হচ্ছে। নতুন প্রধানমন্ত্রীর কাছে ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, “ভারত বন্ধু দেশ। আশা করি আমার নেতৃত্বে দেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক আরও ভাল ও মজবুত হবে।”
অন্যদিকে, কলম্বোয় অবস্থিত ভারতীয় হাইকমিশনের তরফেও জানানো হয় যে রনিল বিক্রমসিংঘের নেতৃত্বে শ্রীলঙ্কায় রাজনৈতিক স্থিতাবস্থা ফিরে আসবে বলে আশা করা হচ্ছে। শ্রীলঙ্কার সরকারের সঙ্গে কাজ করতে আশাবাদী ভারত। শ্রীলঙ্কার মানুষদের প্রতি ভারতের যে দায়বদ্ধতা রয়েছে, তাও পূরণ করা হবে।