মানুষের শরীরে শূকরের কিডনি। ৬২ বছরের এক বৃদ্ধের শরীরে শূকরের কিডনি প্রতিস্থাপন করলেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের চিকিৎসকরা। এই প্রথমবার শূকরের কিডনি মানব শরীরে প্রতিস্থাপিত করলেন চিকিৎসকরা। বোস্টনের ম্যাসাচুসেটস জেনারেল হাসপাতালে গত ১৬ মার্চ এই প্রতিস্থাপন প্রক্রিয়া হয়। বৃহস্পতিবার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বিষয়টি প্রকাশ্যে আনে। প্রায় ৪ ঘণ্টা ধরে চলে এই কিডনি প্রতিস্থাপন প্রক্রিয়া। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, রিচার্ড স্লেম্যান নামে ওই রোগী আপাতত ভাল আছেন।
কিডনির অবস্থা দীর্ঘদিন ধরেই খারাপ স্লেম্যানের। তাঁর হাই ব্লাড প্রেশার, সঙ্গে আবার তিনি ডায়াবেটিক। ২০১৮ সালে এই হাসপাতালেই ডায়ালিসিস ও পরে কিডনি প্রতিস্থাপন হয় স্লেম্যানের। তবে কো-মর্বিডিটির কারণে কিডনি প্রতিস্থাপনের পাঁচ বছরের মধ্যে তা নষ্ট হয়ে যায়। আবারও শুরু হয় ডায়ালিসিস।
শূকরের অঙ্গ মানব শরীরে প্রতিস্থাপন করার ভাবনাচিন্তা বহুদিন ধরেই বিশ্বের তাবড় চিকিৎসা বিজ্ঞানীদের মাথায় চলছে। এ নিয়ে নিয়মিত গবেষণাও চলে। এর আগে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেরই মেরিল্যান্ডের ৫৭ বছর বয়সি এক ব্যক্তির দেহে শূকরের হৃৎপিণ্ড প্রতিস্থাপিত হয়েছিল। যদিও মাস দু’য়েক পরই সংক্রমণে মারা যান তিনি। তবে গবেষকরা এর আগে পরীক্ষামূলকভাবে শূকরের কিডনি প্রতিস্থাপন করেছিল হনুমানের শরীরে। দু’ বছর বেঁচে ছিল হনুমানটি।
তবে শূকরের কিডনি প্রতিস্থাপন প্রথম থেকে একটু বেশিই চ্য়ালেঞ্জিং ছিল। শূকরের জিনে আলফা জেল নামে এক প্রকার শর্করা থাকে। যা মানব দেহের পক্ষে গ্রহণ করা কঠিন। ফলে শূকরের কিডনি মানব দেহে প্রতিস্থাপন করলে মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়ার প্রবল সম্ভাবনা থেকে যাচ্ছিল। এরপরই শূকরের জিনগত পরিবর্তনের বিষয়টি নিয়ে ভাবনা চিন্তা শুরু হয়। আর তাতেই এবার এল সাফল্য। জিনের চরিত্র বদল করেই মানব শরীরে বসল শূকরের কিডনি। স্লেম্যান জানিয়েছেন, তিনি শুধু নিজের জীবনেই নতুন দিশা পেলেন না, হাজার হাজার মানুষকে আশার আলোও দেখালেন। এই সপ্তাহেই হয়ত হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাবেন তিনি।