Taliban: নিরস্ত্র বিদেশিদের হাসতে হাসতে করেছিল হত্যা, তালিবানি কাবুলে সেই এখন ‘যুদ্ধ নায়ক’
Afghanistan: বছর দশেক আগে আফগানিস্তানে কর্মরত তিনজন নিরপরাধ অস্ট্রেলিয় খনি শ্রমিককে হত্যা করেছিল সে। সেই চরমপন্থী আফগান সৈনিক হেকমতুল্লাহ এখন তালিবানি আফগানিস্তানে 'নায়ক'।
কাবুল: শান্তি আলোচনার সময়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র-সহ পশ্চিমী শক্তিগুলিকে তালিবানরা কথা দিয়েছিল, কাদের মাটি থেকে আর কোনও সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ হতে দেবে না তারা। তারপরও গত ৩১ জুলাই মার্কিন ড্রোন হামলায় মৃত্যু হয়েছে আল কায়েদা প্রধান আয়মান আল-জ়ওয়াহিরির। কিন্তু, শুধুমাত্র সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীতে নাম লেখানো থাকলেই যে কেউ সন্ত্রাসবাদী হয়, তা তো নয়। যে শান্তি বৈঠকে তালিবানরা সন্ত্রাসবাদকে মদত না দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, সেই একই বৈঠকে তারা মুক্তির দাবি করেছিল হেকমতুল্লাহর। বছর দশেক আগে এই চরমপন্থী আফগান সৈনিক আফগানিস্তানে কর্মরত তিনজন নিরপরাধ অস্ট্রেলিয় খনি শ্রমিককে হত্যা করেছিল বলে অভিযোগ রয়েছে। তবে, দ্বিতীয় তালিবান শাসনে সে এখন ‘নায়কে’র পরিচয়ে কাবুল শহরে বিলাসবহুল জীবনযাপন করছে।
২০২১ সালের অগস্টে তালিবান আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ পুনর্দখল করেছিল। তারপর একটা বছর কেটে গিয়েছে। মহিলাদের সামাজিক ক্ষেত্রে অংশগ্রহণের অনুমতি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। বর্তমানে, ডানা ছাঁটতে ছাঁটতে আফগান মহিলাদের ফের অন্তঃপুরবাসিনী করে তোলা হয়েছে। ঠেলে দেওয়া হয়েছে ঘরের চার দেওয়ালের মধ্যে। একইভাবে, বীরের সম্মান নিয়ে আফগানিস্তানে ফিরে এসেছে দুর্বৃত্তরা, হেকমতুল্লাহর মতো চরমপন্থীরা।
২০২০ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শান্তি আলোচনার সময়ে ৫,০০০ বন্দির মুক্তি চেয়েছিল তালিবানরা। আলাদা করে আলোচনা হয়েছিল হেকমতুল্লাহর মুক্তির বিষয়ে। ২০ বছর পর আফগানিস্তানে যুদ্ধ চালিয়ে গিয়েছিল মার্কিন বাহিনী এবং তাদের পশ্চিমী বন্ধুরা। যে ছয়জন ‘সন্ত্রাসবাদী’র উপর পশ্চিমী শক্তির নজর সবথেকে বেশি ছিল, তাদের অন্যতম ছিল হেকমতুল্লাহ। বিভিন্ন সংবাদ প্রতিবেদন অনুসারে এই উগ্র আফগান যোদ্ধাকে মুক্তি দেওয়ার বিষয়ে আপত্তি ছিল পশ্চিমীদের। তারা সাফ জানিয়েছিল, এমন সন্ত্রাসবাদীদের মুক্তি দেওয়া হবে না, যারা নিশস্ত্র বিদেশীদের হত্যা করেছে। কিংবা নিজেদের কৃতকার্যের জন্য একটুও অনুতপ্ত নয়। ছাড়া পেলে আরও নাশকতা ঘটানোর দাবি করে চালানোর দাবি করে। অস্ট্রেলিয় সরকারও হেকমাতুল্লাহর মুক্তির বিরোধিতা করেছিল।
এতকিছুর পরও সে মুক্তি পেয়েছে। আফগানিস্তানে ফিরেছে ‘যুদ্ধজয়ী নায়ক’ হিসেবে। গার্ডিয়ানের প্রতিবেদন অনুযায়ী তালিবান সরকার গঠনের পরই কাতারে গৃহবন্দি দশা থেকে মুক্তি দেওয়া হয় তাকে। সম্প্রতি প্রাক্তন আফগান সরকারের এক শীর্ষ কর্তা হেকমাতুল্লাহর আফগানিস্তানে ফিরে আসার বিষয়ে পাকা তথ্য দিয়েছেন। এমনকি, তাঁর সঙ্গে নৃশংস আফগান যোদ্ধার কথা হয়েছে বলেও দাবি করেছেন তিনি। হেকমাতুল্লাহ তাঁকে বলেছে, সে বিদেশিদের হত্যা চালিয়েই যাবে।
কোথায় আছে সে? ওই আফগান কর্তা দাবি করেছেন, আফগানিস্তানে ফিরে আসার পর থেকে সে কাবুলের কূটনৈতিক জেলা, ওয়াজির আকবর খানে এক অত্যন্ত সুরক্ষিত বাড়িতে থাকে। সূত্রের খবর, যে বাড়িতে আল-কায়েদার প্রাক্তন কমান্ডারকে হত্যা করেছে আমেরিকা, হেকমাতুল্লাহর বাড়ি তারই আশেপাশে অবস্থিত। ওই শীর্ষ কর্তা বলেছেন, “তাকে (হেকমতুল্লাহ) বীর হিসেবে কাবুলে স্বাগত জানানো হয়েছে। একটি বাড়ি, একটি গাড়ি, প্রহরী, আর্থিক সহায়তা – অনেক কিছু দিয়েছে তালিবান সরকার। তার অপরাধও ক্ষমা করে দেওয়া হয়েছে।