Bangladesh Eid: মঞ্জিলা, আমেনা, রাশিদা- এরা সবাই ‘বাঘ-বিধবা’! ইদ হোক আর পুজো, এই গ্রামে নেই কোনও আনন্দ

Rajib Khan | Edited By: তন্নিষ্ঠা ভাণ্ডারী

Apr 10, 2024 | 6:15 PM

Bangladesh Eid: গ্রামটির নামের সঙ্গেই মিশে আছে গ্রামটির কান্না আর দুঃখের করুণ কাহিনি। অনেক আগেই জীবন থেকে উৎসব-আনন্দ হারিয়ে গিয়েছে সাতক্ষীরার উপকূলবর্তী এলাকার এই গ্রামের। জীবিকার তাগিদে অনেকেরই স্বামীকে খেয়েছে বাঘ। সমাজের একাংশ আজও সেই সব মৃত্যুর দায় ঠেলে দিচ্ছে ওইসব বিধবা স্ত্রীদের দিকে।

Bangladesh Eid: মঞ্জিলা, আমেনা, রাশিদা- এরা সবাই বাঘ-বিধবা! ইদ হোক আর পুজো, এই গ্রামে নেই কোনও আনন্দ
বাঘ-বিধবা গ্রামের মহিলারা
Image Credit source: TV9 Bangla

Follow Us

বাংলাদেশ: বৃহস্পতিবার পালিত হবে ইদ-উল-ফিতর বা রোজার ইদ। বাংলাদেশে যা সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব। জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে পুরো দেশ মেতে উঠছে উৎসবের আমেজে। অথচ, একটি গ্রামে নেই কোনও উৎসব বা আনন্দ। শুধু এবছরের ইদেই নয়, বছরের পর বছর ধরে এই গ্রামে নেই কোনও উৎসব। এই গ্রামে শুধুই কান্না আর বিষন্নতার ছবি। গ্রামটির নামও কালের বিবর্তনে পরিবর্তন হয়েছে। আসল নাম হারিয়ে ফেলেছে সুন্দরবন ঘেঁষা এই গ্রাম। সবাই বলে ‘বাঘ বিধবা গ্রাম’।

গ্রামটির নামের সঙ্গেই মিশে আছে গ্রামটির কান্না আর দুঃখের করুণ কাহিনি। অনেক আগেই জীবন থেকে উৎসব-আনন্দ হারিয়ে গিয়েছে সাতক্ষীরার উপকূলবর্তী এলাকার এই গ্রামের। জীবিকার তাগিদে অনেকেরই স্বামীকে খেয়েছে বাঘ। সমাজের একাংশ আজও সেই সব মৃত্যুর দায় ঠেলে দিচ্ছে ওইসব বিধবা স্ত্রীদের দিকে। ‘অপয়া’ অপবাদ দিয়ে গ্রামের মানুষজন বলছে, স্ত্রীদের জন্যই নাকি বাঘ খেয়েছে ওইসব পুরুষকে।

নীলডুমুর গ্রামের মঞ্জিলা, আমেনা, রাশিদা সবাই ‘বাঘ-বিধবা’। তাঁদের এই দুঃখ কষ্ট আরও তীব্র হয় কোনও উৎসব এলে। এই সব নারীরা সমাজের কাছে অপয়া বলে গণ্য হয় আজও।

বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলীয় জেলা সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার মুন্সিগঞ্জ, গাবুরা, পদ্মপুকুর ইউনিয়নের এই সব ‘বাঘ-বিধবা’দের কারও স্বামী ছিলেন সুন্দরবনে মধু সংগ্রহকারী, কেউ ছিলেন কাঠ সংগ্রহকারী, আবার কেউ ছিলেন মাছ সংগ্রহকারী বা জেলে। বিভিন্ন সময়ে বাঘের আক্রমণে মৃত্যু হয়েছে তাঁদের। সেই মৃত্যুর দায়ই জোর করে চাপিয়ে দেওয়া হয় স্ত্রীদের উপর।

অধিকাংশ সময়েই স্বামী হারানোর দায় শুধু শ্বশুড়বাড়ি নয়, বাপের বাড়ি থেকেও দেওয়া হয় এই সব মহিলাদের। ফলে বোঝা হয়েই জীবন চালাতে হয় তাঁদের। এমন কী এলাকায় তাঁদের দিন মজুরের কাজেও নিতে চায় না কেউ। ফলে সন্তান সন্ততি নিয়ে অতিকষ্টে দিনযাপনই করতে হয় তাঁদের।

এমনই এক মহিলা তৈয়বা খাতুন। তিনি জানান, জীবিকার সন্ধানে বেরিয়ে স্বামী প্রাণ হারিয়েছেন বাঘের আক্রমণে। তারপর থেকে তাঁদের জীবনের সঙ্গী শুধুই কষ্ট।

জানা যায়, সব মিলিয়ে সাতক্ষীরায় রয়েছে প্রায় সহস্রাধিক বিধবা মহিলা। তাঁদের খবর নেওয়ার জন্য কোনও জন প্রতিনিধিরও সময় হয় না বলেই অভিযোগ। সুন্দরবন সাতক্ষীরা রেঞ্জের সহকারী রেঞ্জ কর্মকর্তা নুরুল আলম জানান, সাতক্ষীরার বন বিভাগের হিসেবে শুধুমাত্র ২০০৬ সাল থেকে এখনও পর্যন্ত স্বামী হারিয়েছেন এই গ্রামের ৫১৯ জন নারী।

Next Article