নয়া দিল্লি: একসময় আকাশ থেকে মহাকাশের রাজা বলে বিবেচিত হত ‘বোয়িং’। মার্কিন এই সংস্থা বিভিন্ন দেশে রফতানি করেছে তাদের তৈরি বিমান, রকেট এমনকী মিসাইলও। কিন্তু সাম্প্রতিককালে খ্যাতি হারাচ্ছে বোয়িং। নষ্ট হচ্ছে ভাবমূর্তি। হু হু করে কমছে শেয়ার। শেয়ার পড়ে গিয়েছে প্রায় ২৫ শতাংশ। প্রশ্ন উঠেছে এই সংস্থার বিমানের সুরক্ষা নিয়ে। কেন হল এমন অবস্থা? বিশ্লেষণ করল News9 Plus.
সম্প্রতি বোয়িং সংস্থার এক ইঞ্জিনিয়ার বেশ কিছু অভিযোগ সামনে আনেন। তিনি দাবি করেন, লাভের অঙ্ককে গুরুত্ব দিতে গিয়ে সুরক্ষার প্রশ্নে আপোষ করছে বোয়িং। এয়ারক্রাফটের গুণমানের থেকে গুরুত্ব পাচ্ছে এয়ারক্রাফটের সংখ্যা। এমনকী তিনি এ বিষয়ে কথা বলায়, তাঁকে হুমকি দেওয়া হয়েছে বলেও জানিয়েছেন ওই আধিকারিক।
এরই মধ্যেই সম্প্রতি একটি অডিটে উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। আমেরিকার একটি অডিটে উঠে এসেছে সুরক্ষা নিশ্চিত করার প্রক্রিয়ায় জোর দিচ্ছে না বোয়িং। আর এই অভিযোগ প্রথমবার সামনে আসেনি, আগেও এমন প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে সংস্থাকে।
বছর পাঁচেক আগে দুটি নতুন বোয়িং বিমান ভেঙে পড়ে যায়। ফ্লাইট কন্ট্রোল সফটওয়্যারে সমস্যা ছিল বলে জানা যায়। সেই দুর্ঘটনায় ৩৪৬ জনের মৃত্যু হয়েছিল। সেই সময় যে সব অভিযোগ উঠেছিল, তা চাপা দিতে ২৫০ কোটি ডলার পর্যন্ত দিতে রাজি হয়েছিল ওই সংস্থা।
বর্তমানে ভারতে রয়েছে ৪০টি বোয়িং ৭৩৭ বিমান। এই বোয়িং ৭৩৭-এর জনপ্রিয়তা যেমন বেশি, তেমন মনে রাখা দরকার, এই বিমানই ভেঙে পড়েছিল ২০১৮ ও ২০১৯ সালে। সম্প্রতি একটি বিমানের প্যানেল উড়ে যায় মাঝ আকাশে। সেটাও ছিল এই বোয়িং ৭৩৭।
বোয়িং ৭৩৭ বিমান ভারতেও নিষিদ্ধ হয়ে গিয়েছিল বছর দুয়েকের জন্য। বর্তমানে ভারতে আকাসা এয়ার সংস্থার কাছে রয়েছে ২২টি বোয়িং বিমান। স্পাইসজেট ও এয়ার ইন্ডিয়ার কাছে রয়েছে ৯ টি করে বোয়িং বিমান। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী একটি ‘বোয়িং ৭৭৭’ বিমান ব্যবহার করেন। উল্লেখ্য, সংস্থার যে কর্মী অভিযোগ তুলেছেন, তাঁর দাবি, ‘বোয়িং ৭৭৭’ -এর কোয়ালিটি কন্ট্রোলের ক্ষেত্রেও সমস্যা আছে।
ভারতে বোয়িং বিমান খতিয়ে দেখতে গিয়ে দেখা যায়, একটি ওয়াশার নেই তাতে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ওয়াশার কেন, একটা স্ক্রু হারিয়ে গেলেও সেটা বিমানের জন্য বিপজ্জনক। গত বছরই, ১৯০টি বোয়িং বিমান অর্ডার দিয়েছে এয়ার ইন্ডিয়া, আকাসা এয়ারও ২০০টি নতুন বোয়িং বিমান অর্ডার করেছে। সুতরাং সুরক্ষা নিয়ে নতুন করে যে তদন্ত শুরু হয়েছে, সেটা বোয়িং-এর ব্যবসায় যথেষ্ট প্রভাব ফেলবে বলেই মনে করা হচ্ছে।