Mexico: রহস্যময় গাছের অভিশাপে দৃষ্টিহীন গোটা গ্রাম, শুধু মানুষ নয়, পশু-পাখিও

TV9 Bangla Digital | Edited By: অমর্ত্য লাহিড়ী

Jun 08, 2023 | 7:00 AM

Mexico Blind Village: ঘন জঙ্গলের আলো-আঁধারির মধ্যে ছোট্ট গ্রাম টিলটেপেক। ৩০০ জনের মতো মানুষ বাস করেন। জ্যাপোটেক উপজাতির মানুষ। ছেলে-মেয়ে-বুড়ো সকলেই অন্ধ।

Mexico: রহস্যময় গাছের অভিশাপে দৃষ্টিহীন গোটা গ্রাম, শুধু মানুষ নয়, পশু-পাখিও
কবে থেকে এই রহস্যময় কাণ্ডের শুরু, গ্রামের বুড়োরাও তা বলতে পারেন না

Follow Us

মেক্সিকো সিটি: গুহামানবের দিন থেকে অনেকদূর এগিয়ে এসেছে মানব সভ্যতা। তাও এই পৃথিবীতে এমন অনেক রহস্যে ভরা জিনিস রয়েছে, যা আজও সকলকে বিস্মিত করে। এমন অনেক জায়গা আছে, সেখানে যা যা ঘটে তার ব্যাখ্যা খুঁজে পাওয়া যায় না। যেমন এই পৃথিবীতে এমন একটা গ্রাম আছে, যেখানে জন্মের পরই প্রত্যেক শিশু অন্ধ হয়ে যায়। শুধু মানুষ নয়, পশু-পাখিও। কী? বিশ্বাস হচ্ছে না তো? কিন্তু এটাই সত্যি। এই গ্রাম রয়েছে মেক্সিকোতে, জন্ম নেওয়ার পর, মানুষ থেকে পশুপাখি সকলেই অন্ধ হয়ে যায়।

দৃষ্টিহীনদের গ্রাম

ঘন জঙ্গলের আলো-আঁধারির মধ্যে ছোট্ট গ্রাম টিলটেপেক। ৩০০ জনের মতো মানুষ বাস করেন। জ্যাপোটেক উপজাতির মানুষ। এমনিতে আর পাঁচটা জঙ্গলবাসী উপজাতি গ্রামের থেকে এই গ্রামের বিশেষ তফাত নেই। কিন্তু আশপাশে একটু ভাল করে নজর করলেই ফারাকটা বোঝা যায়। গ্রামের প্রত্যেকেই দৃষ্টিহীন! ছেলে-মেয়ে-বুড়ো সকলে। তাই, গ্রামটি বেশি পরিচিত ‘দৃষ্টিহীনদের গ্রাম’ বলে। বিশ্বের সবথেকে রহস্যময় গ্রামগুলির অন্যতম এই গ্রাম। এমন নয় যে, এই গ্রামের বাসিন্দারা জন্মান্ধ। জন্মের সময় শিশুদের স্বাভাবিক দৃষ্টিশক্তি থাকে। দৃষ্টিহীন বাবা-মায়ের কোলে শুয়ে পৃথিবীআলো দেখে শিশুরা। কিন্তু, তার মেয়াদ খুব বেশিদিনের নয়। ধীরে ধীরে তাদের দৃষ্টিশক্তি চলে যেতে থাকে। অচিরেই দৃষ্টিশক্তি সম্পূর্ণভাবে হারিয়ে অন্ধকার নেমে আসে তাদের জীবনেও।

অভিশপ্ত গাছ

প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে এমনটাই ঘটে আসছে টিলটেপেক গ্রামে। ঠিক কবে থেকে এই রহস্যময় কাণ্ডের শুরু, গ্রামের বুড়ারাও তা বলতে পারেন না। কিন্তু, কেন এই অন্ধত্বের অভিশাপ? হ্যাঁ, টিলটেপেক গ্রামের বাসিন্দারা মনে করেন, তাঁদের গ্রামে একটি অভিশপ্ত গাছ রয়েছে। তাঁরা সেই গাছটিকে বলেন ‘লাবজুয়েলা’। তারই জন্য গোটা গ্রামের উপর নেমে এসেছে অন্ধত্বের অভিশাপ। গ্রামবাসীদের দাবি, ওই গাছটি দেখার পরই নাকি শুধু মানুষই নয়, প্রাণীরাও অন্ধ হয়ে যায়। তবে, বিজ্ঞানীরা মনে করেন এটা স্থানীয় বাসিন্দাদের কুসংস্কার মাত্র। এই গণ-অন্ধত্বের অন্য ব্যাখ্যা দেন তাঁরা।

বিজ্ঞানীরা কী বলেন?

বিজ্ঞানীদের মতে টিলটেপেক গ্রাম ও সংলগ্ন এলাকায় একটি বিশেষ প্রজাতির মাছি রয়েছে। যাকে বলা হয় ‘ব্ল্যাক ফ্লাই’। সাধারণ মাছির থেকে কিছুটা বড়, কালো রঙের এবং অত্যন্ত বিষাক্ত। আর এই মাছিই টিলটেপেকর বাসিন্দাদের অন্ধ হয়ে যাওয়ার আসল কারণ। বিজ্ঞানীরা বলেন, ওই এলাকার আশপাশে যে জঙ্গল রয়েছে, সেখানেই ব্ল্যাক ফ্লাই দেখতে পাওয়া যায়। টিলটেপেক গ্রামেও সেই মাছি উড়ে আসে। ওই বিষাক্ত মাছির সংস্পর্শে আসলে, সম্ভবত কোনও বিশেষ জীবাণু সংক্রমণ ঘটে। আর সেই সংক্রমণের কারণেই এখানকার মানুষ ধীরে ধীরে অন্ধ হয়ে যায়। পশুদের অন্ধত্বের কারণও ওই ব্ল্যাক ফ্লাই। তবে, এটাই যে আসল কারণ, তা অনেকেই মানেন না। এই নিয়ে আরও গবেষণা জারি রয়েছে।

চেষ্টা করেছিল সরকার

বৈজ্ঞানিক উপায়ের পাশপাশি আরও অনেকভাব টিলটেপেকের বাসিন্দাদের কল্যাণের চেষ্টা করেছে মেক্সিকো সরকার। এমনকি, তাঁদের অন্যত্র পুনর্বাসনের ব্যবস্থাও করেছিল। কিন্তু, সেখানকার পরিবেশ টিলটেপেকের বাসিন্দাদের ‘প্রতিকূল’ মনে হয়েছিল। নতুন জায়গায় থাকতে পারেননি, জঙ্গলে ঘেরা ‘দৃষ্টিহীনদের গ্রামে’ই ফিরে এসেছেন। সম্ভবত, প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে চলা দৃষ্টিহীন-জীবনেই স্বাচ্ছন্দ বোধ করেন তাঁরা। বর্তমানে, সরকারও হাল ছেড়ে দিয়েছে।

Next Article