লন্ডন: জ্বর হোক বা গায়ে-হাতে ব্যথা। বর্তমানে ঘরোয়া ওষুধ হয়ে দাঁড়িয়েছে প্যারাসিটামল (Paracetamol)। অনেকেই কথায়-কথায় ৫০০ বা ৬৫০ মিলিগ্রামের প্যারাসিটামল ট্যাবলেট খান। কিন্তু, আপাতভাবে সুস্থ হয়ে ওঠার এই ওষুধের মধ্যেই লুকিয়ে রয়েছে বিপদ। কেউ অজান্তে প্যারাসিটামল খেয়ে নিজের ক্ষতি করছেন তো অনেকে জেনে-বুঝে মৃত্যুর পথে যেতে প্যারাসিটামলকে হাতিয়ার করছেন। শুনতে অবাক লাগছে? সম্প্রতি কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের (Cambridge University) এক সমীক্ষা রিপোর্টে এমনই তথ্য ধরা পড়েছে। তাই ‘আত্মহত্যা’ ঠেকাতে এবার প্যারাসিটামল বিক্রিতে রাশ টানার পরিকল্পনা করছে ব্রিটেন সরকার (US Government)।
ব্রিটেনে আত্মহত্যার হার অতিরিক্ত বেড়েছে। অধিকাংশ আত্মহত্যার উপায় খুঁজে বের করতে ২০১৮ সালে এক সমীক্ষা চালায় কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়। সেই সমীক্ষা রিপোর্টে দেখা যায়, অধিকাংশই আত্মহত্যার উপায় হিসাবে বেছে নিয়েছে প্যারাসিটামল ট্যাবলেট। অর্থাৎ অতিরিক্ত প্যারাসিটামল খাওয়ার ফলে আত্মঘাতী হওয়ার রিপোর্ট সমীক্ষায় উঠে আসে। অতিরিক্ত প্যারাসিটামল খেলে সেটা বিষের কাজ করে এবং লিভার সম্পূর্ণ নষ্ট করে দেয় বলে কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের সমীক্ষা রিপোর্টে উঠে এসেছে। তাই আত্মহত্যার হার কমাতে প্যারাসিটামল বিক্রির উপর নিয়ন্ত্রণ টানার পরিকল্পনা নিয়েছে ব্রিটিশ সরকার।
বর্তমানে ৫০০ মিলিগ্রামের ২ প্যাকেট (১৬টি ট্যাবলেট) প্যারাসিটামল একসঙ্গে কেনা যায়। প্যারাসিটামল কেনার জন্য ডাক্তারের প্রেসিক্রিপশনেরও প্রয়োজন হয় না। কিন্তু, বর্তমানে এভাবে প্যারাসিটামল কেনায় নিষেধাজ্ঞা জারির পরামর্শ দিচ্ছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। একসঙ্গে এত প্যারাসিটামল কেনার উপরেও এই পরামর্শ মেনেই ব্রিটিশ সরকার প্যারাসিটামল বিক্রিতে নিয়ন্ত্রণ জারির চিন্তা-ভাবনা করছে। বিষয়টি মেডিসিনস অ্যান্ড হেলথ কেয়ার প্রোডাক্ট রেগুলেটরি এজেন্সি (MHRA)-কে বিবেচনা করার কথা বলেছে সরকার।
ন্যাশনাল হেল্থ সার্ভিস (NHS)-এর রিপোর্ট অনুসারে, প্রতি বছর ব্রিটেনে গড়ে ৫ হাজার মানুষ আত্মহত্যা করেন। যার মধ্যে অধিকাংশই হতাশা থেকে আত্মহত্যার পথ বেছে নেন। এছাড়া সঙ্কটনজনক তালিকায় থাকেন প্রায় ২ লক্ষ মানুষ। আগামী দু-আড়াই বছরের ইংল্যান্ড সহ অন্যান্য শহরে আত্মহত্যার এই হার কমানোর লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে ব্রিটেন সরকার। প্যারাসিটামল বিক্রি নিয়ন্ত্রণে যেমন ব্রিটেন সরকার পরিকল্পনা করছে, তেমনই বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন সংস্থার তরফে কাউন্সিলিংয়ের জন্য হেল্পলাইনও খোলা হচ্ছে।