কিয়েভ: রাশিয়ার মত পৃথিবীর প্রথমসারির শক্তিধর দেশের আক্রমণের পরেও এখনও দাঁতে দাঁত চেপে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে ইউক্রেন। রাশিয়া ভেবেছিল ইউক্রেনের মত ছোট দেশেকে খুব সহজেই হারিয়ে দেওয়া সম্ভব হবে, তবে রাশিয়ার স্বপ্ন বাস্তবে সত্যি হয়নি। রাজধানী কিয়েভ এখনও অধরা রাশিয়ান সেনার। ইউক্রেনের এই মরিয়া লড়াইয়ের নেপথ্য নায়ক যিনি, তিনি প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কি। রাশিয়া বিরুদ্ধে লড়াইয়ে দেশবাসীকে নিজেদের মাতৃভূমি ও স্বাধীনতা রক্ষার লড়াইতে হাতে অস্ত্র তুলে নিতে বলেছিলেন প্রাক্তন এই কমেডিয়ান। তার ডাকে সারা দিয়েই ছাপোষা ইউক্রেনিয়রা হাতে তুলে নিয়েছিলেন অত্যাধুনিক অস্ত্র। মাঝে একটি গুজব রটেছিল যে, রাশিয়ার আক্রমণের কারণে দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন জ়েলেনস্কি। সেই গুজব মিথ্যে প্রমাণিত হয়েছে। আমেরিকা বারবার দাবি করে আসছে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের জীবনে ঝুঁকি রয়েছে এবং তাঁকে হত্যা করার চেষ্টা হতে পারে, কিন্তু তাসত্ত্বেও দেশ ছেড়ে পালিয়ে না গিয়ে দেশের নাগরিকদের পাশে থাকার সিদ্ধান্তই নিয়েছেন তিনি।
সম্প্রতি নিজের ইনস্টাগ্রাম প্রোফাইলে একটি পোস্ট করে নিজের লোকেশনের কথা জানিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট। পাশাপাশি তিনি বলতে ভোলেননি, তিনি লুকিয়ে নেই এবং তিনি কাউকে ভয় পাননা। তিনি লিখেছেন, “আমি কিয়েভের ব্যাঙ্কোভা স্ট্রিটে থাকছি। আমি লুকিয়ে নেই এবং আমি কাউকে ভয় পাই না। দেশেকে বাঁচাতে এই যুদ্ধ জেতার জন্য যা প্রয়োজন সব কিছুই করতে হবে।” জ়েলেনস্কির যে প্রাণের ঝুঁকি রয়েছে, সেই কথা আগেই বোঝা গিয়েছিল। কারণ যুদ্ধ ঘোষণার পর থেকে এখনও অবধি তাঁকে তিনবার হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। সতর্কতা ও আগে থেকে খবর এসে পৌঁছানোর ফলে সেই সব চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে।
ইনস্টাগ্রামে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট যে ভিডিয়ো বার্তা শেয়ার করেছেন, সেই ভিডিয়োতে তিনি সন্ধের কিয়েভের ছবিও দেখিয়েছেন। ভিডিয়ো দেখে বোঝা যাচ্ছে ওই বাড়িটিই এখন জ়েলেনস্কির কার্যালয়। পিছনে ইউক্রেনের জাতীয় পতাকা রেখে তিনি বলেন, “আজ আমাদের লড়াইয়ের ১২ তম সন্ধে। আমরা সকলেই যুদ্ধক্ষেত্রে রয়েছি এবং দেশের জন্য কাজ করছি। আমি কিয়েভেই রয়েছি এবং আমার সঙ্গে আমার টিমও রয়েছে।” রাশিয়ার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে অনেক ইউক্রেনবাসীই লড়াই চালাচ্ছেন। এই অসময়ে সুযোগ থাকা সত্ত্বেও তিনি যে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাননি, ভিডিয়ো প্রকাশ করে সেই বার্তাই দিলেন প্রেসিডেন্ট। সঙ্গে দেশবাসীর মনোবল চাঙ্গা করারও চেষ্টা করলেন। তবে অনেকেই মনে করছেন এইভাবে তিনি কোথায় আছেন তা, জানিয়ে নিজের প্রাণের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিলে তিনি।