ওয়াশিংটন: শুধু আমেরিকা (USA) নয়, ৪০টি দেশের উপরে নজরদারি চালাচ্ছিল চিনা স্পাই বেলুন (China Spy Balloon)। এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য় সামনে এল। আমেরিকার আকাশে চিনের রহস্যজনক বেলুনের দেখা মিলতেই বিস্তর টানাপোড়েন, জলঘোলা শুরু হয়েছিল। একদিকে আমেরিকার তরফে দাবি করা হয়, মার্কিন সামরিক ঘাঁটিগুলির উপরে নজরদারির জন্য়ই স্পাই বেলুন পাঠিয়েছে চিন। অন্য়দিকে চিন দাবি করে, কোনও নজরদারি নয়, বরং আবহাওয়া ও বৈজ্ঞানিক তথ্য সংগ্রহের জন্য ওড়ানো হয়েছিল ওই বিশালাকার বেলুন, যা হাওয়ার ধাক্কায় পথ হারিয়ে আমেরিকার আকাশসীমায় করে যায়। গত সপ্তাহেই মিসাইল ছুড়ে নামানো হয় ওই স্পাই বেলুন। এরপরই আমেরিকা-চিনের মধ্যে সম্পর্ক আরও জটিল হচ্ছে। বৃহস্পতিবার আমেরিকার তরফে জানানো হল, সন্দেহজনক বেলুন, যা চিন পাঠিয়েছিল, তা কমিউনিকেশন সিগন্যাল সংগ্রহ করতে সক্ষম। ৪০টি দেশের উপর থেকে উড়ে এসেছিল ওই বিমানটি। সন্দেহ, প্রত্যেকটি দেশের প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত তথ্য় সংগ্রহ করেছে চিন।
গত শনিবারই মার্কিন যুদ্ধবিমান থেকে মিসাইল ছুঁড়ে আটলান্টিক মহাসাগরে নামানো হয়। ইতিমধ্যেই সমুদ্র থেকে বেলুনের অংশাবিশেষ উদ্ধার করা হয়েছে। সেখান থেকে বিমানের যন্ত্রাংশ উদ্ধার করা হয়েছে। এই যন্ত্রাংশগুলি ইতিমধ্যেই এফবিআইয়ের সদর দফতর কোয়ান্টিকোয় পাঠানো হয়েছে পরীক্ষার জন্য। আমেরিকার দাবি, মন্টানার পরমাণু লঞ্চ প্যাড বেসের উপরে নজর রাখছিল ওই স্পাই বেলুন।
বৃহস্পতিবার মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের এক আধিকারিক বলেন, “আমরা জানি পিপলস রিপাবলিক অব চিনের পাঠানো নজরদারি বেলুন পাঁচটি মহাদেশের মোট ৪০টি দেশের উপর দিয়ে উড়ে এসেছে। বাইডেন প্রশাসন সরাসরি ওই দেশগুলির সঙ্গে যোগাযোগ করছে এই বিষয় নিয়ে।”
ওই আধিকারিক জানান, আমেরিকা এক প্রকার নিশ্চিত যে চিনের ওই বেলুন বিভিন্ন দেশের উপরে নজরদারি ও গোপন তথ্য সংগ্রহের জন্যই পাঠানো হয়েছিল। চিনের লাল ফৌজ প্রায়সময়ই এই ধরনের কাজকর্ম করে বলেও অভিযোগ করা হয়। ওই আধিকারিকের আরও দাবি, বেলুনের প্রস্তুতকারকের সঙ্গে চিনের সেনাবাহিনীর সরাসরি যোগাযোগ রয়েছে এবং এই বেলুন তৈরির অর্ডারও চিনের সেনাবাহিনীই দিয়েছিল।
অন্যদিকে, চিনের তরফে বেলুনটি তাদের নিজের বলে স্বীকার করে নিলেও, তা নজরদারির জন্য পাঠানো হয়নি বলেই জানানো হয়। চিনের দাবি, আবহাওয়া সংক্রান্ত গবেষণার জন্য এই বেলুন ওড়ানো হয়েছিল, কিন্তু হাওয়ার ধাক্কায় তার গতিপথ থেকে বিচ্যুত হয়ে আমেরিকার আকাশসীমায় প্রবেশ করে। বেজিংয়ের অভিযোগ, আমেরিকা ওই বেলুন মিসাইল ছুড়ে নামিয়ে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করেছে।