তাইপেই: একদিন নয়, পরপর তিন দিন যুদ্ধবিমান ওড়াল চিন (China)। তাইওয়ানের আকাশসীমা ভেদ করে তিনদিনের চক্কর কেটেছে অন্তত ১০০ টি যুদ্ধবিমান (Fighter Jet)। তাইওয়ানে এই ধরনের উস্কানিমূলক কার্যকলাপ বন্ধ করার বার্তা বেজিং-কে দিল আমেরিকা (America)। শুধুমাত্র গত শনিবারেই তাইওয়ানের (Taiwan) আকাশে উড়েছে ৩৯টি চিনা যুদ্ধবিমান। তাইওয়ানের দাবি, এখনও পর্যন্ত এটাই সর্বোচ্চ। সাম্প্রতিককালে তাইওয়ানে বারবার হানা দিতে দেখা গিয়েছে চিনা বিমানবাহিনীকে (Air Force)। তবে তিনদিন ধরে যে ভাবে আকাশে দাপিয়ে বেড়িয়েছে চিন, তা মোটেই ভালো চোখে দেখছে না আমেরিকা।
আমেরিকা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের মুখপাত্র নেড প্রাইস বলেন, ‘চিনের সেনাবাহিনীর এই উস্কানিমূলক কার্যকলাপে আঞ্চলিক শান্তি নষ্ট হচ্ছে। তৈরি হচ্ছে অস্থিরতা।’ এই ইস্যুতে তাইওয়ানের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছে আমেরিকা। ইন্দো-পেসিফক অঞ্চলে চিন এ ভাবে অস্থিরতা তৈরি করছে বলে মন্তব্য করেন তিনি। তাইওয়ান যাতে আত্মরক্ষার যথেষ্ট ক্ষমতা তৈরি করতে পারে, তার জন্য আমেরিকা সমর্থন করবে বলে দাবি জানিয়েছেন তিনি। তবে চিনের তরফে এখনও এই বিষয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে গত শুক্রবার ছিল চিনের ন্যাশনাল ডে। আর ওই দিন তাইওয়ানের আকাশসীমায় প্রবেশ করে চিনের ২২টি ফাইটার জেট, দুটি বম্বার ও একটি অ্যান্ট-সাবমেরিন এয়ারক্রাফট। পরে শুক্রবারেই ফের ১৩টি ফাইটার জেট পাঠায় চিন। রাতের অন্ধকারেও বিমান পাঠাতে ছাড়েনি বেজিং।
শুধু ভারতে সীমান্তে নয়, চিনের আগ্রাসী নীতি তারা অনেক দেশের ওপরেই প্রয়োগ করে থাকে, যা নিয়ে সমালোচনা চলছে বিশ্বের অনেক দেশেই। আর তাইওয়ানকে অধিকারে রাখতে বরাবরই উদ্যোগী চিন। তাইওয়ানকে কেন্দ্র করে বিদেশি শক্তির সঙ্গে সংঘাতও রয়েছে বেজিং-এর। গত জুন মাসেও তাইওয়ানের আকাশ সীমায় দেখা গিয়েছে চিনের দাপাদাপি। পরপর ওড়ানো হয় ২৮ টি যুদ্ধবিমান। একসঙ্গে এতগুলি যুদ্ধবিমান উড়িয়ে কার্যত অধিকারের বার্তা দেওয়ার চেষ্টা করে চিন।
জুন মাসেও তাইওয়ানের আকাশসীমার মধ্যে উড়ে যায় একের পর এক যুদ্ধবিমান, যার মধ্যে অনেকগুলি বোমারু বিমানও ছিল। সে বার অনুপ্রবেশ করা যুদ্ধবিমানগুলোর মধ্যে ছিল ১৪টি জে-১৬, ছয়টি জে-১১ যুদ্ধবিমান এবং পরমাণু বোমা নিক্ষেপে সক্ষম এইচ-৬ বোমারু বিমান। এই ঘটনার পর চিন দাবি করে, তাইওয়ান ইস্যুতে বাইরের কোনও দেশের নাক গলানো তারা পছন্দ করছে না। চিনের বিরুদ্ধে অশুভ আঁতাত চলছে বলেও মন্তব্য করা হয়।
চিন তাইওয়ানকে নিজেদের ভূখণ্ড বলে দাবি করে। সেই কারণে দীর্ঘদিন ধরেই একে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালিয়ে আসছে। কিন্তু তাইওয়ান নিজেদের স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র বলেই দাবি করে। আর এই ইস্যুতেই সংঘাত দুই দেশের।