টেক্সাস: আমেরিকার ডিস্ট্রিক কোর্টের বিচারক হলেন এক ভারতীয় বংশোদ্ভূত। ওই ব্যক্তির নাম সুরেন্দর কে পাত্তেল। ৫১ বছরের ওই ব্যক্তি সম্প্রতি আমেরিকার টেক্সাসের একটি জেলা আদালতের বিচারক হিসাবে নির্বাচিত হয়েছেন। এই প্রথম কোনও মালায়ালম ব্যক্তি আমেরিকার কোনও আদালতের বিচারক নির্বাচিত হলেন। সুরেন্দর আদতে কেরলের কাসারগড়ের বাসিন্দা। সেখানেই ছোট থেকে বড় হয়েছেন তিনি। তবে আমেরিকার আদালতের বিচারক খুব সহজে হননি তিনি। প্রচুর জীবন সংগ্রামের পর এই পদে বসতে পারছেন তিনি। সুরেন্দর জানিয়েছেন, তাঁর পরিবারের আর্থিক অবস্থা মোটেই ভাল ছিল না। দশম শ্রেণির পর পড়াশোনা ছেড়ে দিতে হয়েছিল তাঁকে। তার পর বিড়ি বাঁধা এবং দিনমজুরির কাজও করেছেন। সেই সব করে পয়সা জমিয়ে ফের পড়াশোনা শুরু করেছেন। এবং এখন তিনি আমেরিকার আদালতের বিচারক হিসাবে নজির গড়লেন।
আমেরিকার ডিস্ট্রিক বিচারক ঠিক হয় নির্বাচনের মাধ্যমে। টেক্সাসের জেলা আদালতের বিচারক হতে ৫১ জনকে পিছনে ফেলেছেন সুরেন্দর। এবং আমেরিকার প্রথম মালায়ালি বিচারক হয়েছেন। এ নিয়ে সুরেন্দর বলেছেন, “আমি যখন টেক্সারের বিচারক হওয়ার দৌড়ে নামি, তখন আমার অনেক নেগেটিভ প্রচার করা হয়েছিল। আমার নিজের দলও শুরুতে বিশ্বাস রাখতে পারেনি আমার উপর। ভেবেছিল আমি জিততে পারব না। কেউ ভাবেনি আমি এই পদে যেতে পারি।”
নিজের প্রথম জীবনের লড়াইয়ের কথাও জানিয়েছেন সুরেন্দর। রুপোর চামচ মুখে নিয়ে জন্মাবার সৌভাগ্য যে তাঁর হয়নি সে কথা জানিয়েছেন। জানিয়েছেন পয়সার অভাবে দশম শ্রেণির পর পড়াশোনা ছেড়ে দিয়েছিলেন তিনি। তার পর বিড়ি বাঁধা ও দিনমজুরির কাজ করতেন। এর পর এক গ্রামবাসীর সাহায্যে ফের পড়াশোনা শুরু করেন তিনি। স্নাতক কোর্সে ভর্তি হন। তা শেষ করার পর এলএলবি কোর্সে ভর্তি হন কোঝিকোড়ে। সে সময় নিজের খরচ চালানোর জন্য একটি হোটেলেও কাজ করতেন। এলএলবি পাশ করে আইনজীবী হিসাবে প্র্যাকটিস শুরু করেন তিনি। এর পর শুভা নামে এক মহিলার সঙ্গে বিয়ে হয় তাঁর। শুভা পেশায় নার্স। দিল্লিতে কর্মরত ছিলেন তিনি। এর পর সুরেন্দর চলে যান দিল্লিতে। কাজের সূত্রে শুভা আমেরিকায় গেলে তাঁর সঙ্গে আমেরিকায় যান সুরেন্দরও। সেখানে গিয়ে এলএলএম কোর্সে ভর্তি হন ইউনিভার্সিটি অব হাউস্টন ল সেন্টার। তা পাশ করার পর আমেরিকায় আইনজীবী হিসাবে কাজ শুরু করেন তিনি। তার পর জেলা আদালতের বিচারক নির্বাচিত হলেন তিনি।