ওয়াশিংটন: মার্কিন মুলুকের ভাগ্য পরীক্ষা আজ। আর কিছুক্ষণেই জানা যাবে মার্কিন প্রেসিডেন্টের গদিতে কে বসতে চলেছেন। প্রাথমিক গণনায় ৫৩৮টি আসনের মধ্যে ২৩০টি আসনেই এগিয়ে রয়েছেন প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট তথা রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প। ২১০টি আসনে এগিয়ে রয়েছেন ডেমোক্রাট প্রার্থী কমলা হ্যারিস। ভোটের ফল কী হতে চলেছে, তা কিছুক্ষণেই জানা গেলেও, এবারের নির্বাচনে অন্যতম নির্ণায়ক বিষয় হতে চলেছে গর্ভপাত। ব্যালট বক্সেও তার প্রমাণ মিলছে।
আমেরিকায় যে ইস্যুগুলি নিয়ে সবথেকে বেশি বিতর্ক, তার মধ্যে অন্যতম হল গর্ভপাত বিষয়ক আইন। গর্ভপাত নিয়ে একাধিক দেশেই কড়াকড়ি রয়েছে, তবে ২০২০ সালে আমেরিকার সুপ্রিম কোর্ট গর্ভপাত বন্ধ করার সপক্ষেই রায় দেয়। এরপর থেকে অধিকাংশ জায়গাতেই গর্ভপাত করা নিষিদ্ধ। কিছু প্রদেশে অনুমতি থাকলেও, সেখানে গর্ভাবস্থার ছয় সপ্তাহ পরে গর্ভপাত করা নিষিদ্ধ। কিন্তু ওই সময়ের মধ্যে অনেকেই গর্ভাবস্থার বিষয়টি জানতে পারেন না। ফলে অনাঙ্খিতভাবে গর্ভবতী হয়ে পড়লেও, সন্তান জন্ম দেওয়া ছাড়া আর কোনও উপায় থাকে না মহিলাদের।
এই ইস্যুতে প্রেসিডেন্সিয়াল বিতর্কসভারও অন্যতম ছিল। ডেমোক্রাট প্রার্থী কমলা হ্যারিসের নির্বাচনী প্রচারে অন্যতম হাতিয়ার ছিল এই গর্ভপাত বিরোধী আইন। প্রচারে বারংবার কমলা হ্যারিস বলেছেন যে গর্ভপাত নিষিদ্ধ হওয়ার ক্ষেত্রে ট্রাম্পের ভূমিকা রয়েছে বলে দাবি করেন। কমলা হ্যারিস নিজেকে গর্ভপাতের সমর্থক বলেন। প্রজননের ক্ষেত্রে স্বাস্থ্য, বিশেষ করে কৃষ্ণাঙ্গদের স্বাস্থ্য নিয়ে চিন্তাভাবনার প্রয়োজন রয়েছে বলেই জানিয়েছিলেন।
২০২৪ সালের অগস্ট মাসের তথ্য অনুযায়ী, টেক্সাস, ফ্লোরিডা, আলাবামার মতো আমেরিকার ১৭টি প্রদেশে গর্ভপাত সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। তবে কয়েকটি প্রদেশে ধর্ষণ, বলপূর্বক যৌনতা বা মায়ের স্বাস্থ্যের ঝুঁকি থাকলে, সেক্ষেত্রে গর্ভপাতের অনুমতি দেওয়া হয়।
অন্যদিকে, আলাস্কা, ক্যালিফোর্নিয়া, ইলিওনয়িস, কানসাস, মিশিগান, মিনেসোটা, নর্থ ডাকোটা, ওহাইয়ো, ভেরমন্টের মতো প্রদেশে গর্ভপাতের অনুমতি রয়েছে। কলোরাডো ও ম্যাসাচুসেটেও গর্ভপাতের আইনি অধিকার রয়েছে।
এবার ভোট গণনায় দেখা যাচ্ছে, ভেরমন্ট, ম্যাসাচুসেট থেকে শুরু করে নিউইয়র্ক, ওয়াশিংটনে জয়ী হয়েছেন ডেমেক্রাট প্রার্থী কমলা হ্যারিস। যেখানে গর্ভপাত বিরোধী আইনের বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন জনগণ।
অ্যারিজোনাতে ভোটাররা গর্ভপাত বিরোধী আইন সংস্কারের পক্ষেই ভোট দিয়েছেন। মিসৌরি, যেখানে প্রথম গর্ভপাত নিষিদ্ধ হয়েছিল, সেখানে জনগণই পিটিশন দিয়ে ২৪ সপ্তাহ পর্যন্ত গর্ভপাতে আইনি অনুমতি আদায় করতে চলেছে।