জেনেভা: রাশিযা-ইউক্রেনের যুদ্ধে আগেই ইউক্রেনের পাশে দাঁড়িয়েছে আমেরিকা। যুদ্ধে সাহায্যের জন্য বিপুল পরিমাণ অস্ত্রও পাঠানো হয়েছে। এবার রাষ্ট্রসঙ্ঘের মঞ্চেও ইউক্রেনের স্বপক্ষেই সুর চড়ালেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। ইউক্রেনের সাধারণ মানুষের উপরে কীভাবে নির্লজ্জভাবে অত্যাচার চালাচ্ছে রুশ সেনা, তা নিয়ে তীব্র সমালোচনা করলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন সম্পূর্ণরূপে ইউক্রেন ও তার সংস্কৃতিকে মুছে ফেলতে চাইছেন বলেও অভিযোগ করেন বাইডেন। রাষ্ট্রসঙ্ঘের নিয়মকেও লঙ্ঘন করছে রাশিয়া, এমনটাই জানান তিনি।
সাত মাসেরও বেশি সময় কেটে গেলেও যুদ্ধ থামার নাম নেই ইউক্রেনে। রুশ সেনা একাধিক জায়গা থেকে পিছু হটতে বাধ্য হলেও, তাদের আগ্রাসী মনোভাবে একচুলও পরিবর্তন হয়নি। রাশিয়ার হাত থেকে যে সমস্ত জায়গাগুলি দখলমুক্ত করছে ইউক্রেনের সেনা, সেখানে মাটি খুঁড়লেই খোঁজ মিলছে গণকবরের। ইউক্রেনের সাধারণ নাগরিকদের উপরে কীভাবে নির্মম অত্যাচার করে খুন করা হয়েছে, তার প্রমাণই মিলছে ওই কবরে। এই বিষয়টি সামনে আসতেই ইউক্রেনের পাশাপাশি প্রতিবাদের সুর চড়িয়েছে আমেরিকাও।
বুধবার রাষ্ট্রসঙ্ঘের ৭৭তম সাধারণ সভায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেন, “ইউক্রেনের সাধারণ মানুষের উপরে নির্লজ্জভাবে অত্যাচার চালাচ্ছে রাশিয়া। গণকবর থেকে উদ্ধার করা দেহগুলিতে অত্যাচারের চিহ্ন তার প্রমাণ। ওই অত্যাচারের চিহ্ন দেখলে হাড়হিম হয়ে যায়। রুশ সেনা ইচ্ছাকৃতভাবে ইউক্রেনের স্কুল, হাসপাতাল ও রেল স্টেশনে হামলা চালাচ্ছে। মস্কোর লক্ষ্যই হল যে ইউক্রেনের পৃথক অস্তিত্বকে মিটিয়ে ফেলা।”
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকেও আক্রমণ করে তিনি বলেন, “পুতিন চান ইউক্রেন ও তার সংস্কৃতিকে পৃথিবীর বুক থেকে মুছে ফেলতে। বারবার পরমাণু হামলার হুমকি দিয়ে তিনি পারমাণবিক অসস্ত্রচুক্তিকেও লঙ্ঘন করছেন। গোটা বিশ্ব এই ভয়ানক অত্যাচারগুলি দেখছে। পুতিন দাবি করছেন যে রাশিয়াকে হুমকি দেওয়া হয়েছে বলে উনি এইধরনের কার্যকলাপ করছেন, কিন্তু আসলে কেউই রাশিয়াকে হুমকি দেয়নি। রাশিয়া ছাড়া কোনও দেশই যুদ্ধ চায় না।”
গতকালই রুশ প্রেসিডেন্ট দেশের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার জন্য যে বিশাল সেনা মোতায়েন করার নির্দেশ দিয়েছেন, সেই প্রসঙ্গও টেনে বাইডেন বলেন, “এতে পরমাণু হামলর সম্ভাবনা আরও জোরাল হচ্ছে।”
উল্লেখ্য, ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধ শুরু করার পর থেকেই চাপের মুখে পড়েছে রাশিয়া। তবে এই কঠিন পরিস্থিতিতেও আগ্রাসী মনোভাব ছাড়েননি পুতিন। বুধবারই তিনি ফের পরমাণু যুদ্ধের হুঁশিয়ারি দেন। একইসঙ্গে পশ্চিমী শক্তিকেও দেখে নেওয়ার হুমকি দেন তিনি। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বুধবারই এক টেলিভিশন বার্তায় জানিয়েছেন যে, রাশিয়ার সার্বভৌমত্ব রক্ষা করতে তিনি সেনাবাহিনীর একাংশকে ইউক্রেনের দিকে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। পূর্ব ইউক্রেনের ডনবাসকে স্বাধীন করাই তাঁর লক্ষ্য বলে দাবি করেন।