ওয়াশিংটন : আমেরিকায় প্রাপ্তবয়স্ক প্রত্যেক নাগরিকের শরীরে ফাইজার এবং মডার্নার তৈরি করোনা টিকার বুস্টার ডোজ় প্রয়োগের অনুমোদন দিল মার্কিন ওষুধ নিয়ামক সংস্থা ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন। ফাইজ়ার বা মডার্নার করোনা টিকার প্রাথমিক ডোজ় নেওয়ার ছয় মাস পর এই বুস্টার ডোজ় নেওয়া যাবে বলে জানানো হয়েছে। ১৮ বছর বা তার বেশি বয়সি যে কোনও মার্কিন নাগরিক এই বুস্টার ডোজ় নিতে পারবেন।
মডার্নার সিইও স্টিফান বানসেল জানিয়েছেন, “করোনা টিকার বুস্টার ডোজ়ের এই আপদকালীন ব্যবহারের অনুমতি একটি গুরুত্বপূর্ণ সময়ে এসেছে। আমরা এখন শীতের মরশুমের দিকে এগোচ্ছি। গোটা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে শুরু করেছে, হাসপাতালে করোনা রোগীর ভরতি হওয়ার সংখ্যাও বাড়ছে।”
এর আগেও আমেরিকায় করোনা টিকার বুস্টার ডোজ দেওয়া হচ্ছিল। তবে তা শুধুমাত্র ৬৫ বছরের বেশি বয়স্ক ব্যক্তিরা, যাঁদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা একেবারেই কম, গুরুতর রোগী আক্রান্ত হতে পারেন, এমন ব্যক্তিরাই বুস্টার ডোজ নিতে পারতেন। এর পাশাপাশি, যাঁরা ঝুকিপূর্ণ পেশার সঙ্গে যুক্ত, তাঁদের জন্যও বুস্টার ডোজ দেওয়ার ব্যবস্থা হয়েছিল। তবে এবার ১৮ বছরের ঊর্ধ্বে প্রত্যেকেই করোনা টিকার বুস্টার ডোজ নিতে পারবেন আমেরিকায়।
এফডিএর ভারপ্রাপ্ত কমিশনার জেনেট উডকক জানিয়েছেন, এই সিদ্ধান্তের ফলে করোনার বিরুদ্ধে অবিরত সুরক্ষা দিতে অনেকটা সাহায্য পাওয়া যাবে। হাসপাতালে ভরতি এবং মৃত্যুর মতো গুরুতর পরিণতি আগের থেকে অনেকটা কমবে বলেও আশাবাদী তিনি।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের ওষুধ নিয়ামক সংস্থা আগেই ১৮ বছর এবং তার বেশি বয়সিদের জন্য ফাইজ়ার / বায়োএনটেকের কোভিড ভ্যাকসিনের বুস্টার ডোজ় ব্যবহারের অনুমোদন দিয়েছে। ইউরোপীয় মেডিসিন এজেন্সি আজ ফাইজ়ারের নাম উল্লেখ করে বলেছে, ‘১৮ বছর এবং তার বেশি বয়সিদের জন্য দ্বিতীয় ডোজ় নেওয়ার কম করে ছয় মাসে বুস্টার ডোজ় দেওয়া যেতে পারে। বুস্টার ডোজ় দেওয়া হবে কিনা সেই বিষয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের অধীনস্ত দেশগুলি নিজেদের মতো করে সিদ্ধান্ত নিতে পারে। বুস্টার ডোজ় গ্রহণের পর থেকে টিকাপ্রাপকদের শরীরে অ্যান্টিবডির পরিমাণ বেড়ে যায় বলেও জানিয়েছে ইউরোপীয় মেডিসিন এজেন্সি।
যাঁদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অত্যন্ত কম, তাঁরাও বুস্টার ডোজ় নিতে পারবেন। মানুষের শরীরে হৃদপিন্ডের মাংসপেশিতে এক ধরনের জ্বালার অনুভূতি দেখা যায় অনেক সময়। এটিকে মায়োকার্ডাইটিস বলা হয়। যাঁরা ফাইজ়ারের টিকা নিয়েছেন, তাঁদের একাংশের মধ্যে এই ধরনের সমস্যা দেখা গিয়েছে বলে বেশ কিছু রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে। বিশেষ করে যুবক অর্থাৎ, যাঁদের বয়স তুলনামূলকভাবে কম, তাঁদের মধ্যে এই রোগের প্রবণতা বেশি দেখা গিয়েছে।