ইসলামাবাদ: তোষাখানা মামলায় আদালতে হাজিরা না দেওয়ার জন্য মাথায় নাচছে গ্রেফতারি। তার মধ্যেই প্রাক্তন পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে আরও বড় এক দুর্নীতির অভিযোগ উঠল। পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী ইমরান খান প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন চার বছরে তাঁর স্ত্রী বুশরা বিবির ঘনিষ্ঠ বান্ধবী তথা শিল্পপতি ফারহাত শেহজাদির সম্পদ চার গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০১৭ সালে, ইমরান ক্ষমতায় আসার আগে ফারহাত শেহজাদি জানিয়েছিলেন, তাঁর মোট সম্পত্তির পরিমাণ ২৩ কোটি ১৬ লক্ষ টাকা। আর ২০২১ সালে তাঁর সম্পদ পৌঁছেছিল ৯৭ কোটি ১০ লক্ষ টাকায়। কীভাবে চার বছরে এতটা সম্পদ বৃদ্ধি পেয়েছে, ফারহাত এবং তাঁর পরিবারের, তার কোনও হদিশ পাওয়া যাচ্ছে না। চরম আর্থিক সঙ্কটের মধ্যে তাঁদের বিরুদ্ধে গুরুতর আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। তবে, ইমরান খানের দাবি, এই সকল অভিযোগ রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত।
প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন ইমরান খান, বারংবার অনাবাসী পাক ধনকুবের শিল্পপতিদের দেশে অর্থ লগ্নি করার আহ্বান জানিয়েছিলেন। কিন্তু, পাক সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, তাঁর ঘনিষ্ঠ শিল্পোদ্যোগী ফারহাত শেহজাদি এবং তাঁর পরিবারের সদস্যরা ব্রিটেনে চারটি রিয়েল এস্টেট সংস্থা অধিগ্রহণ করেছিলেন। ২০১৯ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে তিনটি সংস্থা নথিভুক্ত করা হয়েছিল ফারহাতের বোন মুসরাত খানের নামে। আর একটি সংস্থা নথিভুক্ত করা হয়েছিল ফারহাত এবং তাঁর স্বামীর নামে। সূত্রকে উদ্ধৃত করে ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে তহবিল তছরুপের উদ্দেশ্যেই এই সংস্থাগুলি অধিগ্রহণ করা হয়েছিল। এই সংস্থাগুলিকে সামনে রেখে কালো টাকা সাদা করা হত। নথি অনুসারে, ফারহাত এবং তার পরিবারের সদস্যরা সম্মানদক্ষিণা হিসেবে সংস্থাগুলি থেকে অর্থগ্রহণ করতেন। তবে, সংস্থাগুলির কোনও নথিতেই উপার্জনের কোনও উৎস পাওয়া যায়নি।
এই অবস্থায় পাকিস্তানের ফেডেরাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি, তহবিল তছরুপ প্রতিরোধ আইনে ফারহাত শেহজাদির বিরুদ্ধে একটি এফআইআর দায়ের করেছে। আপাতত আরহাত এবং তাঁর স্বামী ব্রিটেনেই আছেন। পাক ফেডেরাল এজেন্সি ইন্টারোলের সাহায্যে তাঁদের দেশে ফেরানোর পরিকল্পনা করছে। ফারহাত শেহজাদির স্বামী আহসান ইকবাল জামিল ফেডেরাল এজেন্সির এই এফআইআর রাজনৈতিক কারণে করা বলে দাবি করেছেন। তাঁর অভিযোগ, পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী মরিয়ম নওয়াজ নাকি প্রকাশ্যেই ফারহাত শেহজাদিকে দুর্নীতি মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়েছিলেন।