কাবুল: তালিবান কাবুলে পৌঁছে যাওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই বিমানবন্দরের দিকে যাওয়ার জন্য হুড়োহুড়ি শুরু হয়ে যায়। হাজার হাজার আফগান দেশ ছাড়ার প্রত্যাশায় বিমাবন্দরের দিকে ছুটে যায়। এমন ঘটনায় আরও বেশি তৎপর হয়ে উঠেছে তালিবান। আটকাতে শুরু করেছে আফগানদের। শহর ছেড়ে পালানোর চেষ্টা করলেই গুলি। যতই ভাবমূর্তি বদলে ফেলার কথা বলুক তালিবান, মাত্র ২০ বছর আগের স্মৃতি এখনও দগদগে। তাই ঝুঁকি নিতে চাইছেন না কেউ। বিমানবন্দরে উপস্থিত সেনা জানাচ্ছে, মহিলারা বিমানবন্দরে এনে কাঁটাতারের ওপর দিয়ে ছুড়ে দিচ্ছে সন্তানদের। নিজেরা না বাঁচলেও অন্তত সন্তান যেন বাঁচে, তাই এই মরিয়া প্রচেষ্টা।
এক ব্রিটিশ আর্মি অফিসার সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন, বিমানবন্দরে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা তাঁর বাহিনীর যে অভিজ্ঞতা হচ্ছে, তা অত্যন্ত মর্মান্তিক। এমন সব দৃশ্য দেখতে হচ্ছে যে বাহিনীর সদস্যরা সারা রাত চোখের জল ফেলছেন। এক ব্রিটিশ সেনা জানাচ্ছেন, ‘কাঁটাতারের ওপর দিয়ে ছুড়ে দেওয়া হচ্ছে শিশুদের। কেউ কেউ আটকে যাচ্ছে ওই কাঁটাতারেই।
কিছুদিন আগেই কাবুলের হামিদ করজাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এক শিশুকে পড়ে থাকতে দেখা গিয়েছিল। বিমানবন্দরে একটা ছোট্ট বাক্সের মধ্যে পড়ে ছিল ফুটফুটে এক নিঃসঙ্গ শিশু। কার সন্তান, কী ভাবেই বা এখানে এল, কেনই বা এভাবে পড়ে রয়েছে কোনও প্রশ্নেরই উত্তর নেই। সবটাই বলা হচ্ছে অনুমানের ভিত্তিতে। হাজার হাজার মানুষের ভিড়ের মাঝেই এই শিশুটি হারিয়ে যায় বলে মনে করা হচ্ছে।
যদিও তালিবানরা প্রতিশ্রুতি দিয়েছে শহরে রক্তগঙ্গা বইবে না। অথচ রবিবার আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুল দখলের পর থেকেই আফগানবাসীর বাঁচার আপ্রাণ চেষ্টা ও তালিবানের নৈরাজ্যের চাক্ষুষ প্রমাণ মিলছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া ওই ভিডিয়োয় দেখা যায়, এক ব্যক্তি তালিবানদের হাত থেকে বাঁচতে বিমানবন্দরের উচু পাঁচিলে উঠেছেন এক ব্যক্তি। সেই সময়ে নীচেই বন্দুক হাতে দাঁড়িয়ে রয়েছে এক তালিবানি জঙ্গি। সরাসরি ওই ব্যক্তিকে লক্ষ্য করে গুলি চালাল কালো পোশাক পরা ওই তালিবানি। কপাল জোরে ওই ব্যক্তির গা ছুঁয়ে বেরিয়ে যায় ওই গুলি। প্রাণ বাঁচাতে উচু পাঁচিল থেকেই নীচে ঝাঁপ দেন ওই ব্যক্তি। আরও পড়ুন: ‘তালিবান আসছে আমাদের বাঁচান’, এয়ারপোর্টের গেট ধরে কান্না আফগান মহিলাদের