জেনেভা: একে তো করোনা সংক্রমণ থেকে নিস্তার মিলছে না, তার পাশাপাশিই নতুন করে উদ্বেগ বাড়াচ্ছে মাঙ্কিপক্সও। বিগত এক মাসের মধ্যেই বিশ্বের একাধিক দেশে ছড়িয়ে পড়েছে এই সংক্রমণ। ইতিমধ্যেই ১ হাজারেরও বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন এই নতুন সংক্রমণে। আর আক্রান্তের সংখ্যা হাজার পার করতেই বিশেষ সতর্কবার্তা দিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। মাঙ্কিপক্সের ঝুঁকি যে ক্রমশ বেড়েই চলেছে, তা মনে করিয়ে দিল হু।
বুধবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান টেড্রোস আধানম গেব্রেয়াসিস টুইট করে বলেন, “বিশ্বের ২৯টি দেশ মিলিয়ে ১ হাজারেরও বেশি মাঙ্কিপক্সে আক্রান্তের খোঁজ মিলেছে। এখনও অবধি মহামারির আকার ধারণ করেনি এই সংক্রমণ, কারোর মৃত্যুও হয়নি এই ২৯টি দেশে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তরফে আর্জি জানানো হচ্ছে, যে ২৯টি দেশগুলিতে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়েছে, তারা যেন সমস্ত আক্রান্তদের ও তাদের সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের দ্রুত চিহ্নিত করে যাতে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়া থেকে রোখা যায়।”
আগামিদিনে এই সংক্রমণ যাতে ছড়িয়ে না পড়ে, তার জন্য় মাঙ্কিপক্স প্রতিরোধের উপরে বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে। ভ্যাকসিন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “বর্তমানে বেশ কিছু অ্যান্টিভাইরাল ও ভ্য়াকসিন রয়েছে মাঙ্কিপক্সের চিকিৎসার জন্য। কিন্তু এর সরবরাহ সীমিত। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তরফে মিলিতভাবে গণটিকাকরণের ব্যবস্থা করা হচ্ছে ২৯টি দেশে, যেখানে মাঙ্কিপক্স ছড়িয়ে পড়েছে।”
সাধারণ মানুষদের সতর্ক করে হু প্রধান বলেন, “যাদের মাঙ্কিপক্সের উপসর্গ দেখা দিয়েছে, তাদের বাড়িতেই থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। যারা সংক্রমিত ব্যক্তির সঙ্গে এক বাড়িতে থাকছেন, তাদের আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শ এড়িয়ে চলার অনুরোধ করা হচ্ছে।”
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, মাঙ্কিপক্স সংক্রামক হলেও, নিজে থেকেই সংক্রমণ কমে যায়। সাধারণত ২ থেকে ৪ সপ্তাহের মধ্যেই সংক্রমণ কমে যায়। তবে মহিলা ও শিশুদের মধ্যে এই সংক্রমণ গুরুতর আকার ধারণ করতে পারে। এছাড়া যাদের কো-মর্ডিবিটি রয়েছে ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম, তাদের ক্ষেত্রেও গুরুতর আকার ধারণ করতে পারে এই সংক্রমণ। মাঙ্কিপক্স শরীরে ৬ থেকে ১৩ দিন থাকলেও, অনেক সময় তা ৫ থেকে ২১ অবধিও শরীরে প্রভাব ফেলতে পারে।
মাঙ্কিপক্সের সাধারণ উপসর্গ হল জ্বর, মাথাব্যাথা, পেশিতে ব্যাথা, মাথা ঘোরা। এছাড়া লিম্ফ নোডগুলিও ফুলে যায়, গোটা শরীরে চুলকুনিও বের হয়।