বেজিং: শুধু বাইরে নয়, ঘরেও লড়াই করতে হচ্ছে চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং-কে। কয়েক দশক ধরে দৌড়তে দৌড়তে এখন গতি ক্রমে কমছে চিনা অর্থনীতির। সেই সঙ্গে কোভিড-১৯ মহামারির পর থেকে যেভাবে একের পর এক সংস্থা চিন থেকে পাত্তারি গোটাচ্ছে, তাতে বেকারত্বের সমস্যাও বাড়ছে জিনপিংয়ের দেশে। কর্মসংস্থানের অভাবে, দলে দলে চিনা নাগরিক এখন চাকরির জন্য অন্য দেশে পাড়ি জমাচ্ছেন। চিনের বহু জায়গায় গত কয়েক মাসে বেকারত্ব নিয়ে বিক্ষোভ হয়েছে। করোনা মহামারির পর থেকে চিনের অর্থনীতি এখন অত্যন্ত কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। কর্মসংস্থানের অভাব নিয়ে চিনা তরুণরা উদ্বেগে আছেন। চিনের উৎপাদন ক্ষেত্রও কঠিন পরিস্থিতির সম্মুখীন। এর মধ্যে কি কমছে চিনা দেশভক্তদের সংখ্যা? অন্তত জিনপিং সরকার তাই মনে করছে। আর সেই কারণেই চিনের প্রেসিডেন্ট এবার নতুন দেশপ্রেম আইন চালু করতে চলেছেন।
চিনা সংবাদমাধ্যমগুলির প্রতিবেদন অনুযায়ী, সোমবার থেকেই গোটা চিনে এই নয়া আইন কার্যকর করা হবে। এই আইনের মাধ্যমে স্কুলের শিশুদের দেশপ্রেমের পাঠ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে শি জিনপিং সরকার। নতুন এই আইন সম্পর্কে চিনের এক সরকারি কর্তা বলেছেন, “দেশপ্রেম শিক্ষা আইনের উদ্দেশ্য হলো জাতীয় ঐক্য বাড়ানো। ছোট শিশু থেকে শুরু করে শ্রমিক ও চাকুরিজীবীদের মতো সর্বস্তরের জনগণকে চিনা কমিউনিস্ট পার্টির মূল্যবোধের প্রতি আস্থা প্রকাশ করতে হবে। এই আইনের উদ্দেশ্য হল, নাগরিকদের এই সব মূল্যবোধ ও সংকল্পের প্রতি উৎসাহী করে তোলা এবং তাঁরা যাতে দেশকে অগ্রাধিকার দেয় তা নিশ্চিত করা। স্কুলশিশুদের সিলেবাসে দেশাত্মবোধক আইনও যুক্ত করা হবে। আসলে, এই আইনের উদ্দেশ্য চিনের জাতীয় ধারণাগুলিকে এক জায়গায় আনা। শক্তিশালী দেশ গড়তে নাগরিক শক্তিই আমাদের ভরসা। জাতীয় ধারণাগুলি পুনরুজ্জীবনের মাধ্যমেই আমরা এই জায়গায় পৌঁছতে পারব।”
চিনে অবশ্য জোর করে দেশপ্রেম জাগ্রত করার প্রচেষ্টা নতুন নয়। এর আগে সংখ্যালঘু উইঘুর মুসলিমদের উপর দেশপ্রেম চাপিয়ে দিতে বিভিন্ন পদক্ষেপ করছে চিনের কমিউনিস্ট সরকার। দেশপ্রেমের শিক্ষা দেওয়ার নামে, সংখ্যালঘু যুবকদের নিয়মিত বন্দি করা হয় বন্দি শিবিরগুলিতে। সেখানে তাদের দেশাত্মবোধক নিবন্ধ লিখতে বাধ্য করা হয়। যার বিরুদ্ধে বারংবার সরব হয়েছেন মানবাধিকার কর্মীরা।