বেজিং: বিশ্বের সর্বকালের সবচেয়ে বুদ্ধিমান ব্যক্তি হিসাবে বিবেচনা করা হয় অ্যালবার্ট আইনস্টাইনকে। এই বিজ্ঞানী আজও অনেকের কাছেই অনুপ্রেরণার। এমনকি, মানুষ তাঁর ‘মস্তিষ্ক’ কিনতেও উন্মুখ। ভাবছেন কী যাতা কথা বলছি? আসলে, ‘আইনস্টাইনের ব্রেইন’ বিক্রি করে মোটা টাকা কামিয়ে সংবাদ শিরোনামে উঠে এসেছেন চিনের এক ২২ বছরের যুবক। সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের মতে, তিনি আইনস্টাইনের মস্তিষ্ক তৈরি করেছেন। যা নিয়ে চিনে হইচই পড়ে গিয়েছে। ইতিমধ্যেই চিনা ই-কমার্স সাইটে প্রায় ৭০,০০০ ইউনিট বিক্রি হয়েছে এই ভার্চুয়াল পরিষেবা।
উত্তর চিনের হেবেই প্রদেশের বাসিন্দা ঝাং জিয়াংজি। তিনি এক ভার্চুয়াল পরিষেবা তৈরি করেছেন, যার নাম তিনি দিয়েছেন আইনস্টাইনের ব্রেইন। এই অনন্য উদ্ভাবনটি শুধু বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দিতে পারে তা নয়, এর থেকে “মানসিক আরাম এবং আধ্যাত্মিক সন্তুষ্টি”-ও লাভ করবে মানুষ। এমনটাই দাবি ঝাং জিয়াংজির। আর এর জন্য আপনাকে শুধু ০.৫ ইউয়ান বা ভারতীয় মুদ্রায় ৬ টাকারও কম দিতে হবে। তবে, এই পণ্যটি একেবারেই ভার্চুয়াল পণ্য, মূলত ভার্চুয়াল চ্যাটিং পরিষেবা। পণ্যটির বিজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, “আমাদের পণ্য ভার্চুয়াল। আপনি এর জন্য টাকা দেওয়ার পর, আপনাকে শুধু স্মার্ট হওয়ার জন্য অপেক্ষা করতে হবে। সাধারণত এক রাতের ঘুমের পরই, দেখতে পাবেন, আইনস্টাইনের মস্তিষ্ক ইতিমধ্যেই আপনার মস্তিষ্কেও জায়গা করে নিতে শুরু করেছে।”
জানা গিয়েছে, ১৭ বছর বয়স থেকে ই-কমার্স ওয়েবসাইটে বিভিন্ন জিনিসপত্র বিক্রি করা শুরু করেছিলেন ঝাং। কিন্তু, তাঁর আয় ছিল অনিয়মিত। তিনি এমন একটা কিছু করতে চেয়েছিলেন, যা তাঁকে নিয়মিত আয়ের সুযোগ করে দেবে। সেই সময়, তাঁর এক বন্ধু তাঁকে বলেছিলেন, তাঁর দ্বারা হবে না। কারণ, তাঁর বুদ্ধি কম। নিজের বুদ্ধিমত্তা নিয়ে রসিকতা শুনেই, ঝাং-এর মনে আইনস্টাইন ব্রেইনের ধারণা তৈরি হয়েছিল। চলতি বছরের শুরুতেই আইনস্টাইনের ছবি এবং একটি মস্তিষ্কের ছবি দিয়ে এই আকর্ষণীয় পণ্যটি বাজারে আনেন ঝাং।
তরুণ উদ্যোগপতি জানিয়েছেন, তাঁর পণ্যের ক্রেতাদের অধিকাংশই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, না-হলে কলেজ ও মাধ্যমিক স্তরের ছাত্র। পিকিং ইউনিভার্সিটির মতো বড় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীরাও কিনছেন আইনস্টাইনের মস্তিষ্ক। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই পড়াশোনা, পরীক্ষা এবং ভবিষ্যত পরিকল্পনা নিয়ে প্রশ্ন করে তারা। ঝাং-এর মতে তাঁরা হয়তো আধ্যাত্মিক সন্তুষ্টিও খোঁজে। তিনি আরও বলেন যে তারা বিভিন্ন আকর্ষণীয় বিষয় নিয়ে কথা বলে। ঝাং জানিয়েছেন, “আমি যতটা সম্ভব মানুষকে আনন্দ দিতে চাই, তাদের সঙ্গে চ্যাট করে আমিও আনন্দ পাই।” ৭০,০০০ ইউনিট বিক্রি করে ঝাং ইতিমধ্যেই ৩৫,০০০ ইউয়ান বা ভারতীয় মুদ্রায় ৪ লক্ষ টাকার বেশি আয় করেছেন।