কলকাতা: সঙ্গীত জগতে নক্ষত্র পতন। প্রয়াত উস্তাদ জাকির হুসেন। আজ, ১৬ ডিসেম্বরের সকালে সান ফ্রান্সিসকোয় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৭৩ বছর। তাঁর প্রয়াণের খবরে সঙ্গীত জগতে নেমেছে শোকের ছায়া। ভেঙে পড়েছেন তাঁর ছাত্র-ছাত্রী থেকে ভক্তরা। শোকে বিহ্বল তাঁরা। এই ক্ষতির বর্ণনা কী দেবেন তা বুঝে পাচ্ছেন না কেউই।
উস্তাদ জাকির হুসেনের প্রয়াণের খবর পেয়েই ভেঙে পড়েন রাঘব চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “উস্তাদ জাকির হুসেন এমন এক মহীরূহ, যিনি ভারত তথা পৃথিবীর বুকে তবলা ও তালযন্ত্রের শেষ কথা। এমন একজনকে হারালাম, যার কোনও রিপ্লেসমেন্ট হবে না। যেমন রবীন্দ্রনাথ, লতা মঙ্গেশকর হবেন না, তেমনই উস্তাদ জাকির হুসেনও আরেকজন হবেন না। ভারতে ওনার সমগোত্রীয় অনেক তবলা বাদক রয়েছেন, কিন্তু ওনার তুলনা হয় না। ওনার ভাবনা, তালবাদ্যে কম্পোজিশন, সঙ্গত , লহড়া, ফিল্মে মিউজিক তৈরি করা- সামান্য একজন শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের ছাত্র হিসাবে বলতে পারি মহীরূহের পতন হয়েছে। আমরা ধন্য যে এমন একজন ব্যক্তিকে পেয়েছিলাম। অভিভাবকের মতো আমাদের মাথার উপরে থাকতেন তিনি। ওনার আত্মার শান্তি কামনা করি। অত্যন্ত মন খারাপ হয়ে গেল।”
তাঁর আরেক অনুরাগী ইন্দ্রদীপ দাশগুপ্ত বলেন, “জাকির হুসেন জীবনে বড় হওয়ার, মানুষ হওয়ার পথের পাঠ্যক্রম। উনি শিখিয়েছিলেন আদর্শ মানুষ হতে গেলে কী করতে হয়। নিজের শিল্প, সাধনা আগলে রাখতে গেলে কতটা পরিমীতি বোধ থাকতে হয়, কতটা ত্যাগ থাকতে হয়। তবলা বাজবে, পৃথিবীতে সব ধরনের তালবাদ্য বাজবে, আর সবকিছুতে উনি থাকবেন। আমি ধন্য যে ওঁকে সামনে থেকে দেখেছি, পা ছুঁয়ে প্রণাম করতে পেরেছি। এই শোক শুধু আমাদের নয়, এই শোক সঙ্গীতের। ঈশ্বরও বোধহয় নিভৃতে কাঁদছেন। এটাই শেখার যে গাছ যত বড় হয়, তত নীচু হয়।”