নয়া দিল্লি: আগামী সপ্তাহেই পেশ হতে চলেছে কেন্দ্রীয় বাজেট। একাধিক ক্ষেত্র এই বাজেট থেকে নানা প্রত্যাশা রাখছে। এরই মধ্য়ে অন্যতম একটি ক্ষেত্র হল ইলেকট্রনিক গাড়ি শিল্প। করোনাকালে দেশে ইলেট্রিক যানবাহনের চাহিদা ব্যাপক বৃদ্ধি পাওয়ার কারণেই এই শিল্পে আরও জোর দিতে আগ্রহী কেন্দ্র।
গত বছরই ভারতীয় বাজারে আত্মপ্রকাশ করেছে ইলেকট্রিক স্কুটার ও বাইক। তারপর থেকেই ইলেকট্রিক যানবাহন ঘিরে সাধারণ মানুষের আগ্রহ বেড়েছে, সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে চাহিদাও। কেন্দ্রের তরফে এই শিল্প ক্ষেত্রে ভর্তুকি নিয়ে চিন্তা ভাবনা শুরু করা হলেও, এই শিল্প ক্ষেত্রের তরফে দাবি করা হয়েছে যে, এই শিল্পের জন্য আরও কিছু করার দরকার। তাদের দাবি, আগামিদিনে পরিবহনের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে ইলেকট্রিক গাড়ি। কিন্তু ভারতীয় বাজার দখল করতে এখনও নানা প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। বহু বছর ধরে যারা পেট্রোল-ডিজেল চালিত যানবাহন ব্যবহার করে আসছেন, তাদের কাছে ইলেকট্রিক যানবাহনকে গ্রহণযোগ্য করে তোলাও যথেষ্ট চ্যালেঞ্জের বিষয়।
ইলেকট্রিক যানবাহন শিল্পের সঙ্গে যুক্ত ব্যবসায়ীদের প্রথম দাবিই হল করের বোঝা কমানো। কর, জিএসটি, সেস ও রেজিস্ট্রেশনের খরচ মিলিয়ে ইলেকট্রিক স্কুটার বা বাইকের দামই, পেট্রোল-ডিজেল চালিত বাইকের তুলনায় অনেক বেশি পড়ে যায়। ইলেকট্রিক গাড়ির দামও তুলনামূলকভাবে অনেকটাই বেশি। সেক্ষেত্রে ভারতীয় বাজারে প্রতিষ্ঠিত হতে ইলেকট্রিক গাড়ির উপর করের ছাড় ও সুনির্দিষ্ট একটি করের নীতি ও পরিকাঠামো যাতে তৈরি করা হয়, সেই আবেদনই জানানো হয়েছে কেন্দ্রের কাছে।
ইলেকট্রিক যানবাহন শিল্পে আরও একটি বড় সমস্যা হল এর কাঁচামাল বা যন্ত্রাংশের উপর অতিরিক্ত কর। বর্তমানে ভারতে ইলেকট্রিক গাড়ি, বাইক ও স্কুটারের উপর ৫ শতাংশ কর থাকলেও, এর বিভিন্ন যন্ত্রাংশ যেমন ব্যাটারির উপরই ১৮ শতাংশ কর রয়েছে। ফলে এটি কেবল গ্রাহকদের জন্যই করের বোঝা বাড়ায় না, উৎপাদনকারী সংস্থাগুলিকেও সেই করের খরচ বহন করতে হয়।
গ্রাহকদের কাছে ইলেকট্রিক যানবাহন আরও আকর্ষণীয় ও সহজলভ্য করে তোলার জন্য জিএসটির হারও হ্রাস করার অনুরোধ করা হয়েছে। বর্তমানে ইলেকট্রিক যানবাহনের উপর জিএসটি ১৮ শতাংশ জারি করা রয়েছে। যদি এই জিএসটির হার হ্রাস করা যায়, তবে ইলেকট্রিক বাইকের চাহিদা অনেকটাই বাড়তে পারে বলে আশাবাদী উৎপাদনকারী সংস্থাগুলি। পুরনো ও ব্যবহৃত গাড়ি, বাইকের ক্ষেত্রেও একইভাবে জিএসটিতে ছাড়ের দাবি জানানো হয়েছে। এর জন্য সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানোর আর্জিও জানানো হয়েছে।
বর্তমানে তেলঙ্গনা সহ কয়েকটি রাজ্যে ইলেকট্রিক গাড়ির ক্ষেত্রে রেজিস্ট্রশন চার্জ তুলে নেওয়া হলেও, দেশজুড়ে এই শিল্পের জনপ্রিয়তা ও প্রতিষ্ঠার জন্য বাকি রাজ্যগুলিতেও রোড ট্যাক্স ও রেজিস্ট্রেশনের খরচ কমানোর প্রয়োজন রয়েছে বলে জানানো হয়েছে।
ভারতে ইলেকট্রিক গাড়ি বা বাইক ব্যবহারের অন্যতম সমস্যা হল পর্যাপ্ত সংখ্যক চার্জিং স্টেশন না থাকা। কেন্দ্র যদি দেশজুড়ে ইলেকট্রিক গাড়ির চার্জিং স্টেশন তৈরি করে, তবে চাহিদাও অনেকাংশে বৃদ্ধি পাবে বলে দাবি।