নয়া দিল্লি : কয়েকদিন পরেই কেন্দ্রীয় বাজেট পেশ করবেন নির্মলা সীতারমন। আর তার আগে প্রত্যাশার পারদ ক্রমেই চড়ছে। দেশ যখন করোনা পরিস্থিতি থেকে ঘুরে দাড়াচ্ছে একটু একটু করে, তখন একরাশ আশা নিয়ে নির্মলার বাজেটের দিকে তাকিয়ে রয়েছে আপামর দেশবাসী। আশায় বুক বাধছে বীমা সংস্থাগুলিও। বীমা সংস্থাগুলি যাতে আরও বেশি লোককে বীমার আওতায় নিয়ে আসতে পারে, তার জন্য আনার জন্য আসন্ন কেন্দ্রীয় বাজেটে আয়কর আইনের ৮০ সি ধারার আওতায় বীমা প্রিমিয়াম দেওয়ার জন্য ১ লাখ টাকার পৃথক ছাড়ের দাবি তোলা হয়েছে। এর পাশাপাশি, স্বাস্থ্য বীমার উপর পণ্য ও পরিষেবা কর (GST) বর্তমান ১৮ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ করার দাবিও তুলছে বীমা সংস্থাগুলি। যাতে সাধারণ মানুষের জন্য এই পরিষেবা যাতে আরও সাশ্রয়ী হতে পারে, সেই জন্যই এই আবেদন জানাচ্ছেন। উল্লেখ্য, কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন ১ ফেব্রুয়ারি ২০২২-২৩ অর্থবর্ষের জন্য কেন্দ্রীয় বাজেট পেশ করবেন।
কানারা এইচএসবিসি ওবিসি লাইফ ইন্স্যুরেন্সের চিফ ফিনানসিয়াল অফিসার তরুণ রাস্তোগি বলেন, শিল্পের নীতিনির্ধারকদের কাছ থেকে দীর্ঘদিনের একটি আশা রয়েছে যে ৮০ সি ধারার আওতায় জীবন বীমা নেওয়ার জন্য লোকেদের আরও বেশি উৎসাহিত করা। কমপক্ষে এক লাখ টাকার আলাদা ছাড়ের আশা করা হচ্ছে। উল্লেখ্য, বীমা প্রিমিয়াম দেওয়ার জন্য বর্তমানে আইটি ডিডাকশনের ধারা ৮০ সি অনুযায়ী ছাড়ের সীমা হল দেড় লাখ টাকা।
এডেলউইস টোকিও লাইফ ইন্স্যুরেন্সের সিইও সুব্রজিত মুখোপাধ্যায় বলেন, “আমরা আশা করি যে বাজেটে জীবন বীমা প্রিমিয়াম দেওয়ার উপর করের জন্য একটি পৃথক বিভাগ তৈরি করার কথা বিবেচনা করা হবে৷” এজিয়াস ফেডারেল লাইফ ইন্স্যুরেন্সের ম্যানেজিং ডিরেক্টর এবং সিইও ভিগনেশ শাহানের মতে, “৮০ সি ধারায় বর্তমানে পাবলিক প্রভিডেন্ট ফান্ড, ইক্যুইটি লিঙ্কড সেভিংস স্কিম এবং ন্যাশনাল সেভিংস সার্টিফিকেট সহ বেশ কয়েকটি বিনিয়োগকে কভার করে। বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনা করে, বীমা প্রিমিয়াম দেওয়ার উপর করের জন্য একটি পৃথক বিভাগ ভাল হবে।”
ফিউচার জেনারেল ইন্ডিয়া লাইফ ইন্স্যুরেন্সের সিনিয়র ভিপি এবং প্রোডাক্টস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের প্রধান চিন্ময় ওয়াদে জানান, জীবন বীমা হল একজন ব্যক্তির মৃত্যুর পাশাপাশি বেঁচে থাকার ক্ষেত্রেও সামাজিক নিরাপত্তার একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক। অতএব, ৮০ সি ধারা অনুযায়ী দেড় লাখ টাকা পর্যন্ত ছাড়ের সীমা সংশোধন করার প্রয়োজন রয়েছে।
বীমা নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইআরডিএআই-এর বার্ষিক রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০২০-২১ আর্থিক বছর অনুযায়ী, দেশে বীমার হার জিডিপির ৪.২ শতাংশ। বিশ্বব্যাপী হিসেবে এই পরিসংখ্যান ৭.৪ শতাংশ। ২০২১ সালের মার্চ মাস নাগাদ, নন-লাইফ ইন্স্যুরেন্স নেওয়ার হার ছিল মাত্র এক শতাংশ।
লিবার্টি জেনারেল ইন্স্যুরেন্সের সিইও এবং হোলটাইম ডিরেক্টর রূপম আস্থানার মতে, মহামারী থেকে উদ্ভুত অনিশ্চয়তার কারণে, নিজেকে সুরক্ষিত রাখার জন্য স্বাস্থ্য বীমা একটি দৈনন্দিন প্রয়োজনে পরিণত হয়েছে। বর্তমানে এটি আগের চেয়ে আরও বেশি প্রাসঙ্গিক। অতএব, সরকারের উচিত স্বাস্থ্য বীমা প্রিমিয়ামের উপর প্রযোজ্য জিএসটিতে 18 শতাংশ থেকে কমিয়ে আনা।
আরও পড়ুন : Budget 2022: ট্যাক্স ছাড়ের সঙ্গে এফডিআই নিয়মকে সহজ করুক সরকার, অর্থমন্ত্রীর কাছে দাবি স্টার্টআপগুলির