নয়া দিল্লি: সকল ভারতীয়র মাথার উপর যাতে ছাদ থাকে, সেই লক্ষ্যেই ‘সকলের জন্য আবাসন’ প্রকল্প গ্রহণ করেছে মোদী সরকার। যার আওতায় রয়েছে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা (শহুরে এবং গ্রামীণ দুই প্রকল্পই)। ইতিমধ্য়েই এই প্রকল্পের আওতায় ৩ কোটি গরীব মানুষকে বাড়ি তৈরি করে দিয়েছে সরকার। এবার শুধু গরীব নয়, ২০২৪-২৫ সালের বাজেটে মোদী সরকার মধ্যবিত্তদেরও বাড়ি দেওয়ার কথা ঘোষণা করল। এদিন বাজেট উপস্থাপনের সময় কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন সরকারের উন্নয়নমূলক কাজগুলি নিয়ে আলোচনা করেন। তিনি জানান, আবাস যোজনার অধীনে আরও ২ কোটি নতুন বাড়ি তৈরি করা হবে। এর পাশাপাশি সরকারি সহায়তায় বাড়ি পাবেন মধ্যবিত্তরাও।
কেন্দ্রীয় বাজেটে অর্থমন্ত্রী ঘোষণা করেছেন, ভাড়া বাড়িতে যাঁরা থাকেন এবং বস্তি বা অননুমোদিত কলোনিতে যাঁরা থাকেন, তাঁদের নিজস্ব বাড়ি কেনা বা নির্মাণের জন্য একটি আবাসন প্রকল্প চালু করবে মোদী সরকার। সরকারের ‘সকলের জন্য আবাসন’ অভিযানের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই, মধ্যবিত্তদের ‘নিজের বাড়ি’র স্বপ্ন পূরণের এই প্রকল্প আনা হবে। সীতারামন বলেছেন, মোদী সরকার গত ১০ বছরে অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের উপর জোর দিয়েছে। এর অংশ হিসেবে, প্রত্যেক নাগরিককে বাড়ি, জল, বিদ্যুৎ, রান্নার গ্যাস এবং ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। তারই অংশ হিসেবে ভাড়া বাড়ি, বস্তি এবং অননুমোদিত কলোনিতে বসবাসকারী মধ্যবিত্তদের, তাদের নিজের বাড়ি কিনতে বা তৈরি করতে সহায়তা করা হবে। তার জন্যই মোদী সরকার এই প্রকল্প চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
তিনি আরও জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা-গ্রামীণ প্রকল্পের আওতায় এখনও পর্যন্ত ৩ কোটি বাড়ি তৈরি করা হয়েছে। কিন্তু, আবাসনের চাহিদা অনেক। তা মেটাতে আগামী ৫ বছরে আরও ২ কোটি বাড়ি তৈরি করা হবে। বাড়ানো হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা প্রকল্পের বাজেট বরাদ্দও। ২০২৩-এর বাজেট থেকে ৬৬ শতাংশ বাড়িয়ে, এই যোজনায় অন্তর্বর্তীকালীন বাজেটে ৭৯,০০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে ২০২৩-৩৪ অর্থবর্ষের জন্য। এর মধ্যে, শহরাঞ্চলের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে ২৫,১০৩ কোটি টাকা। বাকিটা গ্রামাঞ্চলের আবাসন প্রকল্পের জন্য।
গ্রামীণ এলাকায় যাতে সকলের বাড়ি থাকে, তার জন্য ২০১৬ সালের ১ এপ্রিল, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা-গ্রামীণ প্রকল্প চালু করেছিল কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রক। ২০২৪ সালের মার্চের মধ্যে, এই প্রকল্পের আওতায় ২.৯৫ কোটি পাকা বাড়ি তৈরি করা হয়েছে। এই প্রকল্পে সুবিধাভোগীদের ২.৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত দেওয়া হয় বাড়ি তৈরির জন্য। অন্যদিকে, ২০১৫-য় চালু হয়েছিল প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা-শহর। ২০২৩-এ রাজ্যসভায় কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কুশল কিশোর জানান, ২০২৩-এর ৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত এই প্রকল্পের অধীনে ১১৮.৬৩ লক্ষ বাড়ি তৈরির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। তবে, এতদিন এই সুবিধা ছিল শুধুমাত্র দরিদ্রদের জন্য। এবার, শহুরে এলাকার মধ্যবিত্তদেরও এই প্রকল্পের আওতায় আনা হল।