নয়া দিল্লি: প্রতি বছরই বাজেটের আগে রীতি ছিল হালুয়া তৈরির। বাজেট তৈরির চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছলেই সংসদ ও অর্থমন্ত্রকের কর্মীরা, যারা বাজেট তৈরির জন্য নিরন্তর পরিশ্রম করেছেন, তাদের মিষ্টি মুখ করানো হত এই হালুয়া খাইয়ে। কিন্তু ওমিক্রন কাঁটায় এবার তা বাতিল করে দেওয়া হল। তার বদলে কর্মীদের কাছে পাঠানো হল মিষ্টি।
বৃহস্পতিবারই কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে বিবৃতি জারি করে বলা হয়, “কেন্দ্রীয় বাজেট তৈরির চূড়ান্ত পর্যায়কে মনে রাখতে কর্মীদের মধ্যে মিষ্টি বিতরণ করা হয়েছে। প্রতিবছরই হালুয়া তৈরির রীতি রয়েছে, কিন্তু চলতি মহামারি পরিস্থিতিকে মাথায় রেখেই ও স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”
প্রতি বছরই নর্থ ব্লকে অর্থমন্ত্রকের প্রধান কার্যালয়ের বেসমেন্টে এই হালুয়া তৈরির অনুষ্ঠান করা হত। কেন্দ্রীয় বাজেট তৈরির কাজ চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছলে, সেই দিনটিকে বিশেষ ভাবে মনে রাখতেই হালুয়া তৈরির রীতি রয়েছে। অর্থমন্ত্রী নিজে অর্থমন্ত্রকের সহকর্মীদের মধ্যে হালুয়া বিতরণ করেন। বাজেট তৈরির কাজের সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের মধ্যেও বিতরণ করা হয় হালুয়া।
হালুয়া তৈরি ও বিতরণ অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার পরই সংসদের কর্মীরা ‘লক-ইন পিরিয়ড’-এ প্রবেশ করেন। সরকারি গোপন তথ্য যাতে ফাঁস না হয়ে যায়, সেই কারণেই বাজেটপত্র বাইরে থেকে ছাপানো হয় না। নর্থ ব্লকের ভিতরেই যে বাজেট ছাপাখানা রয়েছে, সেখান থেকেই বাজেটপত্র ছাপানো হয়। গোপনীয়তা বজায় রাখতে এই কাজের সঙ্গে যারা জড়িত, তারা নর্থ ব্লকের ভিতরেই বন্দি থাকেন, বাজেট পেশ হওয়ার পরই তারা নিজের পরিবার-পরিজনের সঙ্গে দেখা করার অনুমতি পান। এই বন্দি অবস্থায় তাদের ফোন ব্যবহারের অনুমতিও থাকে না।
কেন্দ্রের তরফে বিবতিতে বলা হয়েছে, “নর্থ ব্লকে সমস্ত কর্মী-আধিকারিকরাই শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি নিচ্ছেন আসন্ন কেন্দ্রীয় বাজেটের জন্য। অর্থমবন্ত্রী সংসদে বাজেট পেশ করার পরই এই আধিকারিক ও কর্মীরা এবার তাদের পরিবার-পরিজনের সঙ্গে দেখা করতে পারবেন।”
করোনা সংক্রমণের কথা মাথায় রেখেই গতবছর সংস্পর্শ এড়াতে পেপারলেস বাজেট পেশ করা হয়েছিল। বাজেটপত্রের বদলে ডিজিটাল মাধ্যমেই অর্থমন্ত্রী বাজেট পাঠ করেছিলেন। এই বছরও সংক্রমণের কারণেই ডিজিটাল মাধ্যমে বাজেট পেশের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এবারের বাজেটও কেন্দ্রের বাজেট মোবাইল অ্যাপে পাওয়া যাবে। বাজেট বিবৃতি সহ ১৪টি কেন্দ্রীয় বাজেটের সমস্ত নথিই পাওয়া যাবে ওই অ্যাপে। এছাড়াও বার্ষিক আর্থিক বিবৃতি, অর্থবিল সহ যাবতীয় তথ্য, যার উল্লেখ সংবিধানে রয়েছে, তা ওই অ্যাপে পাওয়া যাবে অর্থমন্ত্রীর বাজেট পেশের পর। অ্য়ান্ড্রয়েড ও আইওএস প্ল্যাটফর্মে এই অ্যাপ চলবে। হিন্দি ও ইংরেজি-দুই ভাষাতেই বাজেট পড়া যাবে।