নয়া দিল্লি : লোকসভায় আজ কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী আর্থিক সমীক্ষা রিপোর্ট প্রকাশ করেছেন। সেই আর্থিক সমীক্ষা রিপোর্টে রয়েছে ২০২১-২২ অর্থ বর্ষের বিভিন্ন ক্ষেত্রের খতিয়ান এবং আগামীর বিভিন্ন প্রকল্পের প্রস্তাবনা। এই রিপোর্টেই বলা হয়েছে, অতিমারীর সময় পরিযায়ী শ্রমিকদের শহর ছেড়ে নিজেদের বাসস্থানে ফিরে যাওয়া এবং মহাত্মা গান্ধী গ্রামীণ জাতীয় কর্মসংস্থান গ্যারান্টি আইনের (MNREGA) অধীনে কাজের দাবির মধ্যে কোনও সুস্পষ্ট সম্পর্ক নেই।
করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে সরকারের তরফে জারি করা হয়েছে লকডাউন। কিন্তু এই লকডাউনের জেরে বন্ধ হয়ে গিয়েছে বহু মানুষের রোজগার। বিশেষত, লক্ষ লক্ষ পরিযায়ী শ্রমিক এবং দিন মজুরদের একটা টিকে থাকার লড়াইয়ের মধ্যে ঠেলে দিয়েছে এই লকডাউন। কারণ লকডাউন জারি হওয়ার পর থেকে বিভিন্ন সেক্টর বন্ধ হয়ে গিয়েছে। তাঁদেরও শহরের কর্মক্ষেত্র ছেড়ে রওনা দিতে হয়েছে নিজেদের বাসস্থানের উদ্দেশে। বিহার এবং ঝাড়খণ্ডে এই পরিযায়ী শ্রমিকের সংখ্যাটা সবথেকে বেশি। এই সমীক্ষায় জ্ঞানত উল্লেখ করা হয়েছে, “কেউ মনে করতে পারেন যে MGNREGA-এর অধীনে কাজের চাহিদা সরাসরি পরিযায়ী শ্রমিকদের নিজ বাসস্থানে ফিরে যাওয়ার সঙ্গে সম্পর্কিত হতে পারে।” তবে, সমীক্ষায় বলা হয়েছে যে, MGNREGA-এর অধীনে সামগ্রিক স্তরে কর্মসংস্থানের চাহিদা এখনও ২০১৯ এর প্রাক-মহামারীর সময়কার চাহিদার অনেক উপরে বলে মনে করা হচ্ছে।
পশ্চিমবঙ্গ, মধ্যপ্রদেশ, ওড়িশা, বিহারের মতো রাজ্য বেশি পরিমাণে পরিযায়ী শ্রমিকদের বসবাস করতে দেখা যায়। বার্ষিক আর্থিক রিপোর্ট কার্ডে বলা হয়েছে উক্ত রাজ্যগুলির জন্য ২০২১ সালের বেশিরভাগ মাসে MGNREGA-এর অধীনে কর্মসংস্থান ২০২০ সালের সংশ্লিষ্ট কর্মসংস্থানের চেয়ে কম ছিল। সাধারণত, পশ্চিমবঙ্গ, মধ্যপ্রদেশ, ওড়িশা, বিহারের মতো রাজ্য থেকে পরিযায়ী শ্রমিকরা পঞ্জাব, মহারাষ্ট্র, কর্ণাটক এবং তামিলনাড়ুতে কাজ করতে যান। কিন্তু ২০২১ সালে করোনা আবহে কিছু অন্য ছবি ধরা পড়েছে। আর্থিক সমীক্ষা রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০২১ সালের বেশিরভাগ মাস জুড়েই এই রাজ্য যেখানে পরিযায়ী শ্রমিকরা কাজ করতে যান সেখানে MGNREGA-এর অধীনে কর্মসংস্থানের চাহিদা অনেক বেড়ে গিয়েছিল। এরপর এই সমীক্ষা রিপোর্ট এই সিদ্ধান্তে পৌঁছোয় যে, “গত দুই বছরে MGNREGA-এর অধীনে কর্মসংস্থান এবং পরিযায়ী শ্রমিকদের ঘরে ফেরার মধ্যে সম্পর্ক স্থাপন করে দেওয়া যায় না।” বলা হয়েছে, এই বিষয়ে আরও গবেষণার প্রয়োজন।
সার্বিকভাবে কর্মসংস্থানের বিষয়ে এই রিপোর্টে বলা হয়েছে, করোনা আবহে লকডাউনের কারণে যখন বেকারত্ব বেড়েছে, সেরকম সব অর্থনৈতিক ক্ষেত্র খুলে যাওয়ার পরে বেকারত্বের হারও কমেছে। প্রসঙ্গত, সমীক্ষায় বলা হয়েছে যে, ২০২১-২২ অর্থবর্ষে MGNREGA-এ বরাদ্দ বাড়িয়ে ৭৩,০০০ কোটি টাকায় করা হয়েছে। যেখানে ২০২০-২১ অর্থবর্ষে এই বরাদ্দ ছিল ৬১,৫০০ কোটি টাকা। ২০২১-২২ অর্থবর্ষে এখনও পর্যন্ত এই খাতে ব্যয় হয়েছে ৯৮০০০ কোটি টাকা বেড়েছে। ২০২১-২২ অর্থবর্ষে এখনও পর্যন্ত ৮.৭০ কোটির বেশি ব্যক্তি এবং ৬.১০ কোটি পরিবারকে কাজ দেওয়া হয়েছে।