বাজেট ২০২২-২৩ এর ঘোষণা হতে চলেছে। এই অবস্থায় বেশিরভাগ অধ্যাপক, ছাত্র আর শিক্ষাক্ষেত্রে সঙ্গে জড়িত অন্যান্য মানুষজনের আশা করছেন যে বাজেট ২০২২ এ শিক্ষার উপর বিশেষ মনোযোগ দেওয়া হবে। যাতে না শুধু কোভিড সম্পর্কিত সমস্যা দূর করতে বরং নতুন শিক্ষানীতি ২০২০ কেও এগিয়ে নিয়ে যেতে সাহায্য করবে। আগামী বাজেটে জিডিপির ৬ শতাংশ শিক্ষা ক্ষেত্রের জন্য বরাদ্দ করা উচিৎ য়া ২০১৪-১৯ এর আর্থিক বছরে ছিল ২ থেকে ৩ শতাংশ। এমনটা আশা করা হচ্ছে যে জাতীয় শিক্ষা মিশন আর অধ্যাপক প্রশিক্ষণ প্রোগ্রামের উপরও বিশেষভাবে মনোযোগ দেওয়া হবে যা ভারতের মতো বড় দেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। নতুন কোভিড ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যা এখনও পর্যন্ত বেড়ে চলেছে, এর মধ্যে আগামী বাজেটে ২১ শতকের জন্য না শুধু পাঠ্যক্রম বরং ডেলিভারি প্রণালীর রেফারেন্সেও শিক্ষা ব্যবস্থার উপর পুনর্বিচার করতে আর নতুন দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার সুযোগ দেবে।
পাঠ্যক্রমকে উন্নত করা জরুরি
দেশের শিক্ষা পাঠ্যক্রমকে এতটা প্রাসঙ্গিক আর মজাদার তৈরি করা উচিৎ, যাতে ছাত্ররা শেখার আনন্দ নিতে পারে, নাকি পুরনো পড়ে ফেলা পাঠ্যক্রমের ভাবনাচিন্তাকেই বারবার পড়তে থাকে, যার আজ আর কোনও গুরুত্ব নেই। এই কারণে তরুণদের ডিজিটাল এবং স্থিতিস্থাপক কৌশল প্রদান করে রোজগারে সক্ষম তৈরি করা উচিৎ। তাদের স্কিলিং, রিস্কিলিং এবং আপ স্কিলিংকেও গুরুত্ব দেওয়া উচিৎ, তবেই দেশের তরুণ সম্প্রদায় বিকশিত হয়ে চলা ডিজিটাল অর্থব্যবস্থায় যোগদান দিতে পারবেন। এর জন্য সরকার, এড-টেক প্লেয়ার্স এবং এড-টেক সেক্টরকে একত্রিত হয়ে কাজ করতে হবে। তরুণদের শিক্ষার ডিজিটালাইজেশনের জন্য শক্ত ভিত তৈরি করতে হবে আর এক আধুনিক কার্যপ্রণালী নির্ধারিত করতে হবে।
ডিজিটাল এবং ফিজিক্যাল পরিকাঠামোকে দিতে হবে উৎসাহ
সরকারের শক্ত ভিতের কাঠামো থেকে শুরু করে ডিজিটাল এবং ফিজিক্যাল পরিকাঠামোকে উৎসাহ দেওয়া উচিৎ। একইভাবে শিক্ষার গুণমানকেও প্রাথমিকতা দেওয়া উচিৎ। এর সঙ্গেই আজকের সময়ে ডিজিটাল শিক্ষাকেও উৎসাহ দেওয়া প্রয়োজন। অনলাইন পরীক্ষার জন্য অফিসিয়াল নির্দেশ এবং বেসিক পরিকাঠামো তৈরি করাও জরুরী কারণ আগামীদিনে অনলাইন পরীক্ষার গুরুত্ব বাড়তে পারে। সরকারকে এড টেক প্লেয়ারদের সঙ্গে মিলে দিকনির্দেশ জারি করতে হবে। শক্তি বেসিক পরিকাঠামোর নির্মাণ করতে হবে আর শিক্ষা সম্পর্কিত লক্ষ্যকে হাসিল করার জন্য উচিৎ প্রক্রিয়া তৈরি করতে হবে। শিক্ষা এমন এক পরিষেবা, যা অবিচ্ছিন্ন এবং নিরবচ্ছিন্নভাবে চালিয়ে যেতে হবে।
মহামারীর গত দু বছরে আমরা দেখেছি আমাদের এড-টেক ক্ষেত্র বাস্তবে এর জন্য সক্ষম। সরকারকে এড-টেকের সঙ্গে অংশীদারির মাধ্যমে আমাদের শিক্ষা প্রণালীকে শক্তিশালী করতে হবে যাতে শিক্ষাকে সকলের জন্য সুলভ করা যেতে পারে আর অবিচ্ছিন্নভাবে যাতে শিক্ষা সকলের কাছে পৌঁছে দেওয়া যায় তা সুনিশ্চিত করতে হবে।
এছাড়া উচ্চশিক্ষায় উদারীকরণ আর উদ্ভাবনকে উৎসাহ দেওয়াও গুরুত্বপূর্ণ, যার মাধ্যমে এক ছাত্রের ভবিষ্যত নির্ধারিত হয়। তরুণদের আধুনিক প্রযুক্তি যেমন এআই আর বিগ ডাটার মাধ্যমে নিজের পছন্দের কেরিয়ার বেছে নেওয়ার স্বাধীনতা দিলে রাষ্ট্রের নির্মাণ আর উদ্ভাবনকে উৎসাহ দেওয়া যেতে পারে। কিন্তু এর জন্য শক্তিশালী প্রশাসনের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে যাতে সমস্ত ব্যাপারগুলি দ্রুতগতিতে এগিয়ে যেতে পারে আর ভারত বিশ্বের মঞ্চে দুনিয়ার সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করতে সক্ষম হয়।
শেষে ভারতীয় অর্থব্যবস্থাকে আনুষ্ঠানিকতার সঙ্গে, আপস্কিলিং, রিস্কিলিংয়ের জন্য পরিকাঠামোগত দৃষ্টিকোণ গ্রহণ করতে তথা ইন্ডিয়া ইঙ্ক এর নেতৃত্বে শিল্প-শিক্ষা অংশীদারিকে উৎসাহ দেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে আর সরকারকে এতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করতে হবে।
আরও পড়ুন: Budget 2022: কখন, কোথায় দেখবেন বাজেটের সরাসরি সম্প্রচার? জানুন