নয়া দিল্লি: আগামী মাসেই রয়েছে অর্থ বাজেট (Union Budget 2022)। কেন্দ্রীয় বাজেট ঘিরে একরাশ প্রত্যাশা রয়েছে আম জনতার। ব্যাঙ্কিং থেকে টেলিকম, সমস্ত ক্ষেত্রই সরকারকে তাদের মনের কথা ও আশা-প্রত্যাশা সম্পর্কে জানিয়েছেন। আসন্ন বাজেটে টেলিকম অপারেটর (Telecom Operator)-দের অন্যতম দাবিই হল সরকার যেন প্রায় ৩৫ হাজার কোটি টাকার ইনপুট ট্যাক্স ক্রেডিট (Input Tax Credit) ফিরিয়ে দেয়। এছাড়াও লাইসেন্স ফি ও স্পেকট্রাম ব্যবহারের ক্ষেত্রে জিএসটিতে ছাড়ের দাবিও জানিয়েছে তারা।
প্রতি বছরের মতোই এবারও প্রাক বাজেট কিছু সুপারিশ দিয়েছে দেশের বিভিন্ন ক্ষেত্র। টেলিকম ইন্ডাস্ট্রি সংস্থা সিওএআইয়ের তরফেও সরকারের কাছে নিজেদের কিছু দাবি তুলে ধরা হয়েছে। এই যৌথ প্রতিষ্ঠানের সদস্যরা হল ভোডাফোন আইডিয়া, ভারতী এয়ারটেল ও রিলায়েন্স জিও। এই টেলিকম সংস্থাগুলির দাবি, সরকার যেন শীঘ্রই ইউনিভার্সাল সার্ভিস অবলিগেশন ফান্ড (USOF) বন্ধ করে দেয়। এই তহবিলের মাধ্যমে গ্রামীণ বা প্রত্যন্ত অঞ্চলে টেলিকম পরিষেবা চালু করতে আর্থিক সহায়তা করা হত। পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থাগুলির উপরে যাতে বিশেষ আর্থিক চাপ সৃষ্টি না হয়, সেই লক্ষ্যেই এই তহবিল চালু করা হয়েছে।
টেলিকম সংস্থাগুলির তরফে বলা হয়েছে, “৩৫ হাজার কোটি টাকার যে ইনপুট ট্যাক্স ক্রেডিট বা আইটিসি জমা রয়েছে, তা যেন ফেরত দিয়ে দেওয়া হয়। কারণ, আসন্ন ভবিষ্যতে এই অর্থ ব্যবহারের কোনও সম্ভাবনা নেই। বরং এই ক্রেডিট অর্থ গ্রাহকদের পরিষেবা, অভিজ্ঞতা আরও ভাল করতে এবং ডিজিটাল ইন্ডিয়ার স্বপ্ন পূরণে সাহায্য করবে।”
বর্তমানে টেলিকম অপারেটরদের আয়ের ৮ শতাংশ লাইসেন্স ফি হিসাবে দিতে হয়। এটিকে অ্যাডজাস্টেড গ্রস রেভেনিউও বলা হয়। এর আগে সরকারের তরফে এজিআরের অংশ হিসাবে বিভিন্ন রাজস্বে ছাড় দেওয়া বা সম্পূর্ণভাবে অবলুপ্ত করে দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে রেডিয়োওয়েভের উপর স্প্রেকটাম ইউজ চার্জ, যা আগামিদিনে নিলামের মাধ্যমে কিনতে হবে, সেক্ষেত্রেও ছাড় দেওয়া হয়েছে।
সরকারের এই ছাড়ের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে টেলিকম সংস্থাগুলি জানিয়েছে, এই ছাড়ের ফলে কেবল টেলিকম ক্ষেত্রে স্থীতিশীলতা বা টিকে থাকাই যাবে না, একইসঙ্গে সাধারণ মানুষদের ডিজিটাল চাহিদাগুলিও পূরণ করা যাবে। সিওএআইয়ের ডিরেক্টর এসপি কোচ্চার বলেছেন, “বর্তমানে সংযোগ ব্যবস্থাকে ঘিরে যে ক্রমবর্ধমান চাহিদা তৈরি হয়েছে, তা পূরণ করার জন্য টেলিকম শিল্পে বিপুল বিনিয়োগের প্রয়োজন। এই ক্ষেত্রের উপরে যে সমস্ত করের বোঝা রয়েছে, তাও দ্রুত কমানো প্রয়োজন।”
সেলুলার অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্ডিয়ার তরফে সরকারের কাছে লাইসেন্স ফি ৩ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১ শতাংশ করে দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে স্প্রেকটামের ক্ষেত্রে এসইউসি রেটও ৩ শতাংশ কমানোর দাবি জানানো হয়েছে
টেলিকম সংস্থাগুলির তরফে জানানো হয়েছে, দেশের ৮৫ শতাংশ টেলিকম সামগ্রীই বিদেশ থেকে আমদানি করা হয় এবং এর উপর ২০ শতাংশ শুল্ক বসানো হয়। শুল্কের হার বেশি হওয়ায়, তা সংস্থার পরিষেবার উপরও প্রভাব ফেলে। সেই কারণেই এই শুল্ক থেকে টেলিকম সংস্থাগুলিকে ছাড় দেওয়া উচিত। যতদিন না দেশেই কম দামে ভাল মানের টেলিকম পণ্য পাওয়া যাচ্ছে, ততদিন অন্তত ৪জি-৫জি নেটওয়ার্কের জন্য ব্যবহৃত সামগ্রীর উপর শুল্কে ছাড় দেওয়া উচিত।