কলকাতা: বড় নেতা থেকে শুরু করে ছোট নেতা, চুরি নিয়ে অভিযোগের শেষ নেই। সব অভিযোগই যে ভুল তাও নয়। কিন্তু সাধারণ মানুষ? রেলের একটা সাম্প্রতিক নথি দেখে প্রশ্নটা অনেকের মনের মধ্যেই চেপে বসেছে। ওই নথিতে বলা হচ্ছে, গত বছর ট্রেন থেকে রেকর্ড সংখ্যায় তোয়ালে, চাদর, কম্বল চুরি গেছে। প্রায় ২ লাখ তোয়ালে। ৮৫ হাজার চাদর ও ৮ হাজার কম্বল হাওয়া হয়ে গিয়েছে। রেলের দাবি, যাত্রীরাই ওইসব জিনিস নিয়ে চলে গিয়েছেন। মানে চুরি হয়েছে। বছর বছর এই চুরির সংখ্যাটা বাড়ছে। কোনওভাবেই আটকানো যাচ্ছে না।
এখন অধিকাংশ ট্রেনে পরিষেবার বিষয়টা মূলত বেসরকারি সংস্থার হাতে থাকে। চাদর, তোয়ালে তারাই দেয়। জিনিস চুরি গেলে সংস্থার কর্মীদের গুণগার দিতে হয়। তাঁদের বেতন থেকে টাকা কেটে নেওয়া হয়। এঁদের বেতনও কম। ফলে অনেকেই বলছেন, এঁরা নিশ্চই রেলের জিনিস ঘরে নিয়ে যাবেন না! কারণ চাকরি হারানোর ভয় তো আছে। অর্থাত্ যাত্রীদের একটা অংশই যে রেলের সম্পত্তি হাওয়া করে দিচ্ছেন সেটা ধরে নিলে মনে হয় না ভুল হবে।
ট্রেন ছেড়ে পাঁচতারা হোটেলের দিকে তাকালেও দেখা যাবে সেখানেও কার্যত একই অবস্থা। অভিযোগ, হোটেলের রুম থেকে জিনিসপত্র খুলে নিয়ে যাচ্ছেন গেস্টরা। শহরের পাঁচতারা হোটেলের এক আধিকারিক বললেন, আগে শুধু সাবান, তেল, বডি ফ্র্যাগন্যান্স উধাও হতো। এখন তোয়ালে, চাদর এমনকি টি-কফি মেশিনও হাপিশ হয়ে যাচ্ছে। রেস্তোঁরা থেকে চামচ, ফর্ক উধাও হয়ে যাচ্ছে। নিমেষে শেষ হয়ে যাচ্ছে টি-ব্যাগ। ওপরমহলে আমাদেরই জবাবদিহি করতে হচ্ছে। কী আর করা যাবে! দেশের এক প্রথম সারির হোটেল চেন ঠিক করেছে, গেস্ট চেক আউট করার আগে তাঁরা রুম চেক করে তবেই বিল ক্লিয়ার করবে। আগামীদিনে হয়তো সব হোটেলই এই পথে হাঁটবে। কিন্তু ৮-১০ হাজার টাকা খরচ করে যাঁরা রুম নিচ্ছেন তাঁরা এসব সামান্য জিনিস চুরি করছেন কেন? হোটেল কর্তাদের কাছেও কোনও উত্তর নেই।