নয়া দিল্লি: ২০২৩-এর ২৬ জুন, ঝাড়খণ্ডের গোড্ডা পাওয়ার প্ল্যান্ট থেকে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু করেছিল আদানি পাওয়ার। ওই বছরের ৬ এপ্রিলই বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরু করেছিল প্ল্যান্টের প্রথম ইউনিটটি। দ্বিতীয় ইউনিটটি চালু হয় ২৬ জুন। তারপর থেকে ৪০০ কেভি ট্রান্সমিশন লাইনের মাধ্যমে ভারত থেকে বাংলাদেশে নিয়মিত বিদ্যুৎ সরবরাহ করে আদানি পাওয়ার। চুক্তি অনুযায়ী, এই কয়লা-চালিত পাওয়ার প্ল্যান্টে উৎপাদিত সমস্ত বিদ্যুৎ বাংলাদেশকেই বিক্রি করার কথা সংস্থার। তবে, আদানিদের এই চুক্তি হয়েছিল শেখ হাসিনা সরকারের সঙ্গে। এই মুহূর্তে, বাংলাদেশের রাজনীতিতে চলছে পালা বদলের পর্ব। হাসিনা বিদায় নিয়েছেন, দেশ এখন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের হাতে। এই অবস্থায়, বাংলাদেশে রাজনৈতিক সংকটের জেরে যাতে ক্ষতির মুখে পড়তে না হয় আদানি পাওয়ারকে, তার জন্য বিদ্যুৎ রফতানি নিয়ম সংশোধন করল ভারত। যার ফলে, এখন দেশিয় বাজারেও ওই প্ল্য়ান্টে উৎপাদিত বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে পারবে আদানি পাওয়ার।
১৩ অগস্ট, শক্তি মন্ত্রক থেকে এই বিষয়ে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়। কোনও প্রতিবেশী দেশে একচেটিয়াভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহর বিষয়ে ২০১৮ সালের নির্দেশিকা সংশোধন করা হয়েছে সেই বিজ্ঞপ্তিতে। বর্তমানে ভারতে এই ধরনের চুক্তি রয়েছে শুধুমাত্র আদানি পাওয়ারের সঙ্গে বাংলাদেশের। ওই সরকারি বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে “দীর্ঘদিন ধরে কোনও উৎপাদন কেন্দ্রর পূর্ণ বা আংশিক ক্ষমতা গ্রহণ না করা হলে, সেই ক্ষেত্রে ভারতের মধ্যে বিদ্যুৎ বিক্রির সুবিধার্থে ভারতীয় গ্রিডে এই জাতীয় উৎপাদন কেন্দ্রর সংযোগের অনুমতি দিতে পারে ভারত সরকার।” পেমেন্টে দেরি হলেও এই সংশোধনী অনুযায়ী, স্থানীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ বিক্রি করতে পারবে আদানি বা অন্য কোনও সংস্থা।
সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে শুরু হওয়া বিক্ষোভ, হাসিনা সরকারের দমন-পীড়নে মারাত্মক আকার ধারণ করেছিল। আন্দোলনের চাপ এবং সেনার চাপে প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে দেশ ত্যাগ করতে বাধ্য হন শেখ হাসিনা। তারপর থেকে বাংলাদেশ জুড়ে চলছে নৈরাজ্য। অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পরও তার অবসান ঘটেনি। তার মধ্যে, বাংলাদেশে এই মুহূর্তে কড়া ভারত বিরোধিতার মেজাজ রয়েছে। বিশেষ করে হাসিনা সরকারের সঙ্গে নয়া দিল্লির ঘনিষ্ঠতা, ভারত সরকারের প্রতি বৈরি মনোভাব তৈরি করেছে বাংলাদেশে। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মাথারা অবশ্য প্রত্যেকেই জানিয়েছেন, তাঁরা ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কই রাখতে চান। তবে, অন্যতম উপদেষ্টা নাহিদ জানিয়েছেন, তার জন্য নয়া দিল্লিতে ভারতের বিদেশনীতি পুনর্বিবেচনা করতে হবে।
আরও খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Tv9 বাংলা অ্যাপ (Android/ iOs)